জাতীয়

খালেদার দুই আবেদন হাইকোর্টে খারিজ

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার নিম্ন আদালত থেকে নথি তলব ও দুদকের প্রথম তদন্ত কর্মকর্তার অব্যাহতিপত্র (ফাইনাল রিপোর্ট) তলব সংক্রান্ত খালেদা জিয়ার করা দুই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। রোববার শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। অপরদিকে, দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। একই আদালতে কয়লার খনি মামলা বাতিল বিষয়ে প্রায় সাত বছর আগে জারি করা রুলের ওপর শুনানি চলছে। রুল শুনানিতে দুটি নথি তলব করে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।আবেদনের বিষয়ে আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, মামলা দায়েরের পর ১ম তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. মনিরুল হককে এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয় দুদক। এর পর থেকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করতে থাকেন। এ অবস্থায় ২০০৮ সালের ১৩ ও ১৮ মে তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক আসামিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের অনুমতি নেন। একই বছরের ১ জুন তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক সব আসামিকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।পরে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল না করে উপ-পরিচালক আবুল কাশেম ফকিরকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে। এই তদন্ত কর্মকর্তা ২০০৮ সালের ৫ অক্টোবর সব আসামিকে সম্পৃক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন।  ব্যারিস্টার রাগীব আরও বলেন, দুদক আইনে একই বিষয়ে পুনঃতদন্তের কোনো বিধান নেই। কোনো ক্ষেত্রে অধিকতর তদন্ত করতে হলে, সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করার প্রয়োজন হলে- সে ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এ মামলায় পুনঃতদন্তের বিষয়ে ও পুনরায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে আদালতের কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। আদালতকে অবহিতও করা হয়নি। এ কারণে এ মামলা চলতে পারে না। তিনি আরো বলেন,  আমরা এ মামলার অব্যাহতিপত্র ও মামলার নথিপত্র তলব চেয়ে দুটি আবেদন করেছিলাম।এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেছেন, তাদের আবেদন দুটি মামলা বিলম্ব করার জন্য। যে ফাইনাল রিপোর্ট ও মামলার নথিপত্র তারা তলব করেছে সেগুলো তাদের নথির সঙ্গে দাখিল করা হয়েছে। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের একশ ৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি করে দুদক। এ মামলায় একই বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। পরে মামলাটি বাতিল চেয়ে ওই বছরই হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। একই সঙ্গে মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি চলছে।এ অবস্থায় মামলার নথি তলব চেয়ে মঙ্গলবার আবেদন করা হয়। ওই মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- প্রয়াত অর্থমন্ত্রীএম. সাইফুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এমকে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, একেএম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এসআর ওসমানী, সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্র“পের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।  এফএইচ/এএইচ/পিআর

Advertisement