ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় মায়ের জন্য মুখোশ পরে বাবাকে খুন করল ছেলে। বাবাকে খুনের কাজে সহযোগিতা করেছে ছেলের তিন বন্ধু।
Advertisement
তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবুল কালামকে খুনের রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে ছেলে আবুল হাসান (১৮)। শুক্রবার রাতে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের ওসি এমএম মোর্শেদ ও পরিদর্শক (তদন্ত) সুদ্বীপ রায়ের কাছে বাবাকে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় ছেলে হাসান।
ঘাতক আবুল হাসানের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ওসি বলেন, হাসানের বাবা উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের পশ্চিম মধুগ্রামের মিদ্দা বাড়ির সাবেক সেনাসদস্য আবুল কালামের দুই সংসার।
এ নিয়ে প্রথম স্ত্রী অর্থাৎ হাসানের মা রেখা আক্তারের সঙ্গে আবুল কালামের প্রায়ই ঝগড়া হতো। ৪ জানুয়ারি ঝগড়ার একপর্যায়ে আবুল কালাম তার স্ত্রী রেখাকে মারধর করেন। পরে রেখা তার সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।
Advertisement
মাকে মারধর করায় ওই দিন রাতে বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করে ছেলে হাসান। তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাবার রুমে ঢুকে তারা। হাসান ও তার বন্ধুরা মুখোশ পরে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে আবুল কালামের মাথায় আঘাত করে।
দীর্ঘক্ষণ পরও জ্ঞান না ফেরায় মারা গেছেন বুঝে বাড়ির পাশের সেপটিক ট্যাংকে আবুল কালামের মরদেহ রেখে দেয়া হয়। এ সময় হাসান ও তার বন্ধুরা ছাড়া বাড়িতে কেউ ছিল না।
গত বৃহস্পতিবার ওই সেপটিক ট্যাংক থেকে আবুল কালামের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী রেখা আক্তার ও ছেলে আবুল হাসানকে থানায় নেয়া হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে হাসানের এক বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। তার অপর দুই বন্ধু পলাতক রয়েছে।
নিহত আবুল কালামের ছোট বোন জরিনা আক্তার বলেন, ৪ জানুয়ারি শুক্রবার রাত থেকে আমার ভাই নিখোঁজ ছিলেন। কালামের দুই সংসার। দ্বিতীয় স্ত্রী ঢাকায় থাকেন। তার সংসারে এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। প্রথম স্ত্রী বাড়িতে থাকেন। প্রথম সংসারে তিন ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে। দুই সংসারের বিষয়টি নিয়ে পরিবারে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো।
Advertisement
আবুল কালাম সেনাবাহিনীর অসামরিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলেন। তিনি সেনাবাহিনীতে বাবুর্চির কাজ করতেন। আবুল কালাম মধুগ্রামের মিদ্দা বাড়ির মৃত সামছুল হকের ছেলে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি।
রাশেদুল হাসান/এএম/জেআইএম