বলা হয় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে তাকে জোর করে অবসর করিয়ে দেয়া হয়েছে। তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে যোগসাজসে মেতেছিলেন বোর্ড কর্মকর্তারাও। কিন্তু মাশরাফি বিন মর্তুজা বারবারই প্রমাণ করে যাচ্ছেন, আসলে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে তার অবসরটা ছিল অনাকাংখিত, জোর করে।
Advertisement
গত বিপিএলে সেটা দেখিয়েছিলেন রংপুরকে চ্যাম্পিয়ন করিয়ে। এবারও দেখাচ্ছেন। তার বয়স যত বাড়ছে যেন, ততই ধারালো হয়ে উঠছেন তিনি। তার আরও একটি ঝরক দেখালেন তিনি আজ বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে খেলতে নেমে। রীতিমত ক্যারিয়ার সেরা বোলিংটা করে ফেলেন অধিনায়ক মাশরাফি।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দলটির দিকে তাকালে যে কারও চোখ কপালে ওঠার কথা। তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস কিংবা এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে রয়েছেন স্টিভেন স্মিথ, এভিন লুইস, শহিদ আফ্রিদি এবং শোয়েব মালিক। এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলতে নামলে যে কারও পিলে চমকে যাবার কথা।
কিন্তু যে দলের অধিনায়ক মাশরাফি, তাদের এত সহজে কাবু করতে পারার কথা নয়। টস জিতে কুমিল্লাকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শুরুতেই যে চেপে ধরার পরিকল্পনা ছিল মাশরাফির, সেই পরিকল্পনা নিজেই বাস্তবায়ন শুরু করলেন। ৪ ওভার বোলিং করে ১১ রান দিয়ে নিলেন ৪ উইকেট।
Advertisement
ক্যারিয়ারে এটাই তার সেরা বোলিং। এর আগে ১৯ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। সেটাই ছিল তার সেরা বোলিং। কিন্তু নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়ে এবার নতুন নজির স্থাপন করলেন মাশরাফি। বোলিংয়ের সূচনা করেছিলেন নিজে। এক স্পেলেই টানা ৪ ওভার বোলিং করে ফেললেন তিনি। ১টি মেডেন নিলেন। রান দিলেন কেবল ১১টি। উইকেট ৪টি। বিধ্বংসী এবং কৃপণ বোলিংয়ের উৎকৃষ্ট নমুনা।
দলের তৃতীয় এবং নিজের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলেই ফরহাদ রেজার হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তামিমকে। ১০ বলে ৪ রান করে আউট হয়ে যান কুমিল্লার এই আইকন ক্রিকেটার। নিজের তৃতীয় ওভার করতে এসে দ্বিতীয় বলেই ইমরুল কায়েসকে ফিরিয়ে দেন মাশরাফি। ৪ বলে মাত্র ২ রান করে ফিরে যান ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল এই ব্যাটসম্যান।
একই ওভারের পঞ্চম বলে এভিন লুইসকেও সাজঘরের পথ দেখালেন মাশরাফি। তিনি ক্যাচ তুলে দেন নাজমুল ইসলাম অপুর হাতে। অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ এসে দাঁড়াতেই পারেননি। বল খেলেছিলেন ৫টি। কিন্তু ফরহাদ রেজার হাতে যখন তিনি মাশরাফির বলে ক্যাচ তুলে দিলেন, তখন ৫ বলে কোনো রানই তুলতে পারেননি স্মিথ।
৪ ওভারের বোলিং ফিগার শেষ করার পরই দেখা গেলো, কুমিল্লার ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে-চুরে চারখার হয়ে আছে। বাকি কাজটুকু সেরে ফেলেন নাজমুল ইসলাম অপু, শফিউল ইসলাম এবং ফরহাদ রেজা। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৬.২ ওভারে কুমিল্লা অলআউট ৬৩ রানে অলআউট কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
Advertisement
আইএইচএস/পিআর