এভারেস্টের পর এবার অ্যান্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গও জয় করলেন এক পা হারানো অরুণিমা সিং। তার এমন সাফল্য বিস্মিত করেছে সারা বিশ্বকে। এর আগে এক পা হারানো কোনো নারী অ্যান্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করতে পারেননি।
Advertisement
ভারতের উত্তর প্রদেশের আম্বেদকর নগরের বাসিন্দা অরুণিমা সিংহ। নকল পা নিয়ে তিনি জয় করেছেন অ্যান্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট ভিনসন। তবে এই অসাধ্যসাধন তার প্রথম নয়। এর আগে তিনি জয় করেছেন বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট।
অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য সারা বিশ্বের সর্বস্তরের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সম্পর্কে বলেছেন, ‘অরুণিমা অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে আলাদা করে তুলেছেন।’
সত্যিই পরিশ্রম ও অধ্যবসায় ছাড়া কারো পক্ষে এই উচ্চতা ছোঁয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু পর্বতারোহণের এমন স্বপ্ন অরুণিমার প্রথমদিন থেকে ছিল না। এই তরুণী ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের ভলিবল খেলোয়াড়। ৩০ বছরের অরুণিমার জীবন পাল্টে দিয়েছিল একটি দুর্ঘটনা। তার সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ নষ্ট করে দিয়েছিল ট্রেনের কামরায় ওঠা দুষ্কৃতিকারীরা। তাদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে অরুণিমা দিয়েছেন চরম মূল্য।
Advertisement
ঘটনাটি সাত বছর আগের। লুঠপাট করতে ট্রেনে উঠেছিল দুষ্কৃতিদের দল। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন ডাকাবুকো এই তরুণী। ট্রেন থেকে দুষ্কৃতিরা তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। মারাত্মক চোট পান তিনি। প্রাণে বাঁচলেও এই ঘটনায় বাম পা হারান অরুণিমা।
হাসপাতালের শয্যায় শুয়েই তরুণী ঠিক করেছিলেন, তিনি পর্বতারোহী হবেন। আরও কঠিন, দুঃসাধ্য লক্ষ্য অর্জনে নামবেন। এরপর পরিকল্পনা মতো প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। নিজের প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এই কঠিন লক্ষ্য স্থির করেন অরুণিমা। সিদ্ধান্ত নেন, নকল পা নিয়েই পর্বতারোহণ শুরু করবেন। প্রস্থেটিক পা নিয়েই তিনি শুরু করেন অভীষ্ট লক্ষ্যে যাত্রা। ২০১৩ সালে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। তার ঝুলিতে শুধু এভারেস্ট নয়, মাউন্ট কিলিমাঞ্জেরো, মাউন্ট এব্রাস, মাউন্ট কোসিয়াজকো, মাউন্ট অ্যাকোনকাগুয়া জয়ের কৃতিত্বও রয়েছে। এবার মুকুটে নতুন পালক অ্যান্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট ভিনসন।
অ্যান্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের পরও থেমে নেই অরুণিমা। নতুন লক্ষ্যে নিয়ে বর্তমানে অ্যান্টার্কটিকার বেস ক্যাম্প চিলির পান্টা এরিনায় অবস্থান করছেন তিনি।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে
Advertisement
এমবিআর/জেআইএম