দেশজুড়ে

রাজশাহীতে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

রাজশাহীতে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার। এখানকার শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় দুই দশমিক তিন শূন্য একর জায়গাজুড়ে মাথা তুলছে এটি। নভোথিয়েটার ভবন নির্মাণ শেষ হবে বছর দেড়েকের মধ্যেই।

Advertisement

জানা গেছে, এই নভোথিয়েটারে আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল প্রজেক্টর সিস্টেমযুক্ত প্ল্যানেটরিয়াম, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ডিজিটাল এক্সিবিটস, ফাইভ-ডি সিমিউলেটর থিয়েটার, টেলিস্কোপ, কম্পিউটারাইজড টিকেটিং অ্যান্ড ডেকোরেটিং সিস্টেমসহ নানা সুবিধা থাকবে। ভবন নির্মাণ শেষ হলে দ্রুত অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন হবে নভোথিয়েটারে।

২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) তৎকালীন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীতে নভোথিয়েটার স্থাপনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেন। মূলত এরপর থেকেই শুরু নভোথিয়েটারের স্বপ্নযাত্রা।

রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, ২২২ কোটি তিন লাখ টাকা ব্যয় ধরে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, রাজশাহী স্থাপন’ প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিলো রাসিক। এটি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল ২০১৫-২০১৮। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি এখন বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদফতর।

Advertisement

তিনি আরও জানান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিশেষত মহাকাশ সম্পর্কিত জ্ঞান সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় করা, বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট কুসংস্কার দূর করতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনাও আছে। বিজ্ঞানমনস্ক আধুনিক নাগরিক তৈরিতে বিজ্ঞানের সুযোগ-সুবিধা রাজধানীর বাইরে ছড়িয়ে দেয়াই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

জানা গেছে, প্রকল্পটি ২০১৫ সালের আগস্টে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় অনুমোদন পায়। ওই বছরের ডিসেম্বরে যায় একনেকে। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় পাস হয় এই প্রকল্প।

প্রথমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সময়কাল ধরা হয়েছিল ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। একনেক সভায় সময়সীমা ৬ মাস বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এটির নকশা দেখানো হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা রাজশাহী গণপূর্ত অধিদফরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অমিত কুমার দেব বলেন, ২২২ কোটি ৩ লাখ টাকার মধ্যে কেবল অবকাঠামো নির্মাণেই ব্যয় হচ্ছে ৮০ কোটি ১০ লাখ টাকা। রাজধানী ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিডেট এই কাজ বাস্তবায়ন করছে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, গত বছরের ২২ অক্টোবর শুরু হয়েছে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ। নির্ধারিত স্থানটিতে বড় বড় গাছসহ চিড়িয়াখানার বেশ কিছু প্রাণির খাঁচা ছিলো। এগুলো সরিয়ে জমি বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হয়েছে। ফলে প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে বিলম্বে।

সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নভোথিয়েটারের চারতলা ভীত বিশিষ্ট অফিস ব্লকের নির্মাণকাজ চলছে। ৭ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের এই অংশের ভীত পড়েছে কেবল। মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সারি সারি পিলার। চলছে মাটি ভরাট। এই অংশের ভরাটকাজ শেষ হলেই ৩৯ হাজার ৮০০ বর্গফুট আয়তনের প্লানেটরিয়াম ব্লকের নির্মাণকাজ শুরু করবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/এমএস