জাতীয়

শ্রমিকদের সঙ্গে আর আলোচনা করবেন না মালিকরা

সরকারের পক্ষ থেকে মজুরি কাঠোমো নিয়ে গঠিত সমন্বয় কমিটির ঘোষিত মজুরিই পোশাক শ্রমিকদের জন্য চূড়ান্ত উল্লেখ করে বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেছেন, এ বিষয়ে (মজুরি) শ্রমিকদের সঙ্গে আর কোনো আলোচনা করা হবে না।

Advertisement

বেতন বাড়ানোর পর সোমবার (১৪ জানুয়ারি) আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা থেকে শ্রমিকরা কাজ না করে বের হয়ে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাগো নিউজের কাছে এমন মন্তব্য করেন পোশাক কারখানার মালিকদের এ নেতা।

বেতন-ভাতায় বৈষম্যের অভিযোগ তুলে জানুয়ারির শুরু থেকে অশান্ত হয়ে ওঠে সাভার-আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল। আন্দোলন চলাকালীন প্রতিদিনই সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্ট-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

এমন পরিস্থিতিতে বেতন বাড়ানো ঘোষণা দেয়া হয়। রোববার (১৩ জানুয়ারি) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব আফরোজা খান এ চূড়ান্ত মজুরি ঘোষণা করেন।

Advertisement

অন্যদিকে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোমবার (১৪ জানুয়ারি) থেকে শ্রমিকরা কারখানায় কাজ না করলে কোনো মজুরি প্রদান করা হবে না।

ঘোষিত মজুরি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৩ সালের নিম্নতম মজুরি কাঠামো থেকে ২০১৮ সালের ঘোষিত মজুরি কাঠামো সমন্বয়ের ফলে মোট মজুরি ১ম গ্রেডে ৫ হাজার ২৫৭ টাকা, ২য় গ্রেডে ৪ হাজার ৫১৬ টাকা, ৩য় গ্রেডে ৩ হাজার ৪০ টাকা, ৪র্থ গ্রেডে ২ হাজার ৯২৭ টাকা, ৫ম গ্রেডে ২ হাজার ৮৩৩ টাকা, ৬ষ্ঠ গ্রেডে ২ হাজার ৭৪২ টাকা এবং ৭ম গ্রেডে ২ হাজার ৭০০ টাকা মজুরি বেড়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, নতুন বেতন গ্রেডে চিকিৎসা, যাতায়াত এবং বাড়িভাড়া বৃদ্ধি ছাড়াও বেসিক বেতনের সঙ্গে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট যুক্ত হয়েছে। এ মজুরি গত ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। ডিসেম্বরের অতিরিক্ত মজুরি জানুয়ারির বেতনের সাথে যোগ করে ফেব্রুয়ারিতে প্রদান করা হবে। এছাড়া আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে গেজেট প্রকাশ করা হবে।

এদিকে মজুরি বাড়ানোর পর আজ সোমবার সকালে সাভার-আশুলিয়ার অধিকাংশ পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিকরা কাজে ফিরেন। তবে প্রায় অর্ধশাধিক কারখানা থেকে শ্রমিকরা কাজ না করে বের হয়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

Advertisement

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির জাগো নিউজকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে মজুরি কাঠামো নিয়ে গঠিত সম্বনয় কমিটি গতকাল (রোববাব) নতুন মজুরি ঘোষণা করেছে। এটাই চূড়ান্ত। এর বাইরে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। এখন কাজ না করলে কোনো মজুরি প্রদান করা হবে না (নো ওয়ার্ক নো পে)। একই সঙ্গে কারখানা শ্রম আইন অনুযায়ী বন্ধ করে দেয়া হবে। এ বিষয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আর কোনো আলোচনা করব না।

একই বিষয়ে টেক্সটাইল গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল জাগো নিউজকে বলেন, মজুরি সমন্বয় করে যে নতুন কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে; এটি সব শ্রমিক এখনো জানেন না। তাই আন্দোলন করছে। মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে শ্রমিকদের মজুরি সম্পর্কে জানানো হলে এ সমস্যা হবে না। ইতোমধ্যে শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধারণ শ্রমিকদের জানানো হচ্ছে। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সমাধান হবে।

নতুন মজুরি কাঠামোতে সন্তুষ্টি কি না জানতে চাইলে শ্রমিকদের এ নেতা বলেন, নতুন কাঠামো আরও একটু বেশি বাড়লে শ্রমিকদের জন্য ভালো হতো। তবে এখন শ্রমিকদের কাজে ফিরে যাওয়া উচিত।

এমএএস/এসআই/আরএস/জেআইএম