সিঁড়ির এমাথা থেকে ওমাথা হাঁটছে ফজলু। ভঙ্গিটা পায়চারির না, সে হাঁটছে হনহন করে। যেন গন্তব্য দূরে অনেক, সিঁড়ির অন্যমাথায় গিয়ে নিচে নেমে যাবে। কিন্তু তা সে করলো না, আবার হন হন করে ফিরতে লাগলো। কিছু ভুল করে ফেলে গেলে ফিরতেই পারে কিন্তু এ মাথায় এসে আবার উল্টো ঘুরে ও মাথার দিকে হাঁটতে শুরু করলে স্বপন নিশ্চিত হয় যে ফজলু পায়চারি করছে। সে তখন মনোযোগ দিয়ে ফজলুকে দেখে। কপাল কুঁচকে আছে। হন হন করে হাঁটলেও ওর দিকে তাকালেই বুঝা যায় ঘাড়ে বেশ ওজনদার কিছু বহন করছে সে, ফলে মাথাটা ঝুঁকে আছে। ফজলুকে যারা চেনে, বেশিরভাগ মানুষই চেনে না অবশ্য। অল্প চেনে যারা তারা ভাববে যে ফজলু গুঁজো, মেয়েরা হয়তো আরেকটু এগিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে ভাববে আহা ছেলেটা সুন্দরই তো এই বয়সেই এমন গুঁজা! মেয়েরা এসব খেয়াল করে খুব, সে দেখেছে। তবে স্বপনের মতো যে দু’চারজন ফজলুকে একটু বেশি চেনে তারাই শুধু ফজলুর এই ত্রিভঙ্গ মূর্তির গুঢ় কারণটি জানে।স্বপন মনে মনে বলে, ‘শালা ক্যারেক্টার একটা! একশ’ জনের থাকা খাওয়ার বোঝা মাথায় নিয়া বেকা হয়া ঘুরতাছে কিন্তু কিছুই কইবো না, আবার জিগাইলেও হ্যাঁ হ্যাঁ না না কইরা কথা শেষ করে। শালা আজিব!’ ১.জায়গাটির নাম নাসিরনগর। ইন্ডিয়ার বর্ডার ঘেঁষা এই অঞ্চলটি হাওড় দিয়ে ঘেরা। বর্ষায় তারা এসেছিল দোতালা একটি নৌকায় করে রেকি করতে। ছোট একটা ইউনিট এসেছিল যারা পরিচালকের সাথে সবসময় কাজ করে। পনের ষোল জন ছিল তারা, নৌকায় খাওয়া নৌকায় ঘুম। খুব আনন্দে কেটেছে সময়। তখন শীতকালে কাজ করার জন্য এই জায়গাটি পছন্দ করে গিয়েছিল। কারণ ছবিটিতে পানির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে পাশাপাশি স্থাপনাহীন বিস্তীর্ণ মাটিও দরকার। স্থানীয় লোকজনের কাছে জানা গিয়েছিল শীতকালে হাওড়ের পানি শুকালে ঠিক তেমনি গাছপালাহীন, বসতিহীন খোলা মাঠ পাওয়া যাবে। জীর্ণ কিছু চালাঘর আছে গ্রামে সেগুলোও দরকার হবে। তাই শ্যুটিং এর জন্য এই জায়গাটি পছন্দ করে গিয়েছিল। না পেলে অবশ্য নিজেদেরকেই তৈরি করতে হতো। এরকম তো করেই তারা, কিন্তু পেয়ে যখন গেছে এটাও প্লাস পয়েন্ট। ছবির কাজে গ্রামে গ্রামে ঘুরে স্বপন দেখেছে এখন গ্রামে খুব জীর্ণ পুরোনো বাড়ি নজরেই পড়ে না। গ্রামের মানুষ গরীব বলা হলেও স্বপন লক্ষ্য করেছে আগের চেয়ে অনেক কমেছে তাদের অভাব। অবশ্য এমনও হতে পারে যে হতদরিদ্র মানুষেরা ভিটেমাটিচ্যুত হয়ে শহরের বস্তিগুলিতে ঠাঁই নিয়েছে। আবার সম্পন্ন যারা তাদেরও ছেলেরা হয়তো বিদেশে থাকে অথবা ঢাকায় নিদেনপক্ষে সদর উপজেলা বা জেলা শহরে। গ্রামের ভিটা পাহারা দেয়ার জন্য গরীব কৃষকদেরকে ডেকে নিয়েছে তারা।বড় ইউনিট নিয়ে শ্যুটিংয়ে আসার সময় আর জলপথ নয়, তিনটি বড় বাস, একটি মাইক্রো, দুইটি বড় পিকআপের বিশাল বহর নিয়ে স্থলপথ ধরে এসেছে। বেশ একটা অ্যাডভেঞ্চারের মত ছিল সেই যাত্রা। সব গাড়ি একসঙ্গে রাখতে হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া পার হবার পর থেকেই। এখানে নাকি রাতে জলদস্যুরা ওঁৎ পেতে থাকে, ডাকাতি হয় খুব। পুলিশ জানিয়ে দিয়েছিল নাসিরনগরে ঢোকার রাস্তাটি পুলিশ প্রোটেকশান ছাড়া না যেতে। তাই সব গাড়ি একসাথে পার হতে হবে। রাত দশটার দিকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আর জমাট কুয়াশায় টর্চ জ্বালিয়ে একটি সিএসজি নিয়ে দু’জন পুলিশ পথে দাঁড়িয়ে ছিল অনেকটা তাদের নিজেদের জীবন বিপন্ন করে। ডাকাতের সাথে লড়ার কতটুকু সামর্থ্য তাদের আছে এ নিয়ে গাড়িতে দীর্ঘ আলোচনা করেছে ওরা।এবারের ইউনিটে তারা এসেছে একশ’জন। সেই একশ জনের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পাঁচ জনকে। অর্থ্যাৎ প্রতি ঊনিশজনের দেখাশুনা করবে একজন। কিন্তু স্বপনসহ বাকি তিনজনও তাদের ভাগের ঊনিশজনকে নিয়ে ফজলুর ঘাড়ে চেপেছে। আর এই নিরানব্বই জনকে মাথায় নিয়ে ফজলু বেকা হয়ে আছে। কাল ছিল দ্বিতীয় রাত। বাজার, রান্না ছাড়াও সবার অভাব, অভিযোগ, আবদার, অনুযোগ সবই গভীর রাত পর্যন্ত শুনতে আর সমাধান করতে হয়েছে তাকে। ফজলু শোয়ার জন্য শেষরাতের দিকে ঘরে ঢুকলে একবার এবং কাকভোরে নাস্তার ব্যবস্থা করার জন্য বের হলে আরেকবার ঘুম ভাঙে স্বপনের এবং যারপরনাই মেজাজ খারাপ হয়। এর একটা বিহিত আজ সে করবেই ঠিক করেছে। ঘুম ভাল না হলে সারাদিন মেজাজ খিচড়ে থাকে তার। স্বপন কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ফজলু কিছু বলে কিনা। কিন্তু ফজলু আবার উল্টোদিকে ছুটতে শুরু করলে সে আরেকবার আজিব পাবলিক বলে তার রুমের দিকে রওনা হয়। ফজলুর সাথে রুম শেয়ার করে পোষাবে না ভাবে সে। কি করে সরা যায় তার একটা প্ল্যান বানানো দরকার। ফজলুর জন্য যত করুণাই হোক নিজের সুখ শান্তি বিসর্জন দেয়া সম্ভব না। আর ফজলুর সাথে বেশিদিন কাজ করলে তাকেও আবুল বলবে সবাই। স্মার্টনেস হচ্ছে নিজের কাজ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া আর কৌশলে নাম নেয়া। একটু নিরিবিলি ভাবা দরকার ভেবে বাথরুমের দিকে এগোয় সে। কিন্তু এই সকালেও যথারীতি বাথরুম আটকানো। মানুষের তুলনায় বাথরুম কম আবার বাথরুম আর টয়লেট কমন তাই সকাল থেকে লাইন লেগে থাকে।২.‘ঐ মিঞা কার গোয়া মারার তাল করতাছো?’ স্বপন চমকে তাকায়। জ্যাকব, এই ছবির প্রধান অভিনেতা। মুখ খারাপ না করে একটা কথাও বলে না। নিজেই বলে খিস্তিতে শুরু খিস্তিতে শেষ, নাম মোর জ্যাক দরবেশ। স্বপন বা ইউনিটের অন্যান্যরা অভিনেতা অভিনেত্রীদেরকে বলে আইটেম এবং যতটা সম্ভব ওদের থেকে দূরে থাকে। কিন্তু জ্যাকবকে পছন্দ করে সে। মুখ যতই খারাপ করুক জ্যাকব মানুষ ভালো, অভিনয় আরো ভালো। সবার সাথে খাতির। ওর হঠাৎ মনে হয় জ্যাকদা’র কাছ থেকে বুদ্ধি নিলে কেমন হয়?আবার নিজের মনেই বলে, ‘জ্যাকদা’ মজা যেমন করে তেমন আবার সাম্যবাদীও, সে সাহায্য করার বদলে আবার ধাতানি দেয় কিনা সেইটাও ভাবা দরকার।’তার মনে হয় বুদ্ধিটা কৌশলে নেয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে। মজার গন্ধ পেলে জ্যাকব সাড়া দেবে নিশ্চিত সে। কিন্তু এই মুহূর্তে মজার কোনো পরিকল্পনা মাথায় আসছে না বলে সে বিব্রত বোধ করে।জ্যাকব আবার বলে কী মিঞা ভোমা মাইরা রইছ ক্যান? বলে আর দাঁড়ায় না হাঁটতে থাকে নিজের পথে।তখনই স্বপনের সম্বিত ফেরে। সে হুলুস্থুল করে ডাকে, ‘জ্যাকবদা’। দূরত্বের তুলনায় ডাকটি অস্বাভাবিক জোরে শোনায়।জ্যাকব বেশ অবাক হয়ে ঘাড় ফেরায়।স্বপন বলে কই যান?অষুধ আনতে যাই। তোমাগোর কোনো চিন্তা আছে আর্টিস্ট নিয়া? অষুধ পাই না কিচ্ছু না। সব বাল ছিড়ায় ব্যস্ত।স্বপন ঝট করে বলে, অষুধ আছে তো ফজলু ভাইয়ের কাছে। বলে একটু থতমত খায়, অষুধ আসলে ফজলুর কাছে না। অন্য একটি ছেলেকে ফার্ষ্ট এইড বক্সের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ছেলেটির উচিৎ ছিল এখানে এসেই সবাইকে জানিয়ে দেয়া যে তার কাছে অষুধের বাক্স। কো-অর্ডিনেটর হিসাবে স্বপনেরও খানিকটা দায়িত্ব আছে। কিন্তু ফজলুর না। ও কেন ফজলুর নাম বললো ভেবে পায় না! ফজলুর কথা ভাবছিল বলেই কি মুখ ফসকে ...জ্যাকবের মুখ কৌতুকে উদ্ভাসিত হয়। অষুধও ওই হালার কাছে? তোমরা হালায় এক গোয়ার আর কী কী ভরছো কও দেখি? হালায় দেখলাম বিড়বিড়াইতাছে, বলে হো হো করে হেসে ওঠে সে।কাছে ঘেষার এই সুযোগটিকে স্বপন ব্যবহার করতে চায়। হাসিতে যোগ দিয়ে আস্তে করে বলে দেখেন না সব কাজ একলা করতে চায়। এইজন্যই তো গিট্টু লাগে। ওরে একটা শিক্ষা দেওন দরকার।জ্যাকব বলে, তাই নাকি ও সব একলা করতে চায়? আমারতো মনে হয় তোমরা ওর ঘাড়ে সব চাপায়া ফাঁকি মারো মিঞা।স্বপন জানে ফজলু কাউকে নালিশ করবে না। তাছাড়া ওর সাথে কারো তেমন অন্তরঙ্গতাও নেই যে কথায় কথায় কথা বের হয়ে যাবে। সুতরাং সে যাই বলুক না কেন প্রকাশ হবার কোনো সম্ভাবনা নেই জেনেই সে ইউনিটের বিভিন্ন মিসম্যানেজমেন্টের ফিরিস্তি দিতে দিতে সব দোষ ফজলুর ঘাড়ে চাপায় আর জ্যাকবকে কনভিন্স করে ফজলুকে একটি উচিৎ শিক্ষা দিতে।জ্যাকব অবাক হয়ে মাথা দোলায়, শালা এমন চুতিয়া বুঝা যায় না তো! দাঁড়াও দেখামু মজা।দাদা আমারে আগে অর রুম থিকা বাইর করার ব্যবস্থা করেন যন্ত্রণায় বাঁচিনা।২.ফজলু ঘরে ঢুকে স্বপনকে শুয়ে থাকতে দেখে একটু ইতস্তত করে বলে, ‘কাজগুলা বুঝায়ে দিতে চাইতেছিলাম সময়তো নাই।’স্বপন মনে মনে বলে, ‘কেয়ামত আসতেছে একটু অপেক্ষা করো, মুখে বলে একটু সময় দেন ফজলু ভাই শরীরটা ভালো না, পেটটা কেমন ঘুটমুট করতেছে।’ফজলু তাড়াতাড়ি ঠিকাছে ঠিকাছে বলে স্বপনের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে ব্যস্ত হয়। তার অনর্গল প্রশ্নের উত্তর বানাতে বানাতে স্বপন বিরক্ত হয়ে ওঠে। মনে মনে বলে, ‘শালা একটা মিথ্যার জন্য কতগুলি মিথ্যা বলাইতেছে। এতো প্রশ্ন করো ক্যান মামু, তুমি কি ডাক্তার?’ মুখে বলে, ‘আরে ফজলু ভাই একশ’ জনের দায়িত্ব আপনের মাথায় একজন নিয়া পড়লে কেমনে হবে। আপনে যান আমি একটু রেস্ট নিলে ঠিক হয়া যাব।’ফজলু প্রতিটি কথা দু’বার করে বলে, ‘না না বলো বলো ডাক্তার ডাকি ডাক্তার।’স্বপন চিবিয়ে চিবিয়ে বলে, ‘এরকম হয় আমার। ডাক্তারের অষুধ লগেই থাকে। খাইছি।’ মনে মনে বলে’ ‘আল্লারে এই মিছা শেষ মিছা হউক।’সে জ্যাকবের অপেক্ষা করে। জ্যাকব আসবে বলে কোথায় গেল। কিন্তু অপেক্ষা করা ছাড়াও উপায় নেই। জ্যাকব গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা। ওকে ডেকে আনা তো যাবে না। ওর অস্থির লাগে, আজ নাইট শিফটের শ্যুটিং, পুরো রাত হয়তো লেগে যাবে। ভোরে একটু আরাম মতো ঘুমাতে চায় সে। এখন যদি একটা ব্যবস্থা না করা যায় তো দুই দিনের ধাক্কা। ও উঠে বসে। নাস্তার পর কাজ কর্ম শুরু হয়ে গেলে কিছুই করার থাকবে না। জ্যাকব নিজে থেকে কিছু না করলে করার কিছু নেই কিন্তু ও তো নিশ্চুপ বসে থাকতেও পারে না। সমস্যা তো ওর। সে অন্যপথ ভাবতে ভাবতে ঘর ছেড়ে বের হয়ে আসে।দরজার সামনেই উঠানে দাঁড়িয়ে আছে উজরা। এই ছবির দুই নায়িকার একজন। থিয়েটার করার কারণে স্বপনের সাথে খানিকটা হৃদ্যতা আছে। উজরা স্বপনকে দেখে রহস্যময় একটা হাসি দেয়। ওর দিকে তাকিয়ে স্বপনের মনে হয় কিছু একটা কথা তার ভেতরে তৈরি হয়েছে কিন্তু বলবে কী বলবে না দ্বিধায় আছে। কথাগুলি তার ঠোঁটে ঝুলছে তারে ঝুলিয়ে রাখা কাপড়ের মতো। ক্লিপ দিয়ে আটকানো নাকি একটু জোর হাওয়া দিলে বের হয়ে আসবে তা বুঝার চেষ্টা করতে করতে স্বপনও হেসে এগোয়। তারপর বলে, তুমি তো বিশাল ক্ষমতাময়ী।উজরা বলে এতোদিনে বুঝলা সেইটা? তো ক্যামনে বুঝলা?এই যে পাহারা বসানো বাগান থিকা কালকে রাত্রে ফল চুরি করছো শুনলাম?ও এইটা আমার ছোট ক্ষমতা। আমার ক্ষমতা এর চে’ অনেক বেশি।স্বপনের সঙ্গে সঙ্গে মনে হয় উজরাকে বলবে কিনা ওকে উদ্ধার করতে, কিন্তু পরক্ষণেই ভাবে একটু আগেই জ্যাকবকে বলেছে সেইমসাইড হয়ে যাবে না তো!উজরা বলে রুবেলটা এমন ভীতু, সব ফল আমি পাড়লাম, হাতে জায়গা হয় না তো ওরে বললাম নিতে, ভয়ে নেয়ই না। এরপরে আমার ছুড়িটা দিলাম কয়েকটা আনারস কাটার জন্য, আনারস তো কাটতে পারলোই না হাত কাঁপতে কাঁপতে ছুড়ি ঝোঁপের মধ্যে কই যে ফেললো আর পাইলামই না।স্বপন শব্দ করে হাসে। সিনেমায় এই রুবেল ভাই হইল বীর নায়ক আর তুমি ম্যান্দামারা নায়িকা। স্বপন খুব সাবধানে আস্তে করে বলে আমারে একটু সাহায্য করো না ক্ষমতাময়ী?উজরাও উদগ্রীব হয়ে ওঠে, কী হইছে দোস্তো?ভেজিটেবলের লগে থাকতে থাকতে সব্জি হয়া যাইতেছি দোস্তো। বারাই কেমনে কওতো? একটা পথ দেখাও।উজরা সঙ্গে সঙ্গে ভেজিটেবল হিসেবে ফজলুকে শনাক্ত করে হেসে ফেলে, ‘কঠিন সমস্যা বটে। তো সব্জি না হয়া কী হইতে চাও তুমি? যা বলবা তাই বানায়ে দেব’ বলে তুড়ি বাজায়।স্বপন হেসে উঠতে গিয়েও হঠাৎ থেমে বিস্ফারিত চোখে সামনের দিকে তাকিয়ে স্থির হয়ে যায়। স্বপনের দৃষ্টি অনুসরণ করে উজরাও পেছন ফেরে।ইউনিটের প্রায় সবাই দল বেঁধে স্বপনের দিকেই আসছে, রাশভারী পরিচালক পর্যন্ত আছেন এবং তিনিই সবার সামনে! উজরাকে দেখেই উনি বললেন, ‘ও স্বপনকে দেখতে এসেছো নাকি?’ তারপর স্বপনের দিকে তাকিয়ে উদ্বিগ্ন কন্ঠে বললেন, ‘কী হয়েছে তোমার? এখন কেমন শরীর? ফজলু তো তোমার চিন্তায় অস্থির, ডাক্তার সাহেবকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এসেছে। কিছুইতো জানতাম না আমরা!’গভীর আপনত্বে সবাই স্বপনকে ঘিরে দাঁড়ায়। কাজের এতো চাপের মধ্যে ফজলু স্বপনের কথা মনে রেখেছে আর এতসব দায়িত্ব পালন করেছে দেখে স্বপন অবাক হয়ে যায়। কিন্তু এরচেয়েও বেশি হতবাক হয় ইউনিটে ফজলুর এতোটা মূল্যায়ন আছে দেখে। এমনটা সে ভাবতেই পারেনি! কত মূর্খ সে! ফজলুকে কত তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছে ভেবে অস্বস্তি হয় ওর। স্বপন লক্ষ করে জ্যাকবও আছে এই দলে এবং স্থির তাকিয়ে আছে স্বপনের দিকে। একমাত্র জ্যাকবই হয়তো বুঝতে পারছে সব। সে এখন স্বপনকে কী কী গালি দিচ্ছে ভাবতে গিয়ে ঘামতে থাকে।এইচআর/আরআইপি
Advertisement