চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে গণপিটুনিতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেল চাঁদাবাজ ছিলেন না বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।
Advertisement
গত সোমবার (৭ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের ‘পিটুনিতে’ সোহেল নিহত হন। সেদিন পুলিশ জানিয়েছিল, ‘চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ’ হয়ে তাকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। সোহেলের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের বিষয়টিও জানিয়েছিল পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, মহিউদ্দিন সোহেল কোনো ছিঁচকে সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজ ছিলেন না। তার পারিবারিক ঐতিহ্য এবং সাংগঠনিক ভিত্তি ছিল। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন। এর আগে তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-শিক্ষা ও পাঠ্যক্রম বিষয়ক সম্পাদকও ছিলেন।
তিনি বলেন, সোহেল দীর্ঘদিন ঢাকায় রাজনীতি করার পর গত বছর জন্মস্থান চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে এসে দিশারী ক্লাবকে পুনরায় সংগঠিত করেন। ক্লাবটি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও দীর্ঘদিন কোনো কার্যক্রম ছিল না। এই ক্লাবটি পুনরায় সংঠিত করে তিনি স্থানীয় কয়েকটি মাদকের আখড়া ভেঙে দেন। শুধু তাই নয়, স্থানীয় কাউন্সিলর সাবের সওদাগরের নেতৃত্বে ও সাবেক জামায়াত নেতা, বর্তমানে স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতা ওসমান গনির পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা কয়েকটি অনৈতিক ব্যবসার আখড়া ভেঙে দিয়ে এলাকাবাসীর জন্য জানাজার নামাজের মাঠ নির্মাণ করে দেন। এ ধরণের আরও জনকল্যাণকর উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে ভূমিদস্যু, মাদক এবং অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্তদের রোষানলে পড়েছিলেন।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমাদের দুঃখ যারা মহিউদ্দিনকে হত্যা করেছে, তার রাজনৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালিয়েছে, সেই ঘৃণ্য মানুষগুলোর পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন কিছু সাংবাদিক বন্ধু। তাদের প্রতি আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। শুধু জিজ্ঞাসা বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে দেশের যে কোনো সচেতন নাগরিক যে কোনো অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনাসহ মামলা/ জিডি করতে পারে। কিন্তু মহিউদ্দিনের নামে কোনো মামলা/জিডি না থাকা সত্ত্বেও তার মৃত্যুর পর 'চাঁদাবাজ মহিউদ্দিন সোহেল গণপিটুনিতে নিহত' এমন সংবাদ প্রচার কেন?
মহিউদ্দিনের মৃত্যুর কারণ দলীয় কোন্দল কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু বলেন, অবশ্যই না। অভিযুক্ত কাউন্সিলর সাবের সওদাগর বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতা। তিনি আগে জাতীয় পার্টি করতেন। তবে আমি মনে করি হত্যাকারী এবং সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই।
মহিউদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় গত মঙ্গলবার (৮জানুয়ারি) তার ভাই ডবলমুরিং থানায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও রেলওয়ে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক সাবের আহম্মেদ ও জাতীয় পার্টির নেতা ওসমান খানসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার ওসমান খানকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
এআর/এমএমজেড/এমকেএইচ
Advertisement