চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রাফিদা খান রাইফার মৃত্যুর অভিযোগে করা হত্যা মামলা প্রত্যাহারে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিশুটির বাবা সাংবাদিক মো. রুবেল খান।
Advertisement
রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন শেষে এ অভিযোগ করেন তিনি।
রাইফার বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে মেডিকেল মার্ডারের শিকার। আমি মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচার চাই। মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত কমিটির কাছে জানিয়েছি। আমি ও আমার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনাও করেন তিনি।
Advertisement
এর আগে সকাল ১০টার দিকে সার্কিট হাউসে আসেন রুবেল খান। একই সময় সার্কিট হাউসে উপস্থিত হন অভিযুক্ত চিকিৎসকরা।
২৯ জুন রাতে নগরের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সাংবাদিক রুবেল খানের মেয়ে রাইফার। মৃত্যুর পর থেকেই রাইফার পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা এবং দায়িত্বরত চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণেই অকাল মৃত্যু হয় রাইফার।
ওই দিন রাতেই এ জন্য দায়ী ডাক্তার এবং নার্সদের আটক করে চকবাজার থানা পুলিশ। কিন্তু ভোরে তাদের ছাড়িয়ে আনতে থানায় গিয়ে অশোভন আচরণ এবং চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা বন্ধের হুমকি দেন বিএমএ নেতা ফয়সল ইকবাল চৌধুরী ও তার সহযোগীরা।
এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৬ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় রাইফার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করে তদন্ত কমিটি।
Advertisement
এ ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব সাইফুল্লাহিল আজমকে, সদস্য সচিব করা হয় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীকে। কমিটিতে বিএমডিসি ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের দু’জন প্রতিনিধি রয়েছেন।
মঙ্গলবার ওই তদন্ত কমিটি রাইফার বাবা মো. রুবেল খানের সঙ্গে কথা বলার পর অভিযুক্ত ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী খান, ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত এবং ডা. শুভ্র দেবের সঙ্গে কথা বলেন। বেলা পৌনে ১টায় সার্কিট হাউস থেকে বের হন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, ‘অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত সবার সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বক্তব্য শুনেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করব। তদন্ত শেষে শিগগিরই রিপোর্ট দেয়া হবে।’
সার্কিট হাউস থেকে বের হয়ে মেহেদীবাগের ম্যাক্স হাসপাতাল পরিদর্শনে যান তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
এনডিএস/এমএস