ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে হিসেব কষলে আর মাত্র পাঁচ দিন পর শুরু বিপিএল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া-শব্দ নেই। উত্তাপ-উত্তেজনার লেশমাত্রও নেই। হাতে গোনা ক'দিন পর যে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অন্যতম সাড়া জাগানো ফ্র্যাঞ্চাইজি আসর মাঠে গড়াবে রাজধানী ঢাকা, পূন্যভুমি সিলেট ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে- তা বোঝার কোনো উপায়ই নেই।
Advertisement
কারণ সবার জানা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণেই বিপিএলের বাজার এখনো জমেনি। গত প্রায় এক মাস গোটা দেশ মেতে ছিল সংসদ নির্বাচন নিয়ে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উত্তাপ ও ডামাডোলে ঢাকা পড়েছিল বিপিএলের সমস্ত আকর্ষণ।
আজ (রোববার) বিকেল চারটায় শেষ হয়েছে নির্বাচন। হয়ত আগামীকালকের মধ্যেই সব আসনের ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষনা হয়ে যাবে। নির্বাচন শেষ হবার পর থেকেই ক্রিকেট অনুরাগীদের অনেকেই বিপিএল নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন।
তাদের কথা, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে ২০১৮ সালের অক্টোবর-নভেম্বর থেকে পিছিয়ে পরের বছর ২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হলেও শেষ অবধি বিপিএল উত্তেজনা ছড়াবে অনেক। কারণ দেরিতে শুরু হলেও এবার এক ঝাঁক বিশ্ব তারকা অংশ নেবেন এ আসরে।
Advertisement
বিপিএলের সব আসরে আলো ছড়ানো ক্রিস গেইল তো আছেনই। তার সাথে সীমিত ওভারের ফরম্যাটে সাড়া জাড়ানো এক ঝাঁক ক্রিকেটার অংশ নেবেন এবারের বিপিএলে। সেই তালিকায় রয়েছেন এ বি ডি ভিলিয়ার্স, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিনের মত বিশ্ব তারকারা। এদের সাথে এভিন লুইস, অ্যালেক্স হেলস এবং লাসিথ মালিঙ্গাও আছেন। এর বাইরে অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনের কথাও শোনা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্লেয়ার্স ড্রাফট এর পরে আগের বারের খেলে যাওয়া তারকাদের বাইরে নতুন করে প্রতি দলে একজন করে বিদেশী ক্রিকেটার দলে ভেড়ানোর সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলা নিশ্চিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের।
এর আগে বাকি ছয় দলের আপত্তির মুখে বিসিবি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল স্মিথকে খেলার অনুমতি দেয়নি। পরে অবশ্য সব দল বোর্ডের আগে নেয়া সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। আর তাই এখন সাত দলই একজন করে নতুন বিদেশী ক্রিকেটার দলভুক্তির সুযোগ পাচ্ছে।
এই নিয়মে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হতে যাচ্ছেন অসি তারকা স্টিভেন স্মিথ। আইরিশ ওপেনার পল স্টার্লিংকে নিয়েছে খুলনা টাইটান্স। জানা গেছে পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজকে দলে ভেড়াতে চাইছে রাজশাহী কিংস।
Advertisement
এদিকে সাত ফ্র্যাঞ্চাইজির চারজন স্বত্বাধিকারী সরাসরি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রধান অধিপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল, রাজশাহী কিংসের প্রধান স্বত্বাধিকারী শাহরিয়ার আলম, ঢাকা ডায়নামাইটসের ফ্র্যাঞ্চাইজি বেক্সিমকোর অন্যতম অধিপতি সালমান এফ রহমান এবং খুলনা টাইটান্সের ফ্র্যাঞ্চাইজি জেমকন গ্রুপের অন্যতম শীর্ষ কর্তা কাজী নাবিল আহমেদ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
খুব স্বাভাবিকভাবে তাদের গোটা পরিবার ও আশপাশের সবাই নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। এ কারণেই ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও আসলে বিপিএল নিয়ে সেভাবে সময় দিতে পারেননি। সাত প্রতিযোগী দলের ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে, আসলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হবার পর তারা সবাই প্রস্তুতি কার্যক্রম শুরুর কথা ভাবছেন।
যতদুর জানা গিয়েছে, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২ জানুয়ারী সব দলের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে। ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচন পরবর্তী সময় সহিংসতা দেখা না দিলে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই দলগুলোর বিদেশী ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফরা আসতে শুরু করবেন।
পরে ২ থেকে ৩ জানুয়ারীর ভিতর সব দলের অনুশীলনও শুরু হয়ে যাবে। যদিও আগের বার গড়পড়তা ১০-১২ দিন আগেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল সব দলের। এমন সময় শেরে বাংলার পাশের বিসিবি একাডেমি মাঠ আর ইনডোরে চলতো নিবিড় অনুশীলন। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন তথা সংগত কারণে সেই প্রস্তুতি শুরু হবে তিন দিন আগে।
এআরবি/এসএএস/পিআর