জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নতুনেই আস্থা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুনদের ওপর ভরসা রেখে যে মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন তা অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ বলে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জর্ডান কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা-কর্মীরা মন্তব্য করেন। রোববার দেশটির বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
Advertisement
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক কোহিনুর রহমান যৌথ বিবৃতিতে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এ কে এম আব্দুল মোমেনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনোনীত করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ৪৬ সদস্য নিয়ে এ মন্ত্রিসভা গঠিত হচ্ছে। মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও ৩ জন উপমন্ত্রী থাকছেন। রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নতুন মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছে রেখেছেন।
Advertisement
উল্লেখ্য, বঙ্গভবনে সোমবার বিকেলে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে রোববার দুপুর থেকে শপথ নেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা ফোন করেন সংশ্লিষ্টদের। গণভবন থেকে বেলা দেড়টার দিকে তালিকা নিয়ে সচিবালয়ে ফেরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
নতুন মন্ত্রিসভায় আকার হলো ৪৬ সদস্যবিশিষ্ট। এর মধ্যে মন্ত্রী ২৪ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৯ জন ও উপমন্ত্রী তিনজন।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তারা পেয়েছে ২৮৮ আসন। অন্যদিকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের জোট পেয়েছে মাত্র সাতটি আসন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এমপিরা ছাড়া গত বৃহস্পতিবার নবনির্বাচিত এমপিরা শপথ নেন। জয়ের পর টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট, টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন শেখ হাসিনা।
Advertisement
সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মন্ত্রিসভায় একজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন এবং প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্ধারণ করবেন, সেভাবে অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সংখ্যার কমপক্ষে দশভাগের ৯ ভাগ সংসদ-সদস্যদের মধ্য থেকে নিয়োগ পাবেন। সর্বোচ্চ দশভাগের এক ভাগ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্য থেকে মন্ত্রিসভার সদস্য মনোনীত (টেকনোক্র্যাট) হতে পারবেন বলে সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর শপথ পড়াবেন। এরপর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দফতর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলে তারাই হবে দেশের নতুন সরকার। শপথ নেয়া পর্যন্ত আগের মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে। নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলে আগের মন্ত্রিসভা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপির বর্জনের মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন হয়। ১২ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা। তখন শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ওই সরকারে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ প্রতিমন্ত্রী এবং দু’জন উপমন্ত্রী ছিলেন। পরে কয়েক দফা মন্ত্রিসভায় রদবদল আনা হলে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়ায় ৫২ সদস্যের। তবে নির্বাচনের আগে টেকনোক্র্যাট চারমন্ত্রীকে বাদ দেয়া হয়।
সেলিম আকাশ, জর্ডান থেকে/এমআরএম/আরআইপি