বিরল রোগে আক্রান্ত জামালপুরের ৪০ বছর বয়সী ফারুক বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। তিনি প্রফেসর নওয়াজেশ আলী খানের তত্ত্বাবধানে ওই ইউনিটের ইয়েলো ওয়ার্ডের এক্সটা ওয়ান বেডে ভর্তি রয়েছেন। ডাক্তারের ভাষায় তার রোগটির নাম ‘নিউরোফাইব্রোমাইওসিস।
Advertisement
গত সপ্তাহে ফারুকের হাত থেকে রক্ত বের হওয়া শুরু করলে পরিবারের লোকজন ফারুককে জামালপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন।
ফারুকের ডান হাতটি অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ঝুলে পড়েছে। একই সঙ্গে হাতটি বেঁকে যাওয়ার পাশাপাশি বুকে ও পিঠেও একই লক্ষণ দেখা দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ফারুক দেশের প্রথম ব্যক্তি যিনি বিরল এই রোগে আক্রান্ত।
ফারুকের বড় ভাই নুরুজ্জামান লিটন জানান, গত সপ্তাহে ফারুকের আক্রান্ত ডান হাতে গুটি জাতীয় ফোড়া বের হয়ে অস্বাভাবিকভাবে ওজন বেড়ে যায় এবং সেই ফোড়াগুলো ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Advertisement
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ডাক্তাররা জানান, ফারুকের সমস্যাটি ‘নিউরোফাইব্রোমাইওসিস’ নামক বিরল রোগ বলে মনে হচ্ছে। এটি একটি বংশগত রোগ।
তারা আরও জানান, ফারুকের রোগের সমস্যাগুলো খুঁজে চিহ্নিত করে চিকিৎসা করা হবে। ইতোমধ্যে ফারুকের শরীরের আক্রান্ত স্থানসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে।
ফররুখ আহমেদ ওরফে ফারুক জামালপুর সদরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের বিচতিয়া পাড়া গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে। ৬ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ৩য়। জন্ম থেকেই তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। এ অবস্থাতেও ১৯৯১ সালে স্থানীয় নারিকেলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে এইচএসসি-তে ভর্তি হলেও হাতের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় তার।
ফারুকের বড় ভাই জানান, ১৯৯১ সালের দিকে ফারুক এসএসসি পাসের পর থেকেই তার ডান হাত ও শরীরের ডান পার্শ্বে বাড়তে থাকে। সেই সময়ই তাকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর-পঙ্গু হাসপাতালে) নিয়ে গেলে ডাক্তাররা রোগ নির্ণয় করতে ব্যর্থ হন। এরপর আর তাকে ঢাকায় আনা হয়নি।
Advertisement
তিনি জানান, আমরা পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল। জানি না ফারুকের চিকিৎসা করাতে পারবো কীনা? তবে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে এলে আমাদের বিশ্বাস ফারুকের সুচিকিৎসা হবে।
আসমাউল আসিফ/এমএএস/জেআইএম