জাতীয়

কিডনি ডায়ালাইসিসের খরচ কমানোর দাবি রোগীদের

সিডিউলভুক্ত ও বেসরকারি দুই উপায়ে কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজধানীর জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতালে। সেখানে সরকারি সিডিউলভুক্ত না হওয়ায় অধিকাংশ রোগীকে বেসরকারিভাবেই চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে হয়। এ কারণে খরচ কমানোসহ সিডিউলভুক্তির দাবি জানিয়েছেন রোগীরা।

Advertisement

সোমবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতাল আকস্মিকভাবে পরিদর্শনে যান স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন ও একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে পেয়েই এ দাবি তুলেন ধরেন ডায়ালাইসিস ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীরা।

রাজধানীর মহাখালী এলাকার বাসিন্দা নাহার চৌধুরী দীর্ঘদিন ভুগছেন কিডনি রোগে। রাজধানীর জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

তিনি বলেন, সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করতে হয়। সরকারি সিডিউলভুক্ত হওয়ার কারণে খরচ পড়ে ৪৪১ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহে দুই বারে ৮৮২ টাকা খরচ হয় শুধু ডায়ালাইসিস করতে। এই চার্জ আরও কমানোর দাবির কথা জানান তিনি।

Advertisement

উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনি হয়তো জানেন না এই হাসপাতাল ও কিডনি রোগের চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্রে অবদান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রী আরও অনেক পরিকল্পনা নিয়েছেন। সেগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।’

পাশের আরেক কিডনি রোগী মমতাজ আক্তার আদুরি ও মনোয়ারা শেলির সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন মন্ত্রী।

আদাবর এলাকা থেকে প্রতি সপ্তাহে তিন দিন এসে হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করে বাসায় ফেরেন মনোয়ারা শেলি।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এখানে সেবা ভালো, চিকিৎসক ও নার্সরাও আন্তরিক। কিন্তু চিকিৎসাটা ব্যয়বহুল। ডায়ালাইসিসে খরচ বেশি। সপ্তাহে একদিন ডায়ালাইসিস বাবদ খরচ পড়ে ১৩১৩ টাকা। কারণ আমি সরকারি সিডিউলভুক্ত না। সিডিউলভুক্ত হতে হলে আবেদন করতে হয়। নির্ধারিত সংখ্যক রোগী এই সুবিধা পাচ্ছেন।

Advertisement

তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে সাড়ে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়। যা আমার মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য খুবই কঠিন। সেখানে গরীব রোগীদের তো সুযোগই নেই। মন্ত্রী মহাদয়কে বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

একই রকম কথা জানান মিরপুর থেকে আসা মমতাজ আক্তার আদুরিও।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেন, আমরা হাসপাতালে ঘুরে দেখলাম। রোগীদের সাথে কথাও বললাম। রোগীদের যে দাবি তা যৌক্তিক। কিন্তু আপনারা জানেন ক্যানসারের মতোই প্রায় কিডনি রোগেরও চিকিৎসাখরচ ব্যয়বহুল। সরকার আন্তরিক। কিডনি রোগীদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। এর মধ্যে কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণ ও এ রোগের আরও আধুনিক চিকিৎসা ও ব্যয় কমিয়ে আনার পরিকল্পনার কথাও জানান মন্ত্রী।

এর আগে সোমবার দুপুরে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এরপর কিডনি হাসপাতাল ঘুরে পরিদর্শনে যান শেরেবাংলা নগরস্থ জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল)।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর আজ (সোমবার) হাসপাতাল পরিদর্শনে বের হন তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তারা।

জেইউ/এসএইচএস/এমএস