প্রবাস

কাতারে গিয়ে সফল প্রবাসী বিল্লাল

মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ সম্ভাবনাময় দেশ কাতার। পারস্য উপসাগরের ছোট মরুভূমির দেশ। মাথাপিছু আয়ে বর্তমানে পৃথিবীর সবচাইতে ধনী। দেশটিতে কর্মরত রয়েছেন পাঁচ লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি। 

Advertisement

বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শ্রমবাজার কাতার। নির্মাণ শ্রমিক, গৃহকর্মী, রেস্তোরাঁ, মৎস্যজীবী, ইমামতি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে সুনামের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন বাংলাদেশিরা। দেশটিতে সফল ব্যক্তিদের একজন বিল্লাল খান। ১২টি কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, ৪টি রেস্টুরেন্ট, ৩টি সুপার মার্কেট, ২টি সেলুন, ২টি মাংসের দোকান রয়েছে তার।

জানা গেছে, বিল্লাল খান একটা সময় কনস্ট্রাকশন, মেশন, কারপেন্টার, স্টিল ফিক্সার, টাইলসসহ বিভিন্ন নির্মাণ শ্রমিকের পেশায় কাজ করেছেন। তবে কিছুতেই কিছু করতে পারেনি। অবস্থার পরিবর্তন তো দূরের কথা বাড়িতে ঠিকমতো টাকাও পাঠাতে পারেনি।

কাতার প্রবাসী মোহাম্মদ বিল্লাল খান (৪৫) বাবার নাম আমির হোসেন খান। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের কোরাল তলি গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে দুই ছেলে এক মেয়ে নিয়ে সপরিবারে কাতারেই আছেন। ১২টি কনস্ট্রাকশন কোম্পানি, ৪টি রেস্টুরেন্ট, ৩টি সুপার মার্কেট, ২টি সেলুন, ২টি মাংসের দোকানের মালিক বিল্লাল খান। মোবারক আলীর রেস্টুরন্ট, দুই বন্ধুর স্কাই রেস্টুরেন্টে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়।

Advertisement

পরিবারের অভাব মোচনে স্বপ্ন নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে শ্রমিক ভিসায় আসেন ১৯৯৬ সালে। তবে কাতারে শ্রমিক ভিসায় এসে বিল্লাল খানের স্বপ্ন সুখের হয়নি। ১২ বছর বিভিন্ন পেশায় কাজ করলেও দেশে পরিবারের কাছে তেমন কোনো টাকা পাঠাতে পারেননি। 

জানা গেছে, ভেদরগঞ্জ উপজেলার কোরাল তলি গ্রামের মানুষকেও কাতারে এনে স্বাবলম্বী করেছেন তিনি। ভাই, শালা, ভাতিজা, ভাগ্নেসহ বিল্লাল খান পরিবারেরই ২০০ সদস্য বর্তমানে কাতারে রয়েছেন। 

বর্তমানে ভারত, নেপাল, মিসর, বাংলাদেশেরসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১ হাজার শ্রমিক বিল্লাল খানের কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন। এ ছাড়া তিনি গ্রামেও করেছেন বিশাল বাড়ি। মসজিদসহ নানা ক্ষেত্রে তার অন্যতম অবদান রয়েছে।

বিল্লাল খান বলেন, ‘রেমিটেন্স দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা অনেক এগিয়ে গেছে। দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী শ্রমিকরা। সফলতা অর্জন করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়, আর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে নিরলস পরিশ্রম করতে হয়, কাতারে বাংলাদেশিদের ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য পরিশ্রম করতে হবে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘কাতারে অর্থ অপচয় না করে কাজকেই প্রাধান্য দিতে হবে। মনে রাখতে হবে আমরা এখানে অর্থ উপার্জন করতে এসেছি। প্রবাসীদের এই সাফল্য ও অর্জন বাংলাদেশের মিডিয়াতে ভালো করে তুলে ধরা দরকার। যাতে করে কাতার ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীরা উৎসাহী হয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে। 

কাতার বাংলাদেশ কমিউনিটিতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী হিসেবে বেশ পরিচিত মুখ বিল্লাল খান। তিনি কাতার বাংলাদেশ কমিউনিটি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে সুযোগ পেলে কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করার আশা প্রকাশ করেন বিল্লাল খান।

এমআরএম/এমএস