জাতীয়

ছুটির দিনেও সরব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে নতুন করে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ গ্রহণের পর এবার সোমবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে শপথ নেবে নতুন মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মন্ত্রিসভার দাফতরিক কাজ থাকায় নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে শনিবার ছুটির দিনেও সরব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

Advertisement

শনিবার (৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সচিবালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রায় সবগুলো দফতর খোলা। শপথের জন্য আমন্ত্রণ ও নতুন মন্ত্রীদের দফতর বণ্টন নিয়ে কাজ করছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা। কয়েক দফা মিটিংও করেছেন তারা।

এর আগে গতকাল শুক্রবারও খোলা ছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যেখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অফিস করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আজ শনিবার সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবস্থান করছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। দুপুরের পর তিনি সচিবালয়ে আসতে পারেন।

কর্মব্যস্ততার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব বলেন, ‘নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য আমরা প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো করছি। প্রতি মুহূর্তেই আপডেট আসছে।’

Advertisement

নতুন মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে শপথ নেয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারই যোগাযোগ করে আমন্ত্রণ জানাবেন। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ তালিকা এখনও তাদের কাছে আসেনি।

নতুন মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি সরবরাহের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকারি যানবাহন অধিদফতর। পরিবহন কমিশনার সৈয়দ আবদুল মমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের যানবাহন ও চালক নিশ্চিতের জন্য কাজ করছি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে। আশা করছি, সোমবার সকালের মধ্যে সব চূড়ান্ত হবে।’

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তারা পেয়েছে ২৮৮ আসন। অন্যদিকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের জোট পেয়েছে মাত্র সাতটি আসন।

নির্বাচনের পর গত বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের নবনির্বাচিত এমপিদের মধ্যে ২৮৯ জন শপথ নেন। জয়ের পর টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট এবং টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন শেখ হাসিনা।

Advertisement

সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মন্ত্রিসভায় একজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন এবং প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্ধারণ করবেন সেভাবে অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সংখ্যার কমপক্ষে ১০ শভাগের ৯ ভাগ সংসদ-সদস্যদের মধ্য থেকে নিয়োগ পাবেন। সর্বোচ্চ দশভাগের এক ভাগ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্য থেকে মন্ত্রিসভার সদস্য মনোনীত (টেকনোক্র্যাট) হতে পারবেন বলে সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর শপথ পড়াবেন। এরপর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দফতর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলে তারাই হবে দেশের নতুন সরকার। শপথ নেয়া পর্যন্ত আগের মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে। নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলে আগের মন্ত্রিসভা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

এদিকে নতুন মন্ত্রিসভা ৬০ সদস্যের হতে পারে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এর মধ্যে ৩৫ জনের মতো মন্ত্রী, ২১ জনের মতো প্রতিমন্ত্রী ও ৪ জনের মতো উপমন্ত্রী থাকতে পারেন।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপির বর্জনের মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন হয়। ১২ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা। তখন শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ওই সরকারে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ প্রতিমন্ত্রী এবং দু’জন উপমন্ত্রী ছিলেন। পরে কয়েক দফা মন্ত্রিসভায় রদবদল আনা হলে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়ায় ৫২ সদস্যের। তবে নির্বাচনের আগে টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে বাদ দেয়া হয়।

আরএমএম/আরএস/এমকেএইচ