নির্বাচনের যে ট্রেনে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত, এবারে তাতে উঠতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নিয়ে অনেক কিছুই হারাতে হয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটকে। যদিও বৈধতার সংকট প্রশ্নে আওয়ামী লীগকেও গত পাঁচ বছরে সমালোচনা সইতে হয়েছে।
Advertisement
এবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের চাপ ছিল সরকার এবং সরকারবিরোধী উভয় পক্ষের জন্যই। শুরুতে আয়োজনও ছিল তাই। নির্বাচন সুষ্ঠু করার তাগিদেই সংলাপের আয়োজন। সংলাপ ব্যর্থ হলেও আপাতত নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে, তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অংশগ্রহণমূলক হলেও নির্বাচন আদৌ অবাধ হবে কি-না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
নির্বাচনী মাঠে একতরফাভাবে এগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। প্রচার-প্রচারণায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারছে না। নেতৃত্বের প্রশ্নে সংকটে থাকা বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও শেষাবধি নামতে পারছে না দলটি। সরকারি দলের নেতাকর্মী এবং পুলিশ প্রশাসন মিলে বিরোধীপক্ষকে মাঠ ছাড়া করছে, এমন অভিযোগ সর্বত্রই। শহর কী গ্রাম, কোথাও প্রচারে নামতে পারছে না ধানের শীষ প্রতীকের কর্মীরা। জোট নেতারা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে আসছে শুরু থেকে।
ঘণ্টা ধরে সময় ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনের। প্রতীক নেই, প্রচার নেই বিএনপি জোটের। মামলা, গ্রেফতারে কোণঠাসা জোটটি। তাহলে এমন অসমান মাঠে কী করবে ঐক্যফ্রন্ট- মঙ্গলবার জানতে চাওয়া হয় জোটের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের কাছে।
Advertisement
তিনি বলেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের আচরণ অপ্রত্যাশিত। দিন যাচ্ছে, পুলিশ আরও মারমুখী হচ্ছে। সেনাবাহিনী নামলে পুলিশ গ্রেফতার বন্ধ করবে বলে আশা করেছিলাম। গ্রেফতার আরও বাড়ছে। ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা বাড়িতেই থাকতে পারছেন না।
ড. কামাল বলেন, রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের জন্য আমরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করছি। আমরা শেষ দেখতে চাই। নীরবতাও এক ধরনের প্রতিবাদ। ভোটের দিন গণজোয়ার সৃষ্টি হবে বলে মনে করি। ওইদিন সব অন্যায়ের জবাব দেয়া হবে।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মহসিন মন্টু বলেন, অত্যাচারের সব সীমা অতিক্রম করেছে সরকার। গতকাল প্রচারে মানুষের ঢল নেমেছিল। পুলিশের সামনেই আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করা হলো। আজকে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে এসে আমার প্রধান এজেন্টের বাড়িতে হামলা করল সরকারদলীয় কর্মীরা। অবাক হয়েছি। এ অবস্থায় কেউ মাঠে থাকতে পারে না।
মন্টু বলেন, আমরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে নির্বাচনে অবস্থান করছি। সরকার চাইছে আমরা নির্বাচন থেকে সরে যাই। তা হবে না। আমরা শেষ দিন পর্যন্ত থাকব। আমরা কোনো সংঘাতে জড়াইনি। কর্মীদের প্রতিরোধ করার কথাও বলিনি। প্রতিরোধ করলেই রক্তের গঙ্গা বয়ে যাবে।
Advertisement
আমরা রক্তপাত চাই না। ভোটের দিন পর্যন্ত নীরব থাকব। মানুষ দেখুক সরকারের স্বৈরনীতি। আমরা এখন মাঠে নামলে সরকার আরও মারমুখী হবে। তাতে নির্বাচনের দিন মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসতে চাইবে না। পরিস্থিতি ঠিক রেখে আমরা ভোটের দিন কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা বাড়াতে চাই।
একই প্রসঙ্গে মতামত ব্যক্ত করেন ঢাকা-৯ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস। তিনি বলেন, প্রতিদিন আমার প্রচার মিছিলে হামলা করা হচ্ছে। কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুলিশের সামনেই হামলার ঘটনা ঘটছে। পুলিশ হামলাকারীদের সহায়তা করছে। আমরা আর অভিযোগও করছি না। আমরা চাই ভোটাররা কেন্দ্রে এসে জবাব দিক।
এএসএস/এমআরএম/এমএস