সিরিজের প্রথম ম্যাচে থিসারা পেরেরার ১ ওভারে ৩৪ রান তুলেই ম্যাচ জিতে নিয়েছিলেন কিউই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। পরের ম্যাচে যেনো সেই বদলা নিতেই মাঠে নেমেছিলেন থিসারা পেরেরা। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের কচুকাটা করে করেছেন ঝড়ো সেঞ্চুরি, খেলেছেন ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস।
Advertisement
কিন্তু অন্য ব্যাটসম্যানদের অসহযোগিতার কারণে ম্যাচ জেতার হয়নি পেরেরার দল শ্রীলঙ্কার। ভেস্তে গিয়েছে পেরেরার একার লড়াই। নিউজিল্যান্ডের ৩১৯ রানের জবাবে ২২ বল বাকি থাকতেই ২৯৮ রানে অলআউট হয়েছে লঙ্কানরা। পরাজয়ের ব্যবধান মাত্র ২১ রানের। ম্যাচ জিতে ৩ ম্যাচ সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কার পক্ষে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন দানুশকা গুনাথিলাকা। কিন্তু অপর প্রান্তে কেউই তাকে তেমন সঙ্গ দেয়নি। তবু দেখেশুনে এগিয়ে যাচ্ছিলো শ্রীলঙ্কার। ফিফটি তুলে নিয়ে ৭৭ রানে আউট হন গুনাথিলাকা।
২ উইকেটে ১১২ রান থেকে হুট করেই ৫ ওভার ঝটকায় ৭ উইকেটে ১২৮ রানের দলে পরিণত হয় লঙ্কানরা। সে অবস্থা থেকে জয় থেকে কয়েক হাত দূরে ছিলো স্বাগতিকরা। কিন্তু তাদের জয়ের স্বপ্ন ধুলিস্যাত করে দিতে চওড়া ব্যাটে নিজের উপস্থিতি জানান দেন পেরেরা।
Advertisement
অষ্টম উইকেট জুটিতে লাসিথ মালিঙ্গাকে সাথে নিয়ে ৫৪ বলে ৭৫, নবম উইকেট জুটিতে লাকশান সান্দাকানের সাথে ৪৬ বলে ৫১ এবং দশম উইকেট জুটিতে মাত্র ২০ বলে ৪৪ রান যোগ করেন পেরেরা। ২৭ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৮ রান থাকলে অলআউট হওয়ার আগে ৪৬.২ ওভারে ২৯৮ রান করে ফেলে সফরকারীরা।
অর্থাৎ শেষের তিন উইকেটে মাত্র ১৯.২ ওভারে ১৬০ রান করে শ্রীলঙ্কা। এর পুরো কৃতিত্বই থিসারা পেরেরার। মাত্র ৫৭ বলে পূরণ করে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ৮ চার ও ৭ ছক্কার মারে সেঞ্চুরি করার পরে আরো ৬ বার বল হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানা ছাড়া করেন।
ইনিংসের ৪৭তম ওভারে ম্যাট হেনরিকে নিজের ১৪তম ছক্কা মারতে গিয়ে লং অন বাউন্ডারিতে ট্রেন্ট বোল্টে অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হন পেরেরা। মাত্র ৭৪ বলে ৮ চার ও ১৩ ছক্কায় করেন ১৪০ আন। ম্যাচ জেতাতে না পারলেও ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন পেরেররাই।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মার্টিন গাপটিলের সেঞ্চুরি ও জিমি নিশামের টর্নেডো ইনিংসে ৩৭১ রানের পর্বতসম সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। রানোৎসবের এ ধারা তারা ধরে রাখে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও। এবার তাদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩১৯ রান।
Advertisement
মাউন্ট মাউনগানুইতে এদিন রান পাননি গাপটিল। তবে ঝড়ো ফিফটি পেয়েছেন কলিন মুনরো। পঞ্চাশ পেরিয়েছেন রস টেলরও। আর শেষদিকে আবারো ঝড় তুলে নিজের অর্ধশতক করেছেন জিমি নিশাম। আর এতেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩১৯ রানের সংগ্রহ পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি স্বাগতিকরা। মাত্র ১৩ রান করেই ফিরে যান গাপটিল। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও ফিরে যান অল্পতেই। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১১২ রান যোগ করেন মুনরো এবং টেলর।
মাত্র ৭৭ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কার মারে ৮৭ রান করেন মুনরো। সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েও তা মিস করেন রস টেলর। ১০৫ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কার মারে তিনি করেন ৯০ রান। আউট হন দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে।
তবে শেষদিকে ঝড় তোলার কাজটা ঠিকই করেন নিশাম। ৫ চারের সাথে ৩টি বিশাল ছক্কার মারে মাত্র ৩৭ বলে ৬৪ রান করেন তিনি। ইনিংসের ১০ বল বাকি থাকতেই রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। নিউজিল্যান্ডের সাত ব্যাটসম্যানের মধ্যে চারজনই সাজঘরে ফেরেন রানআউট হয়ে।
এসএএস/এমকেএইচ