আন্তর্জাতিক

তাবলিগ জামায়াতের দ্বন্দ্বে অস্ট্রেলিয়ায় দুটি ইজতেমা

 

তাবলিগ জামায়াতের বার্ষিক বৈশ্বিক সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা। অষ্ট্রেলিয়ার সিডনির রুটিহিলেও প্রতিবছর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু গেল বছর দেশটিতে একই সময়ে দুটি স্থানে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইজতেমা সংশ্লিষ্ট নেতাদের দ্বন্দ্বের জেরে ইজতেমার এই বিভক্তি বলে জানা গেছে।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ার রুটিহিল ও লেপিংটেংয়ে পৃথকভাবে ২২, ২৩ ও ২৪ ডিসেন্বর তিনদিনব্যাপী এবারের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় ২৫ ডিসেন্বর। তাবলিগ জামায়াতের ভেতরে দু’টি গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে দুই পক্ষ একইদিনে পৃথক স্থানে ইজতেমার আয়োজন করে।

অষ্ট্রেলিয়াতে তাবলিগ জামায়াতের ইজতেমা সাধারণত প্রতিবছরের ডিসেম্বর ও জুলাই মাসে আয়োজন করা হয়ে থাকে। আর এজন্য বেছে নেয়া হয় লং হলিডেকে। অষ্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রাজ্য থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এতে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু এবার দুইভাগে ভাগ হয়ে ইজতেমায় অংশ নেন দেশটিতে বসবাসকারী ইসলাম ধর্মালম্বী মানুষ।

তাবলিগ জামায়াতের ভেতরে দু’টি গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। ইজতেমায় বিভক্তির কারণে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে ছিলেন তাবলিগ জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ভারতীয় মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্দালভি। বেশ কিছুদিন থেকে কান্দালভি তাবলিগ জামায়াতে এমন কিছু সংস্কারের কথা বলছেন, যা এই আন্দোলনে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে।

Advertisement

সাদ কান্দালভি বলেন, ‘ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয়।’ মিলাদ বা ওয়াজ মাহফিলের মতো কর্মকাণ্ডও এর মধ্যে পড়ে বলে মনে করা হয়। তিনি আরো মনে করেন, ‘মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকদের মাদ্রাসার ভেতরে নামাজ না পড়ে মসজিদে এসে নামাজ পড়া উচিত। যাতে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে।’

কিন্তু তার বিরোধীরা বলছেন, ‘কান্দালভি যা বলছেন তা তাবলিগ জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের নির্দেশিত পন্থার বিরোধী। তাদের বক্তব্য, কান্দালভির কথাবার্তা আহলে সুন্নাত ওয়া’ল জামায়াতের বিশ্বাস ও আকিদার বাইরে।

ভারতীয় উপমহাদেশে সুন্নি মুসলমানদের বৃহত্তম সংগঠন এই তাবলিগ জামায়াতের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ পায় ২০১৭ সালে। এ বিরোধ এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বের তাবলিগ জামায়াতের অনুসারীদের মধ্যে।

অষ্ট্রেলিয়ার তাবলিগ জামায়াতের অনুসারীদের মধ্যেও এই প্রভাব দেখা দিয়েছে। বিরোধ মেটানোর চেষ্টা থাকলেও তাতে এখনো ইতিবাচক ফলাফল দেখা যাচ্ছে না।

Advertisement

এসএ/এমএস