প্রধান ফটক দিয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। কয়েক বছর ধরেই মেলায় আসা দর্শনার্থীদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করছে এই প্যাভিলিয়নটি। তবে আগের বছরের তুলনায় এবার কিছুটা ব্যতিক্রমভাবে তুলে ধরা হয়েছে প্যাভিলিয়নটি।
Advertisement
নতুন রূপে নতুন সাজে আসা প্যাভিলিয়নটিতে এবার রাখা হয়েছে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য দুটি পথ। গত কয়েক বছর প্যাভিলিয়নটি প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য শুধু উত্তর দিকে পথ রাখা হয়েছিল। আর এবার উত্তর ও দক্ষিণ দুই প্রান্তে দুটি পথ রাখা হয়েছে।
প্যাভিলিয়নটিতে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার দুটি পথের সামনেই বড় করে লেখা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’। লেখার পাশেই আছে বঙ্গবন্ধুর ছবি। তার পাশেই ব্যবহার করা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) লোগো। প্যাভিলিয়নের সামনে স্থাপন করা হয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান। তার পাশেই রয়েছে একটি লেক। সেই লেকে ভেসে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট নৌকা।
কয়েক বছর ধরে আঙুল উচু করে প্যাভিলিয়নটির সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা মহাপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য থাকলেও এবার এ ভাস্কর্য দেখা যায়নি। এমনকি আগেরবার প্যাভিলিয়নটির নাম ‘বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন’ লেখা থাকলেও এবার তা নেই। তবে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান ও লেকে ভেসে বেড়ানো নৌকার দৃশ্য গত বছর যেমন ছিল এবারও প্রায় তেমনিই রয়েছে।
Advertisement
ভাস্কর্য না থাকলেও প্যাভিলিয়নটি ঘেঁষে থাকা লেকে বঙ্গবন্ধুর দুই হাত উপরে তুলে ধরা বড় একটি ছবি টাঙিয়ে রাখা হয়েছে। তার নিচে লেখা ‘২৩ মার্চ, ১৯৭১’। এর নিচেই রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বড় ছবি। প্যাভিলিয়নের বাহিরে ও ভেতরে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন ঘটনার খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ছবি আকারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিষয়ের ওপর গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন। গত ৭ জানুয়ারি বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে টিপু মুন্সির শপথ নেয়ার দৃশ্যও রাখা হয়েছে প্যাভিলিয়নটিতে।
মিরপুর থেকে মেলায় ঘুরতে আসা মো. কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের আউটলুক গত বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য না থাকায় বিষয়টি আমার কাছে খারাপ লেগেছে। ভাস্কর্যটি থাকলে প্যাভিলিয়নের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যেত।
ফার্মগেটের রাজাবাজার থেকে মেলায় ঘুরতে আসা মো. ফয়সাল বলেন, মেলায় কেনাকাটা নয়, ঘুরতে এসেছি। গত বছরও কয়েকবার মেলায় ঘুরতে এসেছিলাম। এবার বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন বাহির থেকে আগেরবারের তুলনায় ভালো লাগছে। দুই মাথা দিয়ে প্যাভিলিয়নের দুটি পথ করায় সৌন্দর্য বেড়েছে। তবে বঙ্গবন্ধুর সাদা ভাস্কর্যটি না থাকায় বিষয়টি একটু চোখে লাগছে।
ইস্কাটন থেকে আসা হৃদয় নামের একজন বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্ম না নিলে আমরা আজ স্বাধীন দেশে বসবাস করতে পারতাম না। এই মানুষটার কারণেই আজ আমরা স্বাধীন দেশে বাস করতে পারছি। প্যাভিলিয়নে এসে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে বেশকিছু বিষয় জানতে পারলাম। বঙ্গবন্ধুর জীবনী থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর পত্রিকায় প্রকাশিত কিছু সংবাদও ছবি আকারে ঝুলে রাখা হয়েছে। এ দৃশ্যও ভালো লেখেছে।
Advertisement
ইপিবির ডেপুটি ডিরেক্টর ও মেলার সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রফ জাগো নিউজকে বলেন, এবার আমাদের ডিজাইনের মধ্যে যেভাবে আছে সেভাবে করা হয়েছে। প্রতিবছর একটা জিনিস কেমন দেখা যায়, তাই না। বঙ্গবন্ধুর অনেক ছবি রয়েছে। প্রতিটি ছবিই সুন্দর। আগে লেকের ওপরে বঙ্গবন্ধুর একটা ছবি থাকতো। এবার আমরা চারটা ছবির জায়গা করেছি। বেশি সংখ্যক ছবি দেয়ার জন্য এটা করা হয়েছে। এখানে অন্য কোনো কারণ নেই।
এমএএস/বিএ/জেআইএম