সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নামাজে জানাজায় ঢল নামে লাখো মানুষের। ছিল সর্বস্তরের জনতার উপস্থিতি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেন এই জানাজায়। অনেকে এসেছেন প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো দেখতে।
Advertisement
রোববার (৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সম্পন্ন হয় সৈয়দ আশরাফের প্রথম জানাজা। এতে অংশ নিতে সকাল থেকেই জনস্রোত নামে। জানাজাস্থলে আসেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রায় সব নেতা, ঢাকা মহানগরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীসহ মরহুমের শুভানুধ্যায়ীরা।
গণপূর্ত বিভাগে চাকরি করেন শামসুল ইসলাম। তিনি ধানমন্ডিতে থাকেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে তার কোনো আত্মীয়তার বন্ধন ছিল না। তার অফিস কলিগও না। সামনা সামনি তার সঙ্গে কোনো দিন কথাও হয়নি। কিন্তু নেতা ও মন্ত্রী হিসেবে সৈয়দ আশরাফকে খুব ভালো লাগে তার। তাই তার জানাজায় অংশ নেয়া।
এ রকম শত শত ভক্ত, সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী এসেছেন সৈয়দ আশরাফের জানাজায়। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সর্বসাধারণ এতে অংশগ্রহণ করেন।
Advertisement
এরপর মরহুমের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদ ও বিরোধীদলের সদস্যরা।
জানাজায় রাষ্ট্রপতি ছাড়াও অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়াসহ সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ঐক্যফ্রন্টের নবনির্বাচিত এমপি সুলতান মনসুরকেও জানাজায় দেখা যায়।
জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘গার্ড অব অনার’ দেয়া হয় মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী সৈয়দ আশরাফকে। এর পরপরই তার মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তারপর মরহুমের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ। এ সময় বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারাও শ্রদ্ধা জানান। সর্বস্তরের জনতার জন্য শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব উন্মুক্ত করে দেয়ার আগে মরহুম আশরাফের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় আশরাফের মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নেয়া হয়।
Advertisement
সংসদ ভবন প্লাজায় জানাজা শেষে তার মরদেহ হেলিকপ্টারে করে নেয়া হয় নিজ জেলা কিশোরগঞ্জে। বেলা ১২টায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাঁহ ময়দানে সম্পন্ন হবে মরহুমের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা। তার তৃতীয় জানাজা হবে দুপুর ২টায় ময়মনসিংহের আঞ্জুমান ঈদগাঁহ মাঠে। সেখান থেকে ফের ঢাকায় এনে বাদ আসর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে সৈয়দ আশরাফকে।
দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে গত ৩ জানুয়ারি রাতে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান সৈয়দ আশরাফ।ব্যাংকক থেকে ৪ জানুয়ারি একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হয় তার মরদেহ।
এফএইচএস/এমবিআর/পিআর