রাজধানীতে প্যাকেজ সেবার আওতায় এবার চালু হয়েছে ‘কাফন কার্যক্রম প্রকল্প’। এ প্রকল্পের আওতায় লাশ গ্রহণ, লাশের গোসল, কাফনের কাপড়সহ আনুষ্ঠানিক দ্রব্যদি সরবরাহ ও পরিধান, লাশ বহনকারি বক্স, চা পাতা ও পলিথিনসহ দাফন সম্পন্নের বিভিন্ন সেবা প্রদানের অফার দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন কবরস্থানে লাশ পৌঁছে দিতে ফ্রিজার গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স (এসি/ননএসি) ইত্যাদিও ভাড়া দেয়া হচ্ছে এ প্রকল্প থেকে। শুধু তাই নয় এ কার্যক্রমকে জনপ্রিয় করতে হট লাইন চালু, দেয়াল লিখন ও লিফলেটও বিলি করতেও দেখা গেছে। রাজধানীর ধানমন্ডি ১২/এ সড়কে অবস্থিত মসজিদ-উত-তাকওয়া সোসাইটি থেকে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কৌতুলহলবশত জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক মাসজিদটিতে গেলে প্রকল্পের বিভিন্ন প্যাকেজ সেবা সম্পর্কে জানতে পারেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আনুমানিক ছয় থেকে সাত মাস আগে এ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। মূলত মসজিদ কমিটির মাধ্যমে এ প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আবদুল কাইয়ুম নামের একজন সুপারভাইজার প্রকল্প কার্যক্রম দেখভাল করছেন। রাজধানীর স্কয়ার ও মেডিএইড হাসপাতালসহ একাধিক হাসপাতালের চিকিৎসকরা কাফন প্রকল্প কার্যক্রমে লাশ পাঠিয়ে সহায়তা করেন। এ প্রকল্পের আওতায় সেবার বিনিময়ে আদায়কৃত টাকাকে হাদিয়া বলা হয়।প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, কাফন প্রকল্প সেবা বা প্যাকেজ-১ এর আওতায় দুই হাজার টাকা হাদিয়ায় লাশ গ্রহণ, গোসল দেয়া, কাফনের কাপড়সহ আনুষাঙ্গিক দ্রব্যাদি সরবরাহ ও পরিধানসহ কাফনের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে লাশ হস্তান্তর করা হয়।প্যাকেজ ২ এর আওতায় তিন হাজার ৯০০ টাকা হাদিয়ায় বাক্সসহ লাশ গ্রহণ, গোসল দেয়া, কাফনের কাপড়সহ আনুষাঙ্গিক দ্রব্যাদি সরবরাহ ও পরিধান, লাশ বহনকারি বাক্স, চা পাতা (১০ কেজি) ও পলিথিনসহ লাশ হস্তান্তর করা হয়। প্যাকেজ ৩ এর আওতায় লাশবাহী ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্স (সার্ভিস চার্জ/ভাড়া পরিচালন খরচ ছাড়া) চার্জ প্রতিবার তিন হাজার টাকা ও জ্বালানিসহ পরিচালন ব্যয় প্রতি ঘণ্টা এক হাজার টাকা। এসি অ্যাম্বুলেন্সের ক্ষেত্রে মসজিদ-উত-তাকওয়া থেকে বনানী ও জুরাইন কবরস্থানে লাশ পৌঁছে দিতে প্রতিবার তিন হাজার টাকা। এছাড়া আজিমপুর, মিরপুর, শাহজাহানপুর ও রায়ের বাজার কবরস্থানে পৌঁছাতে প্রতিবার দুই হাজার টাকা নেয়া হয়। নন-এসি অ্যাম্বুলেন্সে এ খরচের পরিমান যথাক্রমে দুই হাজার দুইশো ও এক হাজার পাঁচশ টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, তাদের নিজস্ব কোন অ্যাম্বুলেন্স নেই। লাশের স্বজনরা যোগাযোগ করলে তারা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন।মসজিদে লাশের গোসল করালে যারা গোসল করান তারা প্রত্যেকে তিনশ টাকা পান। তবে প্রকল্পটি এখনও তেমন জনপ্রিয়তা না পাওয়ায় বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে একটা করে কাফন কার্যক্রম হচ্ছে। ধানমন্ডি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, প্যাকেজ নাটক, প্যাকেজ চিকিৎসার কথা শুনলেও প্যাকেজ কাফনের কথা আগে শুনিনি। কোনদিন হয়তো শুনবো প্যাকেজের আওতায় কাঁদার জন্য প্রকল্প কার্যক্রম শুরু হবে। এমইউ/এআরএস/এএইচ/এমআরআই
Advertisement