প্রবাস

চ্যালেঞ্জ নিয়ে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের নতুন বছর শুরু

প্রতিনিয়তই সংগ্রাম করে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে হচ্ছে গোল্ডেন বয়দের। বিপুল প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ নিয়েই নতুন বছরের যাত্রা শুরু হলো মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধাদের। জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর একটি অংশ সমস্যার ভারে ক্লান্ত। তারপরও কাল পরিক্রমায় পুরনো বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরের নতুন আশায় স্বপ্ন দেখছেন তারা।

Advertisement

নতুন বছরের শুরুতে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশিকর্মীদের মূল বেতন থেকে ২০ শতাংশ কেটে রাখার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে। গেলো বছরের ১৫ ডিসেম্বর দেশের ব্যবসায়ী মালিকদের এ প্রস্তাবটি দিয়েছেন দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম. কুলাসেগারান।

তিনি বলেন, এটি বাস্তবায়ন হলে মালিক ও শ্রমিক উভয়পক্ষের জন্যই লাভজনক হবে। বিদেশি কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সময় সঞ্চিত বেতনের অংশ ফেরত দেয়া হবে। ফলে মালিকের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতাও কমে আসবে।

তবে এটি বাস্তবায়ন হলে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগকর্তাদের ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়ার আশংকা করছে ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারারস (এফএমএম)। সেই সমস্যাগুলো মোকাবেলায় প্রস্তাবটি বোঝার জন্য আরো বিস্তারিত জানানোর আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

Advertisement

এফএমএম-এর সভাপতি দাতুক সোহা থিয়ান লাই বলছেন, শ্রমিকদের অর্থ সঞ্চয়, পালিয়ে যাওয়া থেকে সুরক্ষা, স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক বিনিময় হ্রাসের মতো কিছু ইতিবাচক ফলাফল হতে পারে। তবে আরও কিছু দিক বিবেচনা করা উচিত।

১৮ ডিসেম্বর তিনি বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন, কর্মীদের সমবিধিবদ্ধ অবদান হিসেবে বিদেশি কর্মী নিয়োগের আইনে সংশোধন করা উচিত। বেতনের ২০ শতাংশ কাটার প্রস্তাবনাটি উচ্চমাত্রার হতে পারে কিনা। কারণ, বিদেশিকর্মীরা নিজ দেশে ঋণ পরিশোধের জন্য প্রতিশ্রুতি বদ্ধ থাকে।

থিয়ান লাই এ ব্যাপারে আরো বলেন, কর্তন করা অর্থ ব্যাংকের সঞ্চয় হিসাবে সুদ আছে কিনা সে সম্পর্কেও সরকারকে মেকানিজম এবং মানদণ্ড বিবেচনা করতে হবে। কোনো পালিয়ে যাওয়া শ্রমিকের সঞ্চয় বাজেয়াপ্ত করার বৈধতা এবং মানবাধিকার দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টির ওপরও নজর দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে বিদেশিকর্মীদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ কাটার এ প্রস্তাবনা বিবেচনার জন্য মন্ত্রিসভায় জমা দেয়ার আগে একটি পর্যালোচনা কমিটির সভা হওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারারস (এফএমএম)।

Advertisement

দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ বিদেশি কর্মীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে বছরজুড়ে ছিল আলোচনা। ২০১৬ সালে শুরু হওয়া বিদেশি অবৈধকর্মীদের রি-হিয়ারিংয়ের আওতায় গেলো বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছিলেন বৈধ হওয়ার জন্য। এর মধ্যে ২ লাখেরও বেশি কর্মী ভিসা পেয়েছেন এবং নিবন্ধিত প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার শ্রমিকের ভিসাসহ বৈধতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে দেশটির অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

এ ছাড়া নাম ও বয়স জটিলতার কারণে কমপক্ষে ৫৫ হাজার কর্মী ভিসা পাননি। তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। এসব কর্মীর জটিলতা নিরসনের সুযোগ পাবেন নাকি দেশে ফিরতে হবে তা ছিল আলোচনায়। শেষ পর্যন্ত তাদের আর ভিসা হলো না অভিবাসন বিভাগ সাফ জানিয়েছে তাদের দেশে ফিরত যেতে হবে।

এদিকে, অবৈধ প্রবাসীদের নির্ধারিত সময়ে যারা রেজিস্ট্রেশন করে নিবন্ধনের আওতায় আসতে পারেননি তারা এখনও রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিপুল সংখ্যক কর্মী বৈধ হওয়ার জন্য কোম্পানি মারফত এবং কোম্পানি ছাড়া কয়েকটি এজেন্টের কাছে টাকা পয়সা ও পাসপোর্ট দেয়ার পরেও তারা বৈধ হতে পারেননি। এসব কোম্পানি ও এজেন্ট শনাক্ত করে আইনের আওয়তায় আনতে এবং মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে বসবাসের অপরাধে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ ৪৫ হাজার ৪৯৯ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে বলে অভিবাসন বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র আরো জানায় গেলো বছর মোট ১২ হাজারেরও বেশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ১ লাখ ৫৮ হাজার অভিবাসীর নথিপত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে তাদের আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি রয়েছে তা জানা যায়নি।

দেশটিতে অবৈধ থাকা বিদেশি কর্মীদের বৈধ হওয়ার বিষয়টি দীর্ঘ আড়াই বছর ছিল আলোচনায়। অবৈধ কর্মীদের কাজ দেয়ায় এবং বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১ হাজার ৩২৩ জন নিয়োগকর্তাকে আটক করা হয়।

অভিবাসন বিভাগের বিদায়ী মহাপরিচালক মোস্তাফার আলি বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও দেশটিতে অবৈধদের বসবাস ঠেকাতে বিভাগটি কাজ করছে এবং দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার তাগিদে কোনো পক্ষের সঙ্গে আপস করা হবে না।

গেলো বছরে ৭২ হাজার ৩৬১ জনকে পাসপোর্ট ও ভিসা জটিলতার কারণে অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর ৮ (৩) ধারায় পাঁচ বছরের জন্য মালয়েশিয়া প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, জনশক্তি রফতানির অন্যতম বাজার মালয়েশিয়া। ২০০৯ সালে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর সরকারিভাবে কর্মী পাঠাতে দুই দেশ চুক্তি করে। এরপর মালয়েশিয়া পাঁচ বছরে পাঁচ লাখ লোক নেয়ার আশ্বাস দিলেও আড়াই বছরে আট হাজার কর্মী যায়।

তবে সাগরপথে অবৈধভাবে বিপুলসংখ্যক লোক মালয়েশিয়া যায়। ২০১৫ সালের মে মাসে থাইল্যান্ডে এবং পরে মালয়েশিয়ায় গণকবর পাওয়ার পর বিশ্বজুড়ে হইচই হলে আবারও বাংলাদেশ থেকে বেসরকারিভাবে কর্মী নেয়ার প্রস্তাব দেয় মালয়েশিয়া।

২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মধ্যে জি-টু-জি প্লাস সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মালয়েশিয়া বলে, এই মুহূর্তে তারা আর কর্মী নেবে না। ফলে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। এরপর ১৭ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে। ওই বৈঠকেই আবার কর্মী পাঠানোর এই প্রক্রিয়া শুরু হলে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ হলেও মাহাথির সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই দুর্নীতির দায়ে বাংলাদেশিকর্মী যাওয়া প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যায়।

গেলো বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল পাইপ লাইনে আটকে থাকা ২৫ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া আসার কিন্তু সে মেয়াদও শেষ হয়ে গেলো। পাইপলাইনে আটকে ২৫ হাজার কর্মীর ভাগ্যে নির্ধারণে কি নতুন বছরে আলোচনা হচ্ছে? এ প্রশ্ন ছুড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে মালয়েশিয়া সরকার কি পদ্ধতিতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ করবে সে বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও করেছে দু দেশের সরকার। শুধু আলোচনাই হয়েছে। আলোর মুখ দেখেনি এখনও।

গবেষণায় দেখা যায়, অন্যান্য দেশের শ্রমিকের তুলনায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের পারিশ্রমিক খুবই কম। কিন্ত বাংলাদেশি শ্রমিকদের অভিবাসন ব্যয় সবচেয়ে বেশি এবং অনেক ক্ষেত্রে তারা বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। যেমন, অল্প পারিশ্রমিক, কারণ ছাড়া নোটিশে চাকরি থেকে প্রত্যাহার, সময়মতো বেতন না দেয়া, পরিমিত খাবার না দেয়া, স্বল্পস্থানে অনেক শ্রমিকের আবাস ও জোরপূর্বক চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া।

বর্তমানে অভিবাসী শ্রমিকদের কম বেতন একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ। এমতাবস্থায় অভিবাসন খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিকরণে শ্রমিকের স্বার্থ ও অধিকারে সরকার, নিয়োগকর্তা, হাইকমিশন, এনজিও ও অভিবাসন শ্রমিকের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন অভিবাসীরা।

মালয়েশিয়া প্রবাসী আজিজ উদ্দিন বলেন, একজন অভিবাসী ইচ্ছে করে অবৈধ হয় না। দালালচক্র ইচ্ছে করে তাকে অবৈধ করে। বৈধ করে দেয়ার নামে একজন শ্রমিকের কাছ থেকে পাসপোর্ট ও আট থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। তখন এই শ্রমিকের আর কিছু করার থাকে না। উদাহরণস্বরূপ আমি নিজেই। ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় ফেরারি হিসেবে কাজ করি। ১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মালয়েশিয়ান একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করেছি।

আজিজ বলেন, আমাদের বাংলাদেশি শ্রমিকরা যদি দালালের কাছে না গিয়ে দূতাবাসের পরামর্শে ভালো কোম্পানিতে বৈধতা নিতো তা হলে তাদের সমস্যা সৃষ্টি হতো না। অথচ শ্রমিকরা মালয়েশিয়া আসার আগে তাদের পরিবারের সদস্যদের বা আত্মীয়দের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করে।

একটি গবেষণায় জানা গেছে, যে প্রায় ৩৫.৪ শতাংশ শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ঋণ নেয়, ১৮.৭ শতাংশ টাকা ধারক থেকে ঋণ নেয়, স্থানীয় ব্যাংক থেকে ৭.২ শতাংশ, ভূমি বন্ধক রেখে ২.৬ শতাংশ এবং বিদেশি ব্যাংক থেকে ০.৩ শতাংশ ঋণ নেয়।

মালয়েশিয়ায় অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন শাহ আলম হাওলাদার। তিনি বলেন, সরকার শ্রম মাইগ্রেশন খরচ সস্তায় সীমাবদ্ধতার মধ্যে আনতে, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে, এবং অভিবাসন সমস্যা এবং পুনর্গঠন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

একটি জরিপে দেখা গেছে, ২১৭ সালে দারিদ্র্যের হার ১৬.৫১ শতাংশ ছিল, ২০১৪ সালে এটি ১৯.৭০ শতাংশ ছিল, যা প্রতি বছর ১ শতাংশ হ্রাস পায়। কিন্তু দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে বিদেশি অভিবাসীরা উভয় অভ্যন্তরীণ ও অস্থায়ী পরিবারের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে।

বিদেশি অভিবাসীদের মধ্যে, দারিদ্র্যের হার ৯.৬০ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের মধ্যে এটি ২৮.০৮ শতাংশ এবং অ-অভিবাসীদের জন্য এটি ১৭.৫২ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে, ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অভিবাসীদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৪ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের মধ্যে ১২.৬৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, কিন্তু বিদেশি অভিবাসীদের ক্ষেত্রে এটি ৭.১১ শতাংশ কমিয়েছে।

বর্তমানে বিদেশি অভিবাসীদের গড় মাসিক আয় ৩২ হাজার ৮১৫ টাকা, যখন গড় মাইগ্রেশন খরচ প্রায় দুই লাখ ৭৬ হাজার টাকা। পুরুষ অভিবাসীদের গড় খরচ তিন লাখ ৪২ হাজার টাকা, মহিলা অভিবাসীদের জন্য এর গড় ৮৮ হাজার ৮৭৭ টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন মাইগ্রেশন, ঋণ এবং সুদের খরচ, এই দৃশ্যকল্প জন্য দায়ী।

মালয়া ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক মো. খালেদ শুকরান বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মাইগ্রেশন খরচ বিশ্বের সর্বোচ্চ এবং বেতন পরিসীমা সর্বনিম্ন। অভিবাসন খরচ কমাতে পদক্ষেপ গ্রহণ না করা পর্যন্ত অভিবাসী পরিবারের সুবিধা হবে না। বাংলাদেশি অভিবাসীরা খুব কম টাকা উপার্জন করে এবং তাদের বেশিরভাগ উপার্জন পরিবারের জীবনযাত্রার ব্যয় বহন করতে ব্যয় করে। শুধু তাই নয় দেশের অর্থনীতির চাকাকে তারা সচল রেখেছে। তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখভালের দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়।

২০১৯ সাল বৈধ কর্মীদের জন্য হতে পারে অপার সম্ভাবনাময় একটি বছর আর অবৈধদের হতে পারে দুশ্চিন্তায় কপাল কুচকে যাওয়ার বছর। ২০১৮ সালকে নিয়ে করা হিসাবের যোগ-বিয়োগের বাস্তব ফল যাই হউক তবে এটি সত্য যে, অবৈধদের জন্য মালয়েশিয়ায় বসবাসের সুযোগ দিনে দিনে কেবল সংকুচিত হবে।

এমআরএম/এমএস