একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের মহাজোট সমর্থিত নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সংসদ সদস্য পদের গেজেট ও শপথ গ্রহণ স্থগিত চেয়ে করা রিট শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) দিন ঠিক করেছেন আদালত। রিটকারী আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
Advertisement
তিনি জানান, বুধবার শুনানি করতে গেলে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
তিনি আরও জানান, রিট আবেদনটি শুনানির জন্য আজ আদালতে উপস্থাপন করার পর শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করেন আদালত। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের ফলাফলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। একই সঙ্গে এই আসনে নির্বাচিত এমপি রাশেদ খান মেননের শপথ ও এর গেজেটের স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে রিটে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ এই রিট করেন (রিট নম্বর-২/২০১৯)। তিনি এ আসনে লাঙ্গল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাসহ ৭ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। বাকি ছয়জন হলেন- জাতীয় সংসদের স্পিকার, আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক সচিব, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, ঢাকা বিভাগীয় রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচিত এমপি রাশেদ খান মেনন, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব।
রিটে রাশেদ খান মেননকে বিজয়ী করে ঢাকা-৮ আসনের ফলাফল ঘোষণা করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে বিজয়ী বলে গেজেট প্রকাশ ও তার শপথ গ্রহণ স্থগিত রাখার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, নির্বাচনে রাশেদ খান মেননের লোকেরা নিজেরাই সিল মেরেছেন। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেননি। আমি বারবার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেয়ার পরও কমিশন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা সংবিধানের ৬৬ ধারার লঙ্ঘন।
Advertisement
তিনি বলেন, রাশেদ খান মেনন লাভজনক পদে থেকে নির্বাচন করেছেন, যা আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) ২০ ধারার লঙ্ঘন। তার নির্বাচনী পোস্টারে আওয়ামী লীগ সভাপতির ছবি ব্যবহার করা হয, যা আচরণবিধি-২০০৮ আইনের লঙ্ঘন।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনে মহাজোট প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বিজয়ী হন। তিনি এক লাখ ৩৯ হাজার ৫৩৮ ভোট পান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস পান ৩৮ হাজার ৭১৭ ভোট।
এ আসনে ১১০ কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল দুই লাখ ৬৪ হাজার ৮৯৩ জন। আসনটিতে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আবু নোমান মোহাম্মাদ জিয়াউল হক মজুমদার (ইসলামী ঐক্যজোট), আবুল কালাম আজাদ (প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল), আব্দুস সামাদ সুজন (ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট), এস এম সরওয়ার (ইসলামী ফ্রন্ট), আবুল কাশেম (ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ), ইউনুছ আলী আকন্দ (জাতীয় পার্টি-জাপা), ছাবের আহাম্মদ (ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি), জাকির হোসেন (গণফ্রন্ট), নজরুল ইসলাম লিটন (জাকের পার্টি), শম্পা বসু (সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ), সুমি আক্তার শিল্পী (ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি), হাসিনা হোসেন (মুসলিম লীগ)।
এফএইচ/এমএমজেড/এমএস