নিজেদের বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে ঢাকা কলেজের ১০-১২ জন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় রাত পৌনে ৪টার দিকে দুইজনকে আটক করে রাজধানীর নিউ মার্কেট থানায় সোপর্দ করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।রোববার রাত ১০টায় নীলক্ষেত বকুশাহ্ মার্কেটের আল-আমিন হোটেলে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। আটককৃতরা হলেন ঢাকা কলেজের সাউথ হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আইয়ুব উল্লাহ সাজু (অ্যাকাউন্টিং) এবং একই হলের ছাত্র কাজী জুয়েল। তবে পরবর্তীতে প্রমাণিত হয় জুয়েল ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী না। কিন্তু তিনি হলের ৩১৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন।প্রত্যক্ষদর্শী ও সাংবাদিকদের সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত ১০টায় আল-আমিন হোটেলে রাতের খাবার খেতে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কর্মরত তিন সাংবাদিক ও তাদের এক বন্ধু। এসময় নিজেদের মধ্যে নানা বিষয়ে আলোচনা করছিলেন তারা।এক পর্যায়ে হোটেলে আসেন ঢাকা কলেজের চার শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পরে তারা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এই যে আস্তে কথা বলেন। দেখতেছেন না আমরা আসছি। আমরা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী। এইটা কি চায়ের দোকান?’ প্রতুত্তরে সাংবাদিকরা বলেন, এইটাতো চায়েরই দোকানই। তখন ওরা বলে, মুখে মুখে কথা বলিস কেন? এই বলে সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।মুহূর্তের মধ্যে ঢাকা কলেজের আরো ৭-৮ জন ছাত্র এসে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিন সাংবাদিকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হন। আহতরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক আমাদের অর্থনীতির ক্যাম্পাস প্রতিনিধি অর্ণব প্রধান, বাংলামেইল২৪.কম-এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি নোমান আবদুল্লাহ্, জাগোনিউজ২৪.কমের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মুনির হোসাইন, বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক ছাত্র এহসান মুহাম্মদ আবদুল্লাহ্ এবং জিয়া হলের আবাসিক ছাত্র কাইয়ুম রহমান।এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে বাকুশাহ মার্কেটের ওই হোটেলে গেলে ভুয়া ছাত্রলীগ কর্মীরা পালিয়ে যায়।এদিকে ঘটনার জানাজানি হলে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ঢাকা কলেজের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সাজু এবং জুয়েল নামে দুইজনকে আটক করে। পরবর্তীতে রাত পৌনে ৪টার দিকে তাদের নিউ মার্কেট থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।এসময় আটককৃতরা তাদের সঙ্গে ছিল এমন আরো কয়েকজনের নাম বলেন। তদের মধ্যে রয়েছে আরিফ নামে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদেরও বের করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন।এসময় ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক বাকিদের বের করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন।এমএইচ/বিএ
Advertisement