আন্তর্জাতিক

বৈঠক বাতিল : পরস্পরকে দোষারোপ ভারত-পাকিস্তানের

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নির্ধারিত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক বাতিল হয়ে যাওয়ার প্রায় চব্বিশ ঘন্টা পরেও তা নিয়ে দেশ দুটির পারস্পরিক দোষারোপ এখনো চলছে। উভয় পক্ষের অনড় মনোভাবের জন্যই এই বৈঠক শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি বলে দেশ দুটির নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।রোববার দুপুর থেকেই দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে শুরু হওয়ার কথা ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বহুপ্রতীক্ষিত আলোচনা। গত মাসে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা রাশিয়ার উফায় এ বৈঠকটিতে বসতে একমত হয়েছিলেন।দিল্লির বৈঠকে যোগ দিতে এসে পাকিস্তানি নিরাপত্তা উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ ভারত-শাসিত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন কি না মূলত এই প্রশ্নের জট না খোলাতেই বৈঠকটি বাতিল হয়ে যায়।বৈঠকের আগেই ভারত যে সব শর্ত জুড়ে দিয়েছে তাতে কোনও অর্থপূর্ণ আলোচনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। আবার বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার জন্য ভারতও এদিন পাল্টা দুষেছে পাকিস্তানকেই।রোববার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, আমাদের মধ্যে কথা হয়েছিল দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে বৈঠক হবে। কিন্তু সেখানে কোনও তৃতীয় পক্ষ থাকবে না। তারপরও যদি কেউ জেদ ধরেন বৈঠকের আগে বা পরে অন্যদেরও সঙ্গে কথা বলতে দিতে হবে, তা তো মানা সম্ভব নয়।পাকিস্তান তাদেরকে সরতাজ আজিজের সঙ্গে চা-চক্রে যোগ দেওয়ার জন্য দূতাবাসে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, কিন্তু যে হুরিয়ত নেতারা শ্রীনগর থেকে দিল্লিতে পা রেখেছিলেন শনিবার তাদের আটক করা হয়।কিন্তু শুধু হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা ঠেকানোর জন্য পুরো বৈঠক কেন ভারত বাতিল করে দেবে এটা ইসলামাবাদের বোধগম্য নয় বলে বলছিলেন পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশ্লেষক শরাফত চৌধুরী।শরাফত চৌধুরী বলেন, যখনই পাকিস্তানের কোনও নেতা বা প্রতিনিধি ভারতে গেছেন তারা প্রায় প্রত্যেকবারই নিয়ম করে হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। আর এটা পাকিস্তানের একটা নীতিও বটে। তো সরতাজ আজিজ যদি এবারেও তাদের সঙ্গে কথা বলতেন তাতে ভারত এত অরক্ষিত বোধ করবে কেন এটাই আমরা বুঝে উঠতে পারছি না।এদিকে ভারত বলছে, ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি অনুযায়ী এই দুই দেশের আলোচনায় তৃতীয় পক্ষের কোনও ভূমিকা থাকতে পারে না, আর কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের তৃতীয় পক্ষের মর্যাদা দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।পাকিস্তান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক বিবেক কাটজুর অভিমত, আগে হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়েছে বলে এখনও দিতে হবে এমন কোনও কথা নেই।মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এই বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্তে তারা খুবই হতাশ এবং শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করার জন্য তারা দুই দেশকেই উৎসাহ দেবেন।এসঅাইএস/আরআইপি

Advertisement