রাজনীতি

হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট

চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পদত্যাগপত্র জমা না নেয়াসহ নানা জটিলতায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজনের প্রার্থিতা বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি সংসদীয় আসনে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও বাতিল বা স্থগিত হওয়া আসনের অধিকাংশগুলোতেই প্রার্থী নেই। ফলে এসব আসনে প্রার্থীর হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

Advertisement

নির্বাচন কমিশনের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রার্থিতা পেলেও সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে আটকে গেছে বিএনপির জামালপুর-৪ আসনে ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের মোসলেম উদ্দিন, ময়মমনসিংহ-৮ আসনের মাহমুদ হোসেন, ঝিনাইদহ-২ আসনের আব্দুল মজিদ, জয়পুরহাট-১ আসনের ফজলুর রহমান, রাজশাহী-৬ আসনের আবু সাইদ চাঁদ, ঢাকা-২০ আসনের তমিজ উদ্দিন, মানিকগঞ্জ-৩ আসনের আফরোজা খান রিতা, বগুড়া-৩ আসনের আব্দুল মোহিত তালুকদার, বগুড়া-৭ আসনের মোরশেদ মিলটন এবং ঢাকা-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাকের প্রার্থিতা।

এসব আসনে প্রার্থীর হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গণফোরামের কার্যকারী সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, মানিকগঞ্জ, সিলেট, জামালপুরে আমাদের বিকল্প প্রার্থী রয়েছে। তাদের সমর্থন দেয়ার বিষয়টি প্রথমে বিএনপি নির্ধারণ করবে। পাশাপাশি আমরাও আমাদের উদীয়মান সূর্যের জন্য প্রার্থীর জন্য সমর্থন চাইব।

ঐক্যফ্রন্টের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-৩ আসনে বিএনপির আবদুল মহিত তালুকদারের আসনে আপেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন ও ডাব প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মজিদের দু'জনের একজনকে সমর্থন দেয়ার কথা ভাবছে তারা।

Advertisement

এছাড়া জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপির ফজলুর রহমানের একমাত্র বিকল্প স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাব প্রতীকের আলেয়া বেগম, রাজশাহী-৬ আসনে আবু সাইদ চাঁদের জায়গায় জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের প্রার্থী ইকবাল হোসেনের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে বিএনপি। মানিকগঞ্জ-৩ আসনে ধানের শীষের আফরোজা খান রিতার বিকল্প হিসাবে ইতোমধ্যে সমর্থন পেয়েছেন গণফোরামের উদীয়মান সূর্যের প্রার্থী মফিজুল ইসলাম খান কামাল।

বগুড়া-৩ আসনে ধানের শীষের আবদুল মহিত তালুকদারের জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন (আপেল) এবং আবদুল মজিদের (ডাব) মধ্যে কোনো একজনকে সমর্থন দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

তবে ঢাকা-২০ আসনে ধানের শীষের তমিজউদ্দিনের জায়গায় বিকল্প কোনো প্রার্থী নেই। এই আসনে নৌকার বেনজির আহমেদ, জাতীয় পার্টির খান মহামদ ইসরাফিল, হাতপাখার আব্দুল মান্নান ও জেএসডির এম এ মান্নান রয়েছেন। এই আসনটিতে আ স ম আব্দুর রবের জেএসডির তারা মার্কার প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার কথা ভাবছে ঐক্যফ্রন্ট।

যেসব আসনে ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের সমর্থনযোগ্য প্রার্থী নেই সেগুলো নিয়ে হিসাব নিকেশ করতে হিমশিম খেলেও গণমাধ্যমের কাছে নিজেদের উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করছেন না নেতারা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু জাগো নিউজকে বলেন, ‘যেসব আসনে প্রার্থীশূন্য রয়েছে সেখানে আমাদের নিবন্ধিত দলের বিকল্প প্রার্থী রয়েছে। তাই এটা নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট উদ্বিগ্ন নয়।’

Advertisement

ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামালপুর-৪ আসনের বিএনপির নেতা ফরিদুল কবির তালুকদার শামীমের সঙ্গে নির্বাচন করছেন নৌকা, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা। তবে আসনটিতে বিএনপির সমর্থন দেয়ার মতো কেউ নেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে বিএনপির মুসলিম উদ্দিনের জায়গায় কোনো প্রার্থী দেয়ার মতো নেই বিএনপির। এই আসনের অন্য দুই প্রার্থী হচ্ছেন- আওয়ামী লীগের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জসিম।

ঝিনাইদহ-২ আসনে বিএনপির আবদুল মজিদের জায়গায় অন্য কাউকে দেয়ার মতো নেই বিএনপির। এই আসনে নৌকা ছাড়াও হাতপাখা, জাকের পার্টির গোলাপফুল ও সমাজতান্ত্রিক দল -বাসদের মই প্রতীকের প্রার্থী রয়েছেন।

বগুরা-৭ আসনে ধানের শীষের মোরশেদ মিলটনের জায়গায় কাউকে সমর্থন দেয়ার নেই বিএনপির। এই আসনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির আলতাফ আলী।

ঢাকা-১ আসনে খোন্দকার আবু আশফাকের জায়গায় কাউকে সমর্থন দেয়ার নেই বিএনপির। আসনটিতে আওয়ামী লীগের সালমান এফ রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী সালমা ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কামাল হোসেন, সিপিবির আবিদ খান, বিকল্প ধারার জালাল উদ্দিন, জাকের পার্টির সামসুদ্দিন আহমেদ ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সেকেন্দার হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে প্রার্থী শূন্যতার বিষয়ে আবারও আদালতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে বিএনপি। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘যেসব আসনে বিএনপির প্রার্থীশূণ্য সেগুলো নিয়ে বৃহস্পতিবার আমরা নির্বাচন কমিশনে যাই। আমরা কমিশনকে জানাই একটি আসনের প্রার্থী মারা গেলে যদি পুনঃতফসিল ঘোষণা করা যায় তাহলে সেখানে একটি বড় দলের প্রার্থী না থাকলেও পুনঃ তফসিল ঘোষণা করা যাবে। আমরা তাদেরকে বিষয়টি বিবেচনা করতে বলি, তাছাড়া আদালতে দরজা তো খোলা আছেই।’

এআর/আরএস/জেআইএম