বেগুনি রঙয়ের স্কুল ইউনিফর্ম পড়া শিশুটির বয়স আনুমানিক নয় দশ বছর। স্কুলের প্রধান ফটকের সামনের একটি টেবিলের সামনে ঝুঁকে নিজের ক্লাসের নতুন বই খুঁজছিল।
Advertisement
তার দেখাদেখি সমবয়সী আরও কয়েকজন ভিড় জমায় সেখানে। তাদের সবারই দৃষ্টি নতুন মলাটের বইয়ের পাতার দিকে।
টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে মাঝবয়সী এক ব্যক্তি তাদের উদ্দেশ্য করে বলছিলেন, ‘আজ কাউকেই বই দেয়া হবে না। নতুন বছরের প্রথমদিন শিক্ষামন্ত্রী স্যার এসেছেন, তাই অল্প সংখ্যক বই ছাত্রীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। আগামীকাল ক্লাসে সবার হাতে বই তুলে দেয়া হবে।’
এ কথা শুনে ক্ষুদে এক শিক্ষার্থী বলে ওঠে, ‘আঙ্কেল, নতুন বইগুলো একটু ছুঁয়ে দেখি। এরপর স্তূপ করে রাখা বই থেকে নিজ ক্লাসের বই খুঁজে পেয়ে আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে তাদের চোখমুখ।
Advertisement
আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ১২টায় আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। ইংরেজি নতুন বছর ২০১৯ সালের প্রথম দিনে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আসা বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী হাতে নতুন বই পেয়েছে। তবে বই না পেলেও নতুন বইয়ের মলাটে হাত ছুঁইয়ে সবাই আনন্দিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রাজধানীর ভিকারুন নিসা নুন স্কুলসহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ে নতুন বই বিতরণ করা হলেও কোনো কোনো স্কুলে আংশিক বই বিতরণ করা হবে। নতুন বই যারা হাতে পেয়েছে তাদের আনন্দ যেন একটু বেশিই। তারা বার বার নতুন বইয়ের পাতা উল্টে দেখেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে বছরের প্রথমদিনে বই হাতে অভিভাবকদের হাত ধরে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন শিক্ষার্থীরা।
জোসনা বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন, ভিকারুন নিসা নুন স্কুলে পড়ুয়া তার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে বাসায় ফিরেই নতুন বই পড়তে বসে যায়। স্কুল থেকে ফেরার পথে লেখার জন্য খাতাও কিনে আনে। আনোয়ার হোসেন নামে আরেক অভিভাবক বলেন, বার্ষিক পরীক্ষার পর বেশ কিছুদিন আরামেই কেটেছে। আজ থেকে আবার স্কুলে দৌড়ঝাঁপ শুরু হলো।
Advertisement
উল্লেখ্য আজ (মঙ্গলবার) দেশব্যাপী প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, ইবতেদায়ি, দাখিল, দাখিল ভোকেশনাল, এসএসসি ভোকেশনাল, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ চার কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮২ পাঠ্যবই বিতরণ করা হচ্ছে।
এমইউ/এমএমজেড/এমকেএইচ