ভোটের আগে আগামী ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে যে জনসভার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল তাতে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বিএনপিতে।
Advertisement
বিষয়টি নিয়ে সোমবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু তারা পুলিশের কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাননি।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমরা ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছি, তিনি আমাদের বলেছেন জনসভার ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে আপত্তি রয়েছে। আর কারো বেলায় আপত্তি নেই শুধু আমাদের বেলায় আপত্তি! আমাদের বলা হয়েছে, ওখানে আরও কারা যেন জনসভা ডেকেছে।’
ঢালী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের নেতারা পরবর্তী করণীয় সর্ম্পকে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
Advertisement
দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনী গণসংযোগে এতদিন পিছিয়ে থাকলেও ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়াদী উদ্যানে জনসভার মাধ্যমে তা কাটিয়ে ওঠার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া এই জনসভার মাধ্যমে শোডাউন করে দেশবাসীকে নির্বাচনী শেষ বার্তা দেয়া হবে বিএনপি জোটের পক্ষ থেকে। জনসভা সফল করতে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরাও প্রস্তুত রয়েছে।
জনসভার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার বলেন, ‘জনগণ প্রস্তুত রয়েছে ২৪ঘণ্টার নোটিশেও জনসভা সফল করা সম্ভব। কিন্তু সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে। গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘণ করছে। ব্যালটের মাধ্যমে জনগণ এর সমুচিত জবাব দেবে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২৭ তারিখের জনসভার অনুমতি নিয়ে পুলিশ টালবাহানা করছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, পুলিশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে জনসভার অনুমতি দেয়নি।
Advertisement
এর আগে জনসভার জন্য গত ২৩ ডিসেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির নজরুল ইসলাম খান প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর চিঠি দেন। তাতে বলা হয়, নির্বাচনী প্রচারের শেষ পর্যায়ে রাজধানীসহ সব আসনের উল্লেখযোগ্য স্থানে জনসভা করা প্রচার কার্যক্রমের অনিবার্য অংশ হয়ে ওঠেছে। সে অনুযায়ী আগামী ২৭ ডিসেম্বর ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে ডিএমপি কমিশনারের কাছে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু শনিবার রাতে তার পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা রুহুল করিব রিজভী আহমেদকে ফোনে জানানো হয়, ২৪ ডিসেম্বরের পর ঢাকায় কোনো জনসভার অনুমতি দেয়া হবে না। পুলিশের এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনী আইন আরপিওর সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং প্রচারের আইননানুগ অধিকার থেকে বঞ্চিত করার শামিল। চিঠিতে ২৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে ডিএমপি কমিশনারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এই চিঠি দিয়ে নজরুল ইসলাম খান তখন বলেন, ২৭ ডিসেম্বরের সমাবেশের বিষয়ে সিইসিও একমত হয়েছেন। বলেছেন, সমাবেশ করতে আইনগত কোনো বাধা নেই। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
কেএইচ/এমএমজেড/এমএস