বাংলাদেশের প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতা সুবর্ণা সেঁজুতি টুসির মীনালাপ আরেকটি পুরস্কার জিতেছে। এবার জিতেছে ১৭তম থার্ড আই এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভাল আয়োজনে। মীনালাপ এ উৎসবে স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবির প্রতিযোগিতায় জিতে নিয়েছে সেরা ছবির মর্যাদা।
Advertisement
উৎসবে বিভিন্ন দেশের মোট ২৪টি ছবির মধ্যে টুসির মীনালাপের ‘বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে আরও উচ্চতায়। মীনালাপ প্রথম পুরস্কার জিতেছে কাজাখস্তানে ১৪তম ইউরেশিয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। আয়োজনে স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে গ্র্যান্ড প্রিক্স জিতেছিল মীনালাপ।
এরপর তাজিকিস্তানের অষ্টম ডিডোর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ক্রিটিক চয়েস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিল মীনালাপ। শিলিগুঁড়ি আন্তর্জাতিক শর্ট অ্যান্ড ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভালেও সেরা ‘শর্ট ফিকশন অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছে।
‘মীনালাপ’একটি সামাজিক সম্পর্কের গল্প। ২৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মীনালাপ’চলচ্চিত্রটির গল্পটি আবর্তিত-বিবর্তিত হয়েছে এক বাঙালি দম্পতিকে ঘিরে। পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পুনে এসে তাদের যে সংকট, এটাই ছবির গল্প। মূলত বাংলায় উপস্থাপিত এই ছবির মূল দুই চরিত্র বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা পশ্চিম বাংলার কোনো একটা এলাকা থেকে পুনেতে আসে।
Advertisement
ওদের মুখে নদীয়ার ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া মারাঠি এবং হিন্দির অল্প বিস্তর ব্যবহার করা হয়েছে। ‘মীন’ মানে মাছ। মীন-আলাপ হলো মাছের আলাপ। মাছেরা ঠিক কথা বলে না, শব্দ সৃষ্টি করে। আবার ডিম দেয়ার সময় হলে মাছ স্বাদু পানিতে চলে আসে। ছবির বাঙালি নারীটিও সন্তান সম্ভাবনা, সেও অভিবাসী হয়েছে।
‘মীনালাপ’ চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণ করেছেন অর্চনা গাঙ্গরেকর। শব্দগ্রহণে স্বরূপ ভাত্রা, শিল্প নির্দেশনায় হিমাংশী পাটওয়াল এবং সম্পাদনায় ছিলেন ক্ষমা পাডলকর। চলচ্চিত্রটি ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার প্রযোজনায় নির্মিত। ‘মীনালাপ’ চলচ্চিত্রটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিতাস দত্ত, প্রমিত দত্ত, বিবেক কুমার এবং দেভাস দীক্ষিত।
বাংলাদেশের মেয়ে সুবর্ণা সেঁজুতি তার ‘মীনালাপ’ সম্পর্কে বলেছেন-‘মীনালাপের স্ক্রিপ্ট লিখেছি বাংলাদেশেই। ২০১১ সালে ভারতের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ায় (এফটিআইআই) ফিল্ম ডিরেকশন ও স্ক্রিপ্ট রাইটিংয়ে পড়তে আসি। কোর্স শেষের ডিপ্লোমা ফিল্ম ‘মীনালাপ’। ছবির প্রযোজকও এফটিআইআই।
আমি ছাড়া সব কলাকুশলীও ওখানকার। শুটিং হয়েছে পুনেতে। এখন পর্যন্ত ‘মীনালাপ’ জিতেছে ৪টি পুরস্কার। সুবর্ণা সেঁজুতি এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে টুসি নামেই পরিচিত। কাজ করেছেন মঞ্চ নাটকে। করেছেন সাংবাদিক হিসেবেও। অভিনয়, উপস্থাপনা আর গ্রন্থনার সঙ্গেও তার রয়েছে নিবিড় সর্ম্পক। বাংলাদেশে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করা টুসি নাটক ও চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্টও লিখেছেন।
Advertisement
ভারতে পুনে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া থেকে ফিল্ম ডিরেকশন ও স্ক্রিপ্ট রাইটিংয়ের ওপর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেছেন। সুবর্ণা সেঁজুতি এর আগে আরও কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন। ছবিগুলো হলো জাদু মিয়া (২০১১), পারাপার (২০১৪) ও পুকুরপার (২০১৮)।
এমআরএম/জেআইএম