ফিচার

কেমন হবে নতুন বছরের পড়াশোনা

সময়ের পরিক্রমায় এসেছে নতুন বছর। শুরু হয়েছে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ। শিক্ষার্থীদের হাতে সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের পাঠ্যবই পৌঁছে গেছে। এই নতুন বই প্রাপ্তির আনন্দ এখন ছাত্র-ছাত্রীদের মনে। নতুন বছর নতুন ক্লাস নতুন পাঠ্যবই। নতুন বছরের পড়াশোনা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন উত্তম কুমার সাহা—

Advertisement

বছরের শুরু থেকে প্রস্তুতি নিয়ে পড়াশোনা করলে সিলেবাস শেষ করা যাবে। আর সিলেবাস শেষ করা গেলে অর্জন করা যাবে ভালো ফলাফলও। সেজন্য ছাত্র-ছাত্রীদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে বছরের দিনগুলোকে সাজাতে হবে। আমরা সবাই জানি, পরিকল্পনা হলো কাজের অর্ধেক। পরিকল্পনাগুলো কেমন হবে সে বিষয়ের শিক্ষার্থীদের কিছু বলতে চাই।

রুটিন

পড়াশোনার জন্য রুটিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই পড়ার রুটিন তৈরি করে নিতে হবে। শিক্ষার্থী কোন সময় কোন বিষয় পড়বে, কোন বিষয়ে সময় বেশি দিবে— সেসব বিষয় নির্ধারণপূর্বক রুটিন তৈরি করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, রুটিন করা হলো ঠিকই কিন্তু তা আর অনুসরণ করা হলো না। এমন যদি হয় তাহলে আর হবে না। শিক্ষার্থীকে তার রুটিন যেমন তৈরি করতে হবে, তেমনি সেই রুটিন মোতাবেক পড়াশোনাও করতে হবে।

Advertisement

> আরও পড়ুন- খেয়াঘাটেই আটকে যায় ওদের স্বপ্ন

পাঠ্যবই

অনেক শিক্ষার্থীই নিজের পাঠ্যবই না পড়ে গাইড বই গলধঃকরণ করে থাকে। নতুন বছরের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীকে গাইড বই নয়, পাঠ্যবইগুলো ভালোভাবে বুঝেশুনে পড়তে হবে। গাইড বই হলো সহায়ক গ্রন্থ। কার সহায়ক গ্রন্থ? পাঠ্যবইয়ের সহায়ক বই। তাই সবার আগে পাঠ্যবই পড়তে হবে। পাঠ্যবই ভালোভাবে পড়া থাকলে শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করবে— এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি।

কালকের জন্য ‘না’

Advertisement

আজকে থাক, কালকে পড়বো— এমন কাজ শিক্ষার্থীরা প্রায়ই করে থাকে। অথচ আমরা জানি, সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়। সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়। আজকের পড়া কালকের জন্যে ফেলে রাখলে হবে না। দিনের পড়া দিনেই শেষ করতে হবে। তাহলে দেখা যাবে পরীক্ষার অনেক আগেই সিলেবাস কমপ্লিট হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীকে তখন পরীক্ষার সময় আর চাপ নিতে হবে না।

স্কুল, শিক্ষক, প্রশ্ন

স্কুলে প্রতিদিন যেতে হবে। ক্লাসে মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষক কী বিষয়ে পড়াচ্ছেন তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। শিক্ষক ক্লাসে পড়ানোকালীন নিজেরা পরস্পর কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোথাও না বুঝলে শিক্ষককে প্রশ্ন করতে হবে। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষককে প্রশ্ন করতে ভয় পায়। এ কারণে অনেক কিছুই তাদের বোধগম্য হয় না। যারা প্রশ্ন করতে ভয় পায়, সেই ভয় তাদেরকে অবশ্যই কাটিয়ে উঠতে হবে। ক্লাসের প্রথম সারিতে বসার চেষ্টাও করতে হবে।

> আরও পড়ুন- মনের অন্ধকার দূর করে বই

বিনোদন

শিক্ষার্থী কি পড়াশোনার মেশিন? সে কেবল দিনরাত এক করে পড়াশোনা আর পড়াশোনা করবে? মোটেই শিক্ষার্থী কোনো মেশিন নয়। পড়াশোনা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ মাত্র। বিনোদনও জীবনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীকে নিয়মিত খেলাধুলা করতে হবে। এতে শরীর ও মন বিকশিত হবে। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ও জাতীয় দিবসগুলোতে অংশ নিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হবে। সামাজিক কর্মকাণ্ডও করতে হবে। তাহলেই শিক্ষার্থী হবে আদর্শ মানুষ।

২০১৯ সালে কোনো শিক্ষার্থী তার শিক্ষা জীবনে উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিলে সে নিঃসন্দেহে পড়াশোনায় অনেক ভালো করবে বলে আমার বিশ্বাস। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য আমার অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।

লেখক: প্রধান শিক্ষক, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর।

এসইউ/পিআর