জাতীয়

তাবলিগে বিরোধ : ২২ জানুয়ারির মধ্যে দেওবন্দ যাচ্ছে প্রতিনিধি দল

তাবলিগ-জামাতের বিভক্ত শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বিরোধ নিস্পত্তি করতে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অচিরেই ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায় যাচ্ছেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আবদুল্লাহ’র নেতৃত্বে আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে যে কোনও দিন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।

Advertisement

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান মঙ্গলবার সকালে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দেওবন্দ যাওয়ার দিনক্ষণ এখনও নির্ধারিত হয়নি। বর্তমানে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের ভিসা করার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও নিজেদের মধ্যে আলোচনা সেরে নিচ্ছেন।

১০ সদস্যের এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন- ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আবদুল্লাহ, ধর্মসচিব মো.আনিছুর রহমান, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড স্পোশাল অ্যাফেয়ার্স) মো.মনিরুজ্জামান, যাত্রাবাড়ী মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাহমুদুল হাসান, শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের ইমাম ফরিদউদ্দিন মাসুদ, তাবলিগ-জামাত বাংলাদেশের আহলে সুরা সদস্য মোহাম্মদ রবিউল হক, সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলাম, কাকরাইল মসজিদের মুকিম আশরাফ আলী, জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার (ঢাকা) অধ্যক্ষ মাহফুজুল হক এবং ইকরা মাদরাসা ঢাকার অধ্যক্ষ সদরুদ্দিন মাকনুন।

ধর্মপ্রতিমন্ত্রী গত রোববার জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেছিলেন, তিনি বিভক্তি চান না, তাবলিগ নেতাদের মধ্যে ঐক্য স্থাপনের মাধ্যমে সব ধরনের বিভক্তি দূর করতে চান। রোববার তিনি দুই পক্ষের নেতা, ডিএমপির শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করেন। কিন্তু সেদিন সভায় সমস্যার সমাধান হয়নি।

Advertisement

প্রসঙ্গত, তাবলিগ-জামাতের ভেতরে দুটি পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছে বেশকিছু দিন ধরে। চলমান এ দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কারণে পূর্বনির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না এবারের বিশ্ব ইজতেমা।

ভারতীয় উপমহাদেশে সুন্নি মুসলমানদের বৃহত্তম সংগঠন তাবলিগ-জামাতের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ পায় ২০১৭ সালে। ওই বছর সংগঠনটির দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। এ দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে ছিলেন তাবলিগ-জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা ভারতীয় মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্দালভি।

তিনি তাবলিগ-জামাতে এমন কিছু সংস্কারের কথা বলছেন, যা বিভক্তির সৃষ্টি করেছে। এ বিভক্তি এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বের তাবলিগ-জামাতের অনুসারীদের মধ্যে।

সাদ কান্দালভির মতে, ‘ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয়।’ মিলাদ বা ওয়াজ মাহফিলের মতো কর্মকাণ্ডও এর মধ্যে পড়ে বলে মনে করেন তিনি।

Advertisement

তিনি আরও মনে করেন, ‘মাদরাসাগুলোর শিক্ষকদের মাদরাসার ভেতরে নামাজ না পড়ে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া উচিত, যাতে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে।’

কিন্তু তার বিরোধীরা বলছেন, ‘কান্দালভি যা বলছেন তা তাবলিগ-জামাতের প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের নির্দেশিত পন্থার বিরোধী। তাদের বক্তব্য, কান্দালভির কথাবার্তা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের বিশ্বাস ও আকিদার বাইরে।

এমইউ/জেডএ/জেআইএম