সকাল থেকেই মন্ত্রীবরণের প্রস্তুতি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল দুপুরের পর যখন সচিবালয়ে সভা করছিলেন, তখন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে চলছিল তাদের নতুন চেয়ারম্যানকে বরণ করার প্রস্তুতি। চারদিকে ফুল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি। এই আসছেন, এই আসছেন..., অপেক্ষায় এনএসসি টাওয়ারের অষ্টম তলায় গিজগিজ করছিল মানুষ। ওই তলায়ই যে পরিষদের চেয়ারম্যানের দফতর!
Advertisement
মন্ত্রণালয়, ক্রীড়া পরিদপ্তর এবং বিকেএসপির কর্মকর্তাদের নিয়ে সচিবালয়ের সভা শেষে নতুন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে এলেন বিকেলে চারটার দিকে। টাওয়ারের প্রধান ফটক পেরিয়ে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর গাড়ী ভেতরে ঢুকতেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সরকার সমর্থিত কর্মচারী ইউনিয়নের ‘জয়বাংলা, জয়বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান। গাড়ী থেকে জাহিদ আহসান রাসেল নামতেই তাকে লক্ষ্য করে পুষ্পবৃষ্টি। প্রতিমন্ত্রী ইশারায় বোঝালেন, ফুলের পাপড়ি গায়ে নয়, সামনে ছিটাতে। পাশ থেকেও একজন বললেন, ‘স্যারের সমস্যা আছে, ফুল গায়ে মাইরেন না।’
ফুল শুকালে যেমন হয়, কিছুক্ষণ পর তেমন হয়ে গেলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারিতের মুখ। হবেই বা না কেন? প্রথম এসেই তিনি পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘কোনো দুর্নীতি নয়। অনিয়ম দুর্নীতি তিনি করবেন না, কাউকে করতেও দেবেন না।’
এমন কথা সবাই বলেন। জাহিদ আহসান রাসেলের বলার মধ্যে পার্থক্য হলো, এই মন্ত্রণালয় সম্পর্কে তার পুরো ধারণা আছে। যাকে বলে নখদর্পণে। তিনি যে টানা ১০ বছর ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি! জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সম্পর্কে তার ধারণা থাকাই স্বাভাবিক।
Advertisement
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি সেটা পরিস্কার করেছেন, ‘এই পরিষদ নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। যে অভিযোগ শুনেছি তা শূন্যের কোটায় আনতে চাই।’ এ কথা বলে তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘পারবেন তো?’ পারবো আওয়াজটা বেশি মোটা গলায় ছিল না প্রতিমন্ত্রীর সামনে ও আশপাশে বসা মানুষগুলোর।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ৩.৫ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ’ এর কথা উল্লেখ করে নতুন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে যে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন তা বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। আমি নিজে অনিয়ম-দুর্নীতি করবো না, কাউকে করতেও দেবো না। ক্রীড়াঙ্গন হবে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত।’
জাহিদ আহসান রাসেলের বাবা প্রয়াত আহসান উল্লাহ মাস্টারও এক সময় ছিলেন গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য। বাবার সততার প্রসঙ্গ টেনে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। ১০ বছর ছিলাম যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। আমার বিরুদ্ধে একটি লাইনও কেউ লিখতে পারেনি। আমি সেভাবে চলার চেষ্টাই করবো। বাবার সততা ও নিষ্ঠা ধারণ করে মন্ত্রণালয়ের কাজ করবো।’
আরআই/আইএইচএস/পিআর
Advertisement