অর্থনীতি

রফতানিতে সুবাতাস, কমছে বাণিজ্য ঘাটতি

বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করেছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সার্বিক বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে সাড়ে ১২ শতাংশ।

Advertisement

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানি ব্যয় কমে আসায় বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমতির দিকে রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করা বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে (জুলাই-নভেম্বর) পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি হয়েছে ৬৬৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার; গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৭৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। বছরের ব্যবধানে পয়েন্ট টু পয়েন্টে ঘাটতি কমেছে ৯৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা সাড়ে ১২ শতাংশ। রফতানিতে আগের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি ও আমদানিতে কম প্রবৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। এ সময়ে রফতানি আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

আলোচিত সময়ে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে এক হাজার ৬৭৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে দুই হাজার ৩৪৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে সেপ্টেম্বর শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৬৬৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৪ টাকা ধরে) ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময় ছিল ৭৬০ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ৬৩ হাজার ৮৯৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

Advertisement

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাব (-) ঋণাত্মক। তবে গত বছরের তুলনায় এই (-) ঋণাত্মক হিসাব কমেছে। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৫৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৭৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো।

এদিকে আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বেতনভাতা বাবদ বিদেশিদের পরিশোধ করেছে ৪১৪ কোটি ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে ২৮৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবায় বাণিজ্যে দেশে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১২৬ কোটি ১০ খাল ডলার। যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ২০০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

প্রথম পাঁচ মাসে প্রবাসীদের আয় এসেছে ৬২৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫৭৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। রেমিট্যান্স প্রবাহে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

Advertisement

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ১২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি।

এদিকে এফডিআই বাড়লেও দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপক হারে কমেছে। অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে শেয়ারবাজারে মাত্র চার কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ১৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

এসআই/বিএ/জেআইএম