তার মানে শেরে বাংলার উইকেট সম্পর্কে মেহেদি হাসান মিরাজের কথাই ঠিক। উইকেটের চরিত্র-আচরণ, গতি প্রকৃতি নিয়ে বলতে গিয়ে শনিবার রাতে ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে হারের পর অফিসিয়াল মিডিয়া সেশনে এসে রাজশাহী কিংস অধিনায়ক মিরাজ বলেছিলেন, ‘শেরে বাংলার যে পিচে খেলা হচ্ছে, তার চরিত্র দুরকম। দিনে মানে প্রথম ম্যাচে একরকম। আর রাতে ফ্লাডলাইটের আলোয় অন্যরকম।’
Advertisement
এ উইকেট আসলে কত রানের? এ প্রশ্নর জবাবে মিরাজ জানিয়েছিলেন, ‘সন্ধ্যার পর আমার মনে হয়, এই উইকেটে ১৫০ থেকে ১৬০ রান করা যায়। কিন্তু প্রথম ম্যাচে তাও করা কঠিন। কারণ প্রথম ম্যাচ যখন খেলা হয়, তখন শিশির থাকে না। তখন বল একটু দেরিতে ব্যাটে আসে। খানিক টার্নও করে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যার পর শিশির পড়ে তখন বলের মুভমেন্ট থাকে না। বোলাররা তখন কোনো সহায়তা পায় না। আমার মনে হয়, পরের ম্যাচে যদি ব্যাটসম্যানরা ভালো করে, সবাই অবদান রাখে তাহলে দেড়শ ছাড়ানো রান করা সম্ভব।’
মিরাজের আগে শেরে বাংলার উইকেট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রংপুর রাইডার্সের অভিজ্ঞ যোদ্ধা ও উপমহাদেশে বহু খেলার অভিজ্ঞতায় পূর্ণ যার ভান্ডার, সেই রবি বোপারা বলেছিলেন-এটা ১৩০ রানের উইকেট। আর কাল প্রথম ম্যাচের সেরা পারফরমার চিটাগাং কিংসের প্রোটিয়া পেসার রবি ফ্রাংলিঙ্কের চোখে এটা ১২০ থেকে ১২৫ রানের উইকেট।
তাদের সবার কথাই ঠিক। আজ সিলেট সিক্সার্সের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচও বললেন, ‘উইকেট মোটেই সহজ নয়। ফ্রি শটস খেলা মানে ইচ্ছেমত বিগ হিট নেয়া, চার ও ছক্কার ফুলঝুরি ছোটানো বেশ কঠিন।’
Advertisement
রোববার প্রথম ম্যাচ শেষে প্রেস মিটে উইকেট প্রসঙ্গে ডেভিড ওয়ার্নার বলেন, ‘আমরা এখনো উইকেটের আচরণ, গতি-প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করছি। উইকেটের চরিত্র বোঝার চেষ্টাও চলছে। আমাদের মনে হয়েছে, এখানে প্রথম ম্যাচটি লো স্কোরিং হবে। পরের খেলাটিতে রান থাকবে। কারণ একটাই, সন্ধ্যার পর শিশির পড়ে বল স্কিড করে।’
শেরে বাংলার উইকেটে প্রথম ম্যাচে স্বচ্ছন্দে খেলা যাচ্ছে না। বিগ হিট নেয়া কঠিন । চার ও ছক্কার ফুলঝুরিও তাই কম। প্রথম দিনের পর আজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আর সিলেট সিক্সার্স ম্যাচেও উইকেটের সেই অবস্থা।
এ পিচে ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভেন স্মিথের মত বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান আজ বিপিএলে প্রথম খেলতে নামলেন। ব্যাটিংও করলেন। দুজনার কেউ স্বচ্ছন্দে খেলতে পারেননি। কারো ব্যাট কথা বলেনি। কেউ রান পাননি। ওয়ার্নার ১৩ বলে ১৪ আর স্টিভেন স্মিথ ১৭ বলে ১৬ রানে আউট।
এর মধ্যে ওয়ার্নার অবশ্য তৌহিদ হৃদয়ের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়েছেন। আর কুমিল্লা ক্যাপ্টেন স্টিভেন স্মিথ সিলেট পেসার আল আমিনের বলে কট বিহাইন্ড হলেও বল আদৌ তার ব্যাটে লেগেছিল কিনা, তা নিয়ে রাজ্যের সংশয়-সন্দেহ ছিল। কারণ টিভি রিপ্লেতে কিছুই বোঝা যায়নি। এবার বিপিএলে ডিআরএস সিস্টেমে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা, তা বোঝা আসলে কঠিন। কারণ ক্যামেরার যে সিস্টেমে বল ব্যাটে লেগেছে কিনা তা বোঝা যায়, সেই স্নিকোমিটার নেই।
Advertisement
স্নিকোমিটার চিনতে নিশ্চয়ই কষ্ট হচ্ছে না। আরে ঐ যে একটা রেখা বল ও ব্যাটের নড়ানড়ায় চলে অনেকটা ‘ইসিজির’ মত । তাতে সূক্ষ্ম কট বিহাইন্ডও ধরা পড়ে। বল যদি একটু ব্যাটে স্পর্শ করে উইকেটের পিছনে চলে যায়, তা স্নিকোমিটারে স্পষ্ট ধরা পড়ে।
এবারের বিপিএলে ডিআরএস থাকলেও ঐ প্রযুক্তিটা নেই। তাই বলা যাচ্ছে না, আসলে স্মিথ আউট ছিলেন কিনা।
এআরবি/এমএমআর/আরআইপি