সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের কচিখালী ও পক্ষীদিয়া এলাকায় অপহরণের শিকার ২৬ জেলেকে এখনো উদ্ধার করতে পারেনি কোস্টগার্ড। ফলে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা মধ্যে দিন কাটছে অপহৃত জেলেদের স্বজনদের। এর আগে শনি ও রোববার জেলেদের বহরে গণডাকাতির পর ছাব্বিশ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। এ সময় জলদস্যুরা মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহৃত জেলেদের ছাড়িয়ে নিতে নিজেদের মোবাইল নম্বরও দিয়ে যায় । অপহৃত জেলে কালাম মিরার স্ত্রী ছালমা বেগম (২৩) জানান, এর আগেও একবার জলদস্যুরা তার স্বামীকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। নিজেদের বসতভিটা আর যেটুকু স্বর্ণালংকার ছিল তা বিক্রি করে সেবার মুক্তিপণ দিয়ে জলদস্যুদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে এনেছিল। অপহৃত জেলেদের একাধিক স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের সবার অবস্থায় ছালমা বেগমের মতো। বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, শনিবার রাত ১২টার দিকে কচিখালী এলাকায় জাল ফেলে ট্রলারেই ঘুমিয়ে ছিলেন জেলেরা। রাত দেড়টার দিকে সুন্দরবনকেন্দ্রিক একটি জলদস্যুবাহিনী জেলেদের বহরে হামলা চালায়। এ সময় তারা জেলেদের ওপর নির্বিচারে নির্মম নির্যাতন চালায় এবং মাছ, জাল এবং খুচরা যন্ত্রাংশসহ নগদ টাকা লুট করে নেয়। একই সময় ছয় ট্রলার থেকে ছয় জেলেকে অপহরণ করে সুন্দরবনের গহীনে নিয়ে যায় তারা। গোলাম মোস্তফা চৌধুরী আরো জানান, রোববার সকাল ৯টার দিকে সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের পক্ষীদিয়া এলাকায় জেলেদের বহরে হামলা চালিয়ে গণডাকাতি শেষে আরো ২০ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। অপহরণের সময় নিজেদের ভাইভাই বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে অপহৃত জেলেদের মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়িয়ে নিতে একটি নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরসহ একটি টোকেন দিয়ে যায় জলদস্যুরা। ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী আরো জানান, তাৎক্ষণিকভাবে অপহৃত সকল জেলেদের নাম জানা যায়নি। তবে ছগির মিয়া, রফিক হাওলাদার, আ. খালেক, দুলাল, কালাম মীর, লিটন, রফিক, জাহাঙ্গীর, লাল মিয়া, কবীর মিয়া, জাফর মিয়া এবং ইউনুস মিয়া নামের কয়েক জেলের নাম জানা গেছে। অপহৃত সকল জেলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। পাথরঘাটা স্টেশন কমান্ডার লে. এস এ রউফ জানান, জেলে অপহরণের বিষয়টি তারা শুনেছেন। অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান। এসএস/এমএস
Advertisement