দেশজুড়ে

যুবলীগ নেতার থাপ্পড়ে হুলুস্থুল কাণ্ড

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীর নতুনবাজার এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে যুবলীগের আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

এ সময় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতার সমর্থকদের বাড়ি-ঘর ও দোকান ভাঙচুর করে যুবলীগ নেতার সহযোগীরা। সেই সঙ্গে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখা কার্যালয়।

সংঘর্ষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতিসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতির সমর্থক আ. রাজ্জাকের সঙ্গে সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সমর্থক আ. হান্নান শেখের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। উভয় পক্ষই জমিটি নিজের বলে দাবি করে আসছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ওই জমিতে আ. হান্নান শেখের ভাই ইসমাইল ঘর তুলতে চাইলে আ. রাজ্জাক বাধা দিয়ে মালামাল অন্য জায়গা নিয়ে যায়। এ সময় আ. হান্নান শেখ ও ইসমাইলের সঙ্গে আ. রাজ্জাকের কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাজ্জাক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিকে খবর দিলে নতুন বাজার এলাকায় এসে ঘর তুলতে নিষেধ করে। এ নিয়ে মতির সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়।

পরে মতিউর রহমান মতি কয়েকটি থাপ্পড় দেয় ইসমাইলকে। এতে বেধে যায় হুলুস্থুল কাণ্ড। ক্ষিপ্ত হয়ে ইসমাইল হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে মতির মাথায় ও মুখে আঘাত করে। এতে মতির মাথা ফেটে যায় এবং মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়।

পরে যুবলীগ নেতা মতিকে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ খবর মতি পক্ষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তার সহযোগীরা আ. হান্নান শেখ ও ইসমাইলের বাড়িতে হামলা চালায়।

সেই সঙ্গে বাসার আসবাবপত্র ও জানালার কাচ ভাঙচুর করে তারা। এ সময় ১০-১২টি দোকান-পাট ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

Advertisement

সংঘর্ষে কাউন্সিলর মতিউর রহমান, রাজ্জাক, ফারুক, সোহলে, মনির ও সোহেল মিয়াসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মান্নান, সুমন ও ওমর ফারুককে আটক করে পুলিশ।

৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিল ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার শাখার সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মন্ডল বলেন, রাজ্জাক, হান্নান শেখ ও ইসমাইল তারা সবাই যুবলীগ নেতা মতির সমর্থক, তারা আমার সমর্থক নয়। তাদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় মতির সমর্থকরা আমার এক সমর্থককে মারধর করেছে ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার কার্যালয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।

কাউন্সিলর মতির একান্ত সহযোগী আশরাফ উদ্দিন বলেন, আ. হান্নান শেখের সঙ্গে আ. রাজ্জাকের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধ মীমাংসার জন্য কাউন্সিলর মতি কয়েকবার বৈঠক করেছেন। ঘটনার দিন কাউন্সিলর মতিকে হান্নান শেখ গালিগালাজ করে। পরে মতি ঘটনাস্থলে গেলে তারা মতিকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি শাহিন শাহ পারভেজ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ব্যবহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলর সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। জমি নিয়ে বিরোধ থাকলে আদালতের মাধ্যমে তা মীমাংসা করতে হবে। এ নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

হোসেন চিশতী সিপলু/এএম/জেআইএম