ভারতীয় দলের কোচ এবং অধিনায়ক, দু’জনেরই রয়েছে বিশ্বকাপে খেলা এবং জয় করার অভিজ্ঞতা। কোচ রবি শাস্ত্রি ছিলেন ১৯৮৩ সালে ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য। যদিও, তিনি সেবার ফাইনালে খেলতে পারেননি। আর বিরাট কোহলি ছিলেন ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য এবং ফাইনালেও খেলেছেন তিনি।
Advertisement
বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ এবং অনুভূতি কেমন, সেটা দু’জনেরেই জানা আছে। বিশ্বকাপ জয়ই যেখানে একজন খেলোয়াড়ের প্রধান লক্ষ্য হয়ে থাকে, সেখানে বিরাট কোহলি এবং রবি শাস্ত্রির কাছে নাকি বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দও ম্লান হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আনন্দের কাছে।
বিরাট কোহলি সরাসরিই বলে দিলেন, ‘২০১১ সালে বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলাম আমি। কিন্তু এবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিতে যে আনন্দ পেয়েছি, সেবার বিশ্বকাপ জয় করেও এত আনন্দ পাইনি। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলেছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত সেটা জিতেছি। তখন অনেক সিনিয়র খেলোয়াড় ছিলেন এবং বিশ্বকাপ জয়ে তাদের আনন্দ-অনুভূতি দেখেছি। অবশ্যই সেটা ছিল আমার জন্য বিশাল একটি অর্জন। কিন্তু আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, কোন আনন্দটি আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি আবেগঘন? তখন অবশ্যই আমি বলবো, এটাই (অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জয়) আমার কাছে সবচেয়ে বেশি আবেগঘন ব্যাপার। এর কারণ হচ্ছে, এ নিয়ে এখানে আমি তৃতীয়বার সফরে এসেছি এবং আমি জানি, অস্ট্রেলিয়া কতটা কঠিন প্রতিপক্ষ দলগুলোর জন্য। গত ১২ মাস আমরা একটি দল হিসেবে যে সংগ্রাম করে আসছি, তার ফল পেলাম অবশেষে।’
গত বছর ইংল্যান্ড সফরের সময় ভারতীয় দলটিকেই সর্বকালের সেরা বলেছিলেন রবি শাস্ত্রি। তার এ মন্তব্য নিয়ে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। শাস্ত্রির মুন্ডুপাত করতেও ছাড়েননি ভারতীয় সমর্থক থেকে শুরু করে অনেক রথি-মহারথিও। কিন্তু নিজের মন্তব্য নিয়ে শাস্ত্রি ছিলেন নির্বিকার।
Advertisement
এবার ইতিহাসে প্রথমবারেরমত অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই শাস্ত্রির গলার ঝাঁঝ সবচেয়ে বেশি হওয়ার কথা। হলোও। সিডনিতে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে কোহলিদের কোচ জানিয়ে দিলেন, এই ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়কে ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ের চেয়েও এগিয়ে রাখছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের বলছি যে, এই জয়ে আমি কতটা খুশি। তিরাশির বিশ্বকাপ ধরুন বা তার দুই বছর পরের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অব ক্রিকেট..., এই জয়গুলোর সঙ্গে সমান তুলনীয় তো বটেই, আমি তো বরং বলব, সে সব ট্রফি জয়ের চেয়েও এবার অস্ট্রেলিয়ার মাটি থেকে সিরিজ জয় করে নেওয়াটা অনেক বেশি কৃতিত্বের। কারণ কোহালিরা বাজিমাত করেছে ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ঘরাণায়। টেস্ট আসরে।’
বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ৭১ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয় করার স্বাদ পেলো ভারত। স্বাভাবিকভাবেই পুরো ভারতবর্ষ কোহালিদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত। অধিনায়ক হিসেবে কোহলি এবং কোচ হিসেবে শাস্ত্রি নিজেও যে উচ্ছ্বসিত হবেন, তা যেন বলাই বাহুল্য। তবে, ১৯৮৩ সালের রূপকথার বিশ্বকাপ জয়ের চেয়ে কোহলিদের অসি বধের কৃতিত্বকে সেরা বলার পর কোহলি এবং শাস্ত্রীর জন্য ভক্ত-সমর্থকদের পক্ষ থেকে কি অপেক্ষা করছে, সেটাই এখন দেখার।
আইএইচএস/এমকেএইচ
Advertisement