জাতীয়

‘পুলিশ চেষ্টা করলে সবই পারে’

‘পুলিশ চেষ্টা করলে সবই পারে' এটা আবারও প্রমাণিত হলো বলে মন্তব্য করেন আবেগাপ্লুত শাহনাজ আক্তার।

Advertisement

আজ (বুধবার) তেজগাঁও ডিসি অফিসে স্কুটি ফিরে পাওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

শাহনাজ বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। স্কুটিটি পেয়ে সর্বপ্রথম আমি সাংবাদিক ভাইদের ধন্যবাদ জানাই। এরপর আইনের লোকদের। পুলিশ এতো পরিশ্রম করে এতো দ্রুত স্কুটিটি উদ্ধার করবে তা কখনও ভাবিনি। ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়ালে যেমন পুলিশের তৎপরতা দেখতাম, আমার ক্ষেত্রেও একই তৎপরতা দেখলাম। পুলিশ গেল আর স্কুটি উদ্ধার করে নিয়ে আসল।’

তিনি বলেন, ‘আমার প্রতিবেশী আর আত্মীয়স্বজনরা বলেছিল স্কুটিটির আশা ছেড়ে দাও। পুলিশ যতক্ষণে স্কুটি উদ্ধার করবে ততক্ষণে চোর স্কুটিটি বিক্রি করে টাকা খেয়ে ফেলবে। তবুও আমি পুলিশের ওপর ভরসা রেখেছি।’

Advertisement

স্কুটিটি পেয়ে কেমন লাগছে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেমন লাগছে তা বলে বুঝাতে পারব না। চোর শুধু আমার স্কুটি চুরি করেনি, আমার রুটি-রুজিও নিয়ে গিয়েছিল। স্কুটির সঙ্গে আমার রুটি-রুজিও ফিরে পেলাম।’

দুদিন ধরে মাথা থেকে হেলমেট খোলেননি? কারণ কি? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হেলমেটটি পড়েছিলাম, কারণ আমার মনে হয়েছে এটিই আমার স্কুটি।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে চালানোর বাহানায় শাহনাজের স্কুটি ছিনতাই করেন জনি নামের এক দুর্বৃত্ত। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানাধীন মানিক মিয়া এভিনিউতে রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এদিন রাতেই শাহনাজ বাদী হয়ে স্কুটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জনিকে আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১০ জানুয়ারি মিরপুরের শ্যামলী এলাকায় জনির সঙ্গে শাহনাজের পরিচয় হয়। এসময় তিনি নিজেকে পাঠাও চালক বলে পরিচয় দেন। সে আমাকে (শাহনাজ) একটি স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারবে বলে জানান। আমি তার কথায় কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে চাকরি পাওয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করি। এজন্য ১৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টার সময় জনি আমাকে খামারবাড়িতে আসতে বলেন। তার কথামতো স্কুটি নিয়ে যথাসময়ে সেখানে এসে তার সঙ্গে দেখা করি। এরপর হঠাৎ সে আমার স্কুটিতে উঠে বসেন এবং আমাকে নিয়ে বিমানবন্দর এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরির পর পুনরায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ের রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এসে একটি টং দোকানে জনিকে নিয়ে চা খাচ্ছিলাম। এমন সময় তিনি কৌশল করে আমার স্কুটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

Advertisement

এর আগে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার বাইক উদ্ধারের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, ‘রাতেই ওই ঘটনায় একটি মামলা রুজু হয়। তেজগাঁও জোনের এসি আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জনির নম্বর ট্রেস করে তার বোনের নম্বর পেয়ে যাই। এরপর তার বোনের কাছ থেকে নারায়ণগঞ্জের একটা ঠিকানা পাই। সে অনুযায়ী রাতেই নারায়ণগঞ্জের রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে জনিকে গ্রেফতারসহ বাইকটি উদ্ধার করা হয়।’

‘জনি নিজেকে অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিংয়ের রাইডার হিসেবে পরিচয় দিলেও তার আসল উদ্দেশ্য বাইক চুরি করা। সে আর কোনো চুরির সঙ্গে জড়িত কিনা- তা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে।’

অন্যান্য চুরির মামলার তদন্তে পুলিশের আন্তরিকতার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বিপ্লব বলেন, ‘কোনো চুরিতেই পুলিশের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি থাকে না। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্লু পাওয়া যায় না। আমরা শতভাগ ক্ষেত্রেই সফল সেটিও বলছি না। তবে এক্ষেত্রে আসামির নম্বর পেয়ে যাওয়ায় কম সময়েই সফলতা পেয়েছি।’

এআর/জেএইচ/এমএস