নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সারাদেশে ঠাকুরগাঁও থেকে চট্টগ্রাম যেখানেই খবর পাচ্ছি, মানুষের মধ্যে একটা স্বতঃস্ফূর্ততা, এক রকমের ঢল। মানুষের মধ্যে দৃঢ়তা দেখা গেছে। মানুষ ভোট দিতে চায়। কিন্তু মানুষ যাতে ভোট দিতে না পারে সরকার ও তার দল আওয়ামী লীগ সবধরনের চেষ্টা করছে। জনগণের ভোট ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা ও সন্ত্রাস করছে। পরাজয়ের গ্লানি ঢাকার জন্যই তাদের জন্য এই চেষ্টা।
Advertisement
রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজের নির্বাচনী এলাকায় নানা অনিয়ম, প্রতিবাদ ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন ও চিঠি দেন। ফেরার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব তথ্য জানান তিনি।
মান্না বলেন, আমরা আগে বলতাম নির্বাচনীযুদ্ধ। এখন সত্যিকার অর্থে নির্বাচনের নামে যুদ্ধই হচ্ছে। সরকারপক্ষ তাই করছে। আমার এলাকায় গভীর রাতে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হামলা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে নির্বাচনী এজেন্ট দলীয় নেতাকর্মীদের। সারাদেশে একই অবস্থা বিরাজ করছে। নির্বাচন কমিশনকে কিছু বলেই কাজ হয় না। ঠুটো জগন্নাথের মতো শুধু কথা শোনে। আর বলে দেখছি। আজও যে অভিযোগ নিয়ে এসেছি। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন ডিসিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এর আগেও অনেক অভিযোগ করা হয়েছে। ফলাফল পাইনি। কোনো অভিযোগের ব্যাপারে অ্যাকশন আমরা দেখিনি।
তিনি বলেন, বহু প্রার্থী গ্রেফতার হয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়েও নানা নাটক করা হচ্ছে। সমগ্র বিশ্ব আজ উদ্বিগ্ন। আজ পত্রিকাতে দেখলাম জাতিসংঘ পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এটা একটা নারকীয় পরিবেশ, এটা কোনো নির্বাচনী পরিবেশ নয়। এইভাবে যদি নির্বাচন হয় তাহলে একপাক্ষিকভাবে জোর করে জেতার চেষ্টা করবে। তখন যদি জনগণ ফুসে ওঠে তাহলে এর পরিণতির জন্য এরাই দায়ী থাকবে যারা ক্ষমতায়।
Advertisement
আমি গত ৫/৬ দিন ধরে আমার নির্বাচনী এলাকায় বিভীষিকার রাজত্ব দেখছি। এর আগে দেখেনি। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে এসব দেখছি। আমাকে হাইওয়েতে প্রচারণা কর্মসূচি করতে দেয়া হয়নি বিরোধীপক্ষের কারণে। পুলিশকে আগে জানালেও আমাকেই সরে যেতে অনুরোধ করে পুলিশ।
এরপর থেকে যেখানেই যাচ্ছি সেখানে হয়রানি করা হচ্ছে, পোস্টার ছেড়া হচ্ছে, কর্মীদের মারধর, অফিসে হামলা করা হচ্ছে। নিরঙ্কুশ সমর্থন দেখে প্রতিপক্ষ এসব করছে। যেভাবে ককটেল ফাটিয়ে মামলা দিচ্ছে। আমার নির্বাচনী কমিটির প্রত্যেক সদস্যকে ধরে ধরে মামলা দেয়া হচ্ছে। কেউ জামিন পাচ্ছে না। পুলিশ এদের খুঁজছে। গত রাত সাড়ে ৩টায় ৪৪ জনের নামে মামলা নেয়া হয়েছে।
বাড়ির সামনে থেকে গ্রেফতার, ফসলিজমি থেকে গ্রেফতার, নির্বাচনী অফিস থেকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে যখন গেলাম সেখানে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে আমাদের আটকানোর চেষ্টা হলো, অনুমতি দেয়া হলেও আমাদের মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলো। তবুও আমরা ট্রাকে দাঁড়িয়ে এক হাতমাইকেই সমাবেশ করেছি। মানুষের ঢল নেমেছিল সেখানে।
চিঠিতে মাহমুদুর রহমান মান্না গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি, নতুন মামলা না দেয়া ও গ্রেফতার বন্ধ, বিনা বাধায় প্রচার ও পোস্টার ছেড়া বন্ধ নিশ্চিত করা এবং পুলিশ-রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনসহ পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন।
Advertisement
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মমিনুল ইসলাম, প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শাহে আলম, শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান, শামা ওবায়েদের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শোভন ইসলাম।
জেইউ/বিএ/আরআইপি