একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ঢাকা-৮ আসনের কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী ও সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে।
Advertisement
সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল থেকে কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে নির্বাচনী সামগ্রী বিতরণ শুরু করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আলী আযম।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসন। এই আসনে ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৬৪ হাজার ৬৬৪ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৫২ হাজার ৯১ জন পুরুষ এবং এক লাখ ১২ হাজার ৫৭৩ জন নারী। এসব ভোটাররা ১১০টি কেন্দ্র থেকে ভোট দেবেন।
মন্ত্রিপাড়া, সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মতিঝিল ব্যাংকপাড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৮ আসনে এবার ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
Advertisement
তবে মূল লড়াই হবে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের মধ্যে।
এদের মধ্যে রাশেদ খান মেনন আসনটি থেকে হ্যাটট্রিক (টানা তিনবার) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আশায় নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। আর মির্জা আব্বাস প্রথমবারের মতো আসটি থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার আশায় ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন।
প্রচার-প্রচারণায় মহাজোট মনোনীত প্রার্থী রাশেদ খান মেনন বিএনপির প্রার্থী আব্বাসের থেকে বহুগুণে এগিয়ে রয়েছেন। গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকেই প্রায় প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে গণসংযোগ চালিয়েছেন মেনন। অপরদিকে আব্বাস মাত্র তিনদিন প্রকাশ্যে মাঠে নেমে গণসংযোগ করেছেন।
প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান থাকলেও দু’জনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি ভোটের লড়াই হবে বলে মনে করছেন সংসদীয় আসনটির ভোটাররা।
Advertisement
মেনন ও আব্বাসের বাইরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবুল কাশেম (হাতপাখা), জাতীয় পার্টির মো. ইউনুস আলী আকন্দ (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. ছাবের আহাম্মদ (কাজী ছাব্বীর) (আম) এবং বাসদের শম্পা বসুর (মই) কিছু পোস্টার চোখে পড়েছে ঢাকা-৮ আসনের কিছু এলাকায়।
ঢাকা-৮ আসনের আগের সংসদ সদস্যরা :
স্বাধীন বাংলাদেশে ঢাকা-৮ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কে এম শামসুল হুদা। আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী ১৯৭৩ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপির মো. আব্দুল হাই। এরপর ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ হারুন আর রশিদ ও ১৯৮৮ সালে আনোয়ার হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১২ বছর পর ১৯৯১ সালে আবারও ঢাকা-৮ আসনের দখল ফিরে পায় বিএনপি। ওই নির্বাচনে আসনটি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মীর শওকত আলী। আর ২৩ বছর পর ১৯৯৬ সালে ঢাকা-৮ আসনের দখল ফিরে পায় আওয়ামী লীগ। আসনটি থেকে নির্বাচিত হন পুরান ঢাকার জনপ্রিয় নেতা হাজী মোহাম্মদ সেলিম। তবে পাঁচ বছর পর ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পার্থীকে পরাজিত করে বিএনপির নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট গঠন করে ঢাকা-৮ আসন থেকে বিএনপি মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নামেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং প্রায় ৩৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেই থেকে টানা ১০ বছর ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন তিনি।
এমএএস/এমবিআর/জেআইএম