আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধানের শীষ মানে দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ। নৌকামার্কা মানে মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়ন। তাই আপনারা আবার নৌকায় ভোট দেবেন। আবার সরকার গঠন করতে পারলে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাব।
Advertisement
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি আরও উন্নত হবে। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমাদের লক্ষ্য। নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে আসি নাই। আমরা সরকার পরিচালনা করি মানুষের জন্য। বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। আজকের বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ রোলমডেল। বাংলাদেশের মানুষ সুষ্ঠুভাবে বাঁচবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাঙালি জাতি যেন ভিক্ষুকের জাতি না হয়, দেশকে সেভাবে গড়ার চেষ্টা করছি। আগামীতে দেশকে এমন জায়গায় নিয়ে যাব, যেন বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে সমীহ করে। বাংলাদেশ বললেই নাক সিটকানো, এটা যেন না থাকে।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ইয়ুথ ক্লাব মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জনসভা উপলক্ষে দুপুর ২টা থেকে দলের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন ইয়ুথ ক্লাব মাঠে। তারা প্রার্থীদের ব্যানার, প্লাকার্ড, পোস্টার বহন করেন। উৎসবমুখর পরিবেশে ব্যান্ডের বাদ্যের তালে তালে তারা জনসভায় যোগ দেন।
আপনারা আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জনগণের সেবা করার সুযোগ দিন, আমরা আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকব উল্লেখ করে এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা ইতঃপূর্বে টানা দুই বার নৌকামার্কায় ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই মানুষের জীবনের আয়-রোজগার বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ যারা চাকরি করেন তাদের বেতন বেড়েছে। যারা মজুর তাদের মজুরি বেড়েছে। এক একজন মজুর সারাদিন কাজ করে যে মজুরি পেত তাতে চাল কিনলে নুনের টাকা থাকত না। এখন একজন মজুর কাজ করলে ৫০০টাকা পায়, তিনচার কেজি চাল কিনে বাজার করেও তার হাতে টাকা থাকে।
Advertisement
সরকারপ্রধান বলেন, একসময় বাংলাদেশকে খরা, দুর্ভিক্ষ, দুর্যোগ, অভাবের দেশ বলা হতো। যারা বিদেশে যেতেন তাদের এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো। তবে সেই বদনাম আর নাই। আজকে আর কারও কাছে হাত পেতে আমাদের চলতে হয় না। বাংলাদেশ আজ ভিক্ষুকের দেশ না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে।
ঢাকার নাগরিক সুবিধা বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকায় বস্তির মধ্যে অনেক মানুষ অস্বাস্থকর পরিবেশে বসবাস করে। আমরা এমন ব্যববস্থা নিচ্ছি যাতে আর তারা এভাবে না থাকেন। ফ্ল্যাটে থাকবে তারা। স্বল্প আয় ও নিম্ন আয়ের মানুষরা যাতে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দেব। তারা ভাড়ার টাকায় ফ্লাট বাড়িতে থাকবেন। যে যেভাবে পারে ভাড়া দেবে। কেউ দিনের ভাড়া, কেউ সপ্তাহের ভাড়া আবার কেউ মাসেও ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকার নাগরিক সুবিধা বাড়াতে মেট্রোরেল হচ্ছে। অ্যালিভেটেড এক্সপ্রেস হবে। পাতাল ট্রেন করে দেব। এসব নিয়ে কাজ চলছে। গুলশান-বনানী থেকে শুরু করে সমগ্র ঢাকার উত্তরণ, বিশেষ করে যেসব ইউনিয়ন ছিল সেগুলোকে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিয়েছি। মানুষ যাতে নাগরিক সুবিধা পায় সেজন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।
জঙ্গিবাদ দমন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই গুলশানে যখন হলি আর্টিজানে হামলা হলো, সবাই ধারণা করেছিল এর কোনও ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। কিন্তু মাত্র ৮-৯ ঘণ্টায় আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এরপর থেকে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি।
Advertisement
ঢাকা-১৭ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠান (চিত্রনায়ক ফারুক), ১১ আসনের একেএম রহমতুল্লাহ, ১২ আসনের আসাদুজ্জামান খান কামাল, ১৩ আসনের সাদেক খান, ১৪ আসনের আসলামুল হক আসলাম, ১৫ আসনে কামাল আহমেদ মজুমদার, ১৬ আসনের ইলিয়াস মোল্লা, ১৮ আসনের সাহারা খাতুনকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সবার জন্য নৌকামার্কায় ভোট চান শেখ হাসিনা।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে জনসভায় দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোতেট সাহারা খাতুন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, দলটির যগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ব্যবসায়ী নেতা আতিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৭ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী আকবর হোমেন খান পাঠান (চিত্র নায়ক ফারুক), আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুর রহমান বক্তব্য দেন।
এফএইচএস/এএসএস/জেডএ/পিআর