বঙ্গবন্ধু আমাদের একটা পরিচয়পত্র দিয়েছেন : এবিএম খায়রুল হক

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে একটি পরিচয়পত্র দিয়েছেন। আমরা যে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে পারি, বাঙালি একটি জাতি, তা পাকিস্তান আমলেই বাঙালি পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের জাতিয় পরিচয়টা দিতে পারাটাই তার সবচেয়ে বড় অবদান।শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট মিলনায়তনে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাতের ‘বঙ্গবন্ধু-সমতা-সাম্রাজ্যবাদ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মুক্তবুদ্ধি প্রকাশনা কর্তৃক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।বঙ্গবন্ধু-সমতা-সাম্রাজ্যবাদ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আশরাফউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) কেএম শফিউল্লাহ বীর উত্তম, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ও অধ্যাপক মাহফুজা খানম প্রমুখ।এবিএম খায়রুল হক বলেন, বইটার মাধ্যমে আবুল বারাকাত আমাদের আবার স্মরণ করে দিলেন যে পাকিস্তান আমলে বাংলাদেশ কী ছিল। আর এখন আমাদের কী বাংলাদেশ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের কোথায় নিয়ে যেতে চেয়েছেন। বইটা হচ্ছে একটি সময় উপযোগী বই। আবুল বারকাতের বঙ্গবন্ধু-সমতা-সাম্রাজ্যবাদ বইটি বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির সূচনা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে বলে তিনি ড্যান মজিনাকে দেয়া একটা ডায়ালগের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি একটি কথায় ড্যান মজিনাকে বলেছি আপনাদের স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম ৪৩ বছর পর আপনারা কোথায় ছিলেন, আর আজকে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়।তিনি আরো বলেন, আমরা প্রায়ই বলি সংবিধান আমাদের এই অধিকার দিয়েছে, সেই অধিকার দিয়েছে, কথাটা আংশিক সত্য, পুরোপুরি সত্য নয়। কারণ অধিকার নিয়েই প্রতিটি মানুষ জন্মগ্রহণ করে, সংবিধান অধিকার দেয়ার কেউ নয়।এসময় আফসোস করে তিনি বলেন, বিসিএসে প্রথম হয়েছেন এমন একজন ব্যক্তি একটি জাতীয় দৈনিকে ভালো ফলাফলের জন্য ২৫টি টিপস দিয়েছেন। এর মধ্যে ১০ নম্বর টিপসটি ছিল এমন ‘বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক কম করে পড়লেও হবে’। আমাদের দেশপ্রেম কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে দেখেন। বিসিএস-পিএসসি কর্মকর্তাদেরকে অবশ্যই আমাদের ৩০ লাখ শহীদের ত্যাগের বিষয়ে জানতে হবে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। কারণ তারাই পরবর্তী বাংলাদেশের শাসক বা সেবক বলেন, সবই।দেশে জনগণ অনুযায়ী বিচারপতি কম বলে খায়রুল হক বলেন, আমাদের ১১০০ জন বিচারক আছেন। সবাই তাদের সমালোচনা করতে পারেন কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, ৩০ লাখ মামলার বোঝা নিয়েই কিন্তু তারা কাজ করছেন। আমেরিকাতে প্রতি ২০ হাজার মানুষের জন্যে একজন বিচারক থাকলেও আমাদের দেশে প্রতি এক লাখ মানুষের জন্যে একজন বিচারক। এসব সমস্যা নিয়েই তারা কাজ করছেন।মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান একটি দর্শন। তার মৃত্যু হলে সোনার বাংলা আর বাস্তবায়িত হয় না। এবং সে স্বপ্ন অনেক দূরে চলে যায়।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এমিরেটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে মেরেছে তারাই আজকে দেশের সমস্ত সম্পত্তির মালিক। ওই এ শতাংশ মানুষ আজকে পুরো দেশকে করায়ত্ত করে রেখেছে। বঙ্গবন্ধু থাকলে আজকে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়াতো বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।এমএইচ/বিএ