অনুকূল আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগরে এখন পুরোদমে মাছ শিকার চলছে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকেই অবলোকন করা যাচ্ছে মাছ ধরার এ প্রতিযোগিতার দৃশ্য। উপকূলের কাছাকাছি বিহিন্দি জালের বোট এবং গভীর সাগরে ইলিশ জালের হাজার হাজার ট্রলার নিয়ে কয়েক লাখ জেলে এখন সাগরজুড়ে মাছধরা উৎসব পালন করছে।কক্সবাজার জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সূত্র জানায়, জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার এবং সারাদেশে প্রায় ২৫ হাজার মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। যার প্রায় ৯৫ ভাগই এখন সাগরে মাছ ধরতে ব্যস্ত। প্রতিটি ট্রলারে ১৬ থেকে ২২ জন করে জেলে মাছ ধরতে গেছেন। গত মাসে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে টানা প্রায় দুই সপ্তাহ সাগরে মাছধরা বন্ধ থাকার পর চলতি মাসের শুরুতে সাগরে ইলিশ ধরতে যান জেলেরা। বর্তমানে অনুকূল আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগরে পুরোদমে মাছ শিকার চলছে।জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, জেলার লাখাধিক জেলে এখন সাগরে মাছ ধরছেন। তারাসহ সারাদেশের পাঁচ লক্ষাধিক জেলে সাগরে মাছধরা উৎসব পালন করছে। তবে সাগরে এখন ইলিশের পরিবর্তে অন্য প্রজাতির মাছ বেশি ধরা পড়ছে বলে উলেখ করেন তিনি।স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, উপকূলবর্তী সমুদ্রে মাছ ধরার বিহিন্দি জালের (স্থানীয় ভাষায় ‘খুঁড়ি জাল’) ট্রলারগুলো দিনে গিয়ে দিনেই মাছ ধরে ফিরে আসছে। মূলত এসব বোটগুলো সাগর থেকে এক প্রকার চিংড়ি ধরে। যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘করত্যা ইছা’ বলা হয়। সেই সঙ্গে এই ট্রলারের জালে আরো ধরা পড়ে রূপচান্দা, ছুরি, ফাইস্যা, মাইট্টা, লইট্টাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।কক্সবাজার শহরের ফিশারিঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী জানান, চলতি মাসে সাগর থেকে উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়েনি। এখন বেশি ধরা পড়ছে লইট্টা মাছ।কক্সবাজার দরিয়ানগর এলাকার ট্রলার মালিক নজির আলম জানান, সাগরে এখন ধরা পড়া মাছের মধ্যে লইট্টা মাছ বেশি হলেও পোয়া, বাইলাসহ আরো কিছু প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। এখানকার ট্রলারগুলো সকাল গিয়ে সন্ধ্যায় মাছ ধরে কূলে ফিরে আসায় তাজা মাছের জন্য ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের প্রথম পছন্দ দরিয়ানগর।সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া সারি সারি ট্রলারে বিচরণ দৃশ্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকেই চোখে পড়ছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় ট্রলারের আলোতে সাগরে অন্যরকম আবহ তৈরি হচ্ছে। যা পর্যটকদেরকেও বিমোহিত করছে।কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদ জানান, সাগরে দস্যুতার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের। যেকোনো ধরনের সমস্যায় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ট্রলার সংশ্লিষ্টদের বলা আছে।সায়ীদ আলমগীর/বিএ
Advertisement