তিন আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে খারিজ হওয়া রিটের আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলটি চেম্বারজজ আদালতে শুনানি হবে আজ।
Advertisement
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে খালেদা জিয়ার আবেদনের ওপর আজ সোমবার চেম্বারজজ আদালতে শুনানি হবে।
তিনি জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও হাইকোর্টে বিফল হয়ে ওই আদেশের বিরুদ্ধে রোববার (২৩ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন জমা দেয়া হয়।
প্রার্থিতা ফিরে পেতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হাইকোর্টে যে রিটটি দায়ের করেছিলেন গত ১৮ ডিসেম্বর তা খারিজ করেন হাইকোর্টের একক বেঞ্চ। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তখনই বলেছিলেন, তারা এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবেন।
Advertisement
দুটি দুর্নীতির মামলায় মোট ১৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। আগামী ৩০ ডিসেম্বর হতে যাওয়া সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তাকে ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে প্রার্থী করেছিল বিএনপি।
কিন্তু নভেম্বরের শেষে হাইকোর্টে এক মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপিলে ওই দণ্ড বাতিল বা স্থগিত হয়।
এরপর ২ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাইয়ে দুই বছরের বেশি সাজার কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্রই বাতিল করে দেয়া হয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেও বিফল হন। এরপর তারা রিট আবেদন নিয়ে যান হাইকোর্টে। তবে, সেখানেও রায় বিপক্ষে গেলে এবার ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলেন খালেদার আইনজীবীরা।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আপিলের শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত দেন।
Advertisement
শুনানিতে প্রার্থিতা বহালের পক্ষে মত দেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এর বিপক্ষে মত দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অপর তিন কমিশনার। পরে প্রার্থিতা বাতিল করা রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্ত ও নির্বাচন কমিশনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে গত ৯ ডিসেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তিনটি রিট দায়ের করা হয়।
রিট আবেদনের ওপর গত ১১ ডিসেম্বর দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দ্বিধাবিভক্ত এ আদেশ দেন। যার ফলে মামলাটির নথি প্রধান বিচারপতির কাছে যায়।
এরপর মামলাটি শুনতে বিচারপতি জে বি এম হাসানের একক বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু এই আদালতের খালেদা জিয়ার আইনজীবী শুনানি করতে অনাস্থা প্রকাশ করলে আদালত তা লিখিতভাবে আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
পরে গত ১৮ ডিসেম্বর সকালে খালেদা জিয়ার রিট আবেদনের ওপর হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চে অনাস্থা আবেদন দাখিল করেন খালেদার আইনজীবীরা। আদালত অনাস্থা আবেদন এবং রিট আবেদন দুটিই খারিজ করে দেন।
এফএইচ/জেডএ