অর্থনীতি

পোশাক খাত দেখভালে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি

তৈরি পোশাক খাতে যেনো কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা না দেখা দেয় তা দেখভালের জন্য সাত সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে সরকার। বাণিজ্য সচিবের নেতৃত্বে এ কমিটিতে আরও রয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএয়ের সভাপতি এবং শিল্প পুলিশের মহাপরিচালক।

Advertisement

এ কমিটি তৈরি পোশাক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি মনিটর করবে। এ ছাড়া কমিটি প্রতি সাত দিন অন্তর অন্তর সভা করে পোশাক শিল্পের সার্বিক অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে অবহিত করবে।

বিণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় বাণিজ্য সচিব, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএয়ের সভাপতি, শিল্প পুলিশের মহাপরিচালক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

সভায় আরও ৬টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এগুলো হচ্ছে- সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা সংস্থা স্থানীয় প্রশাসন- পোশাক শিল্পের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে এবং পোশাক শিল্পের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বিজিএমইএ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তৈরি পোশাক খাতের কমপ্লায়েন্স পরিস্থিতির উন্নয়ন গঠিত রেমিডিয়েশন কর্ডিনেশনস সেল (আরসিসি) এর সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ এবং অসমাপ্ত রেডিয়েশন কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সাথে বহিরাগত কোনো লোক যাতে কর্ম পরিবেশ বিঘ্নিত করতে না পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা সংস্থা বা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারগণ সার্বক্ষণিক সচেষ্ট থাকবে। প্রত্যেক জেলার জন্য বিজিএমইএ ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সার্বিক পরিস্থিতি অবহিত করবে।

বিজিএমইএ পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি নিয়মিত পরিশোধের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এবং সাত শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য শিল্পাঞ্চল পুলিশের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে হবে পাশাপাশি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর তাদের নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

Advertisement

সভায় তৈরি পোশাক কারখানা সমূহের কর্ম পরিবেশ সম্পর্কে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদীর জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা ও গাজীপুরের পুলিশ সুপার সন্তোষজনক উল্লেখ করে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিষদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিজিএমইএ এর নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানান।

এ প্রসঙ্গে শিল্পাঞ্চল পুলিশের মহাপরিচালক বলেন যে পোশাক শিল্পের উৎপাদন অব্যাহত রাখাসহ এ শিল্পে সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ রক্ষায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। তিনি পোশাক কারখানা সমূহ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর কর্তৃক নিয়মিত পরিদর্শন এর উপর গুরুত্বারোপ করেন।

এ বিষয়ে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে তৈরি পোশাক কারখানাসমূহে শ্রম অধিদফতর শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও কম্প্লাইন্স প্রতিপালন নিশ্চিতকরণের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এ খাতে বর্তমানে সুন্দর কর্মপরিবেশ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ কারখানা মালিকদের পক্ষ হতে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা হবে মর্মে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সভাপতি আশ্বাস প্রদান করেন।

এ বিষয়ে মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮১ শতাংশ পোশাক খাত হতে অর্জিত হয়। আমাদের দেশের এ অর্জনকে সুরক্ষা প্রদান করা প্রয়োজন। রফতানি আয়ের গুরুত্বপূর্ণ এ সেক্টরে উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানান।

তিনি অভিমত প্রকাশ করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প পুলিশসহ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারগণ পোশাক শিল্পের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে একযোগে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এ কাজে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে বিজিএমইএ’র নেতৃবৃন্দকে সর্বাত্মক সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে প্রঅ্যাক্টিভলি কাজ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

এমইউএইচ/এমবিআর/এমএস