জীবনমানের দুরবস্থা এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে বিপ্লবের ডাক দিয়ে তিউনিশিয়ায় সাংবাদিক আব্দেরাজাক জরগুই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন। তার মৃত্যুতে কাসেরাইন প্রদেশে দু’দিন ধরে চলছে তীব্র আন্দোলন, যা ছড়িয়ে পড়ছে পুরো দেশজুড়ে।
Advertisement
উত্তর আফ্রিকার এ দেশটির বিভিন্ন শহরে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে বিক্ষোভকারীদের। সাংবাদিক আব্দেরাজাক জরগুই গত সোমবার গায়ে আগুন দেয়ার আগে অনলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি বেকারত্ব, দারিদ্র্য ও দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোপ প্রকাশ করেন।
ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘কাসেরাইনের সন্তানরা অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছেন। তাদের জন্য আজ আমি একটি বিপ্লবের সূচনা করছি। আমি নিজের গায়ে আগুন দিচ্ছি।’
আগুন দিয়ে আত্মাহুতি দেয়ার পর সোমবার রাতেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ যুবকরা গাড়ির টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা বন্ধ করে প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুঁড়লে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় অন্তত ৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার জগরুইয়ের শেষকৃত্যের পর রাজধানী তিউনিস থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরের শহরটিতে আবার সংঘর্ষ শুরুর হয়। কাসেরাইনের প্রধান সড়কে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব তিউনিশিয়ান জার্নালিস্টস বলছে, ‘সামাজিক দুরবস্থার প্রতিবাদে এবং হতাশায়’ জরগুই মৃত্যুবরণ করেছেন। ইউনিয়ন ধর্মঘটে যাওয়ার পরিকল্পনাও করছে।
জরগুইয়ের এই আত্মাহুতি মোহামেদ বোয়াজিজের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। ৮ বছর আগে এই সবজি বিক্রেতা শোষণ, বেকারত্ব ও দুর্নীতির প্রতিবাদে একইভাবে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। বোয়াজিজের মৃত্যুতে তিউনিশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আরব বসন্তের সূত্রপাত হয়। তিউনিশিয়ায় দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক জাইন এল আবেদিন বেন আলীর পতন ঘটে।
তবে স্বৈরতন্ত্রের পতনের পর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেও অর্থনীতির নিম্ন প্রবৃদ্ধি, দুর্নীতি, নিম্ন জীবনমান এবং আল কায়দা ও ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় উপস্থিতি তিউনিশিয়াকে এখনো জর্জরিত করে রেখেছে। সূত্র : ডয়েচে ভেলে
Advertisement
আরএস/আরআইপি