বিনোদন

‘টুটুলকে কখনো স্বামী বলিনি, কারণ...’

‘আমি কোনোদিন আত্মীয়স্বজন এর সামনে সাইদুল আনাম টুটুলকে কখনো স্বামী বলিনি। কারণ, স্বামী শব্দের অর্থ প্রভু। সে কখনো আমার প্রভু ছিল না। সে ছিল আমার বন্ধু।’ কথাগুলো বলছিলেন সদ্য প্রয়াত চলচ্চিত্র সম্পাদক ও নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল এর স্ত্রী অধ্যাপক মোবাশ্বেরা খানম।

Advertisement

মোবাশ্বেরা খানম আরও বলেন, ‘আজ এখানে এসে আমি যা দেখছি তাতে আমি অভিভূত হচ্ছি। সেই সাথে অত্যন্ত বেদনার সাথে ইতিহাসের একটি নির্মম সত্যকে মনে হচ্ছে। শিল্পী-সাহিত্যিক যারা সৃজনশীল কাজে জড়িত তারা মৃত্যুর পরে স্বীকৃতি পান, বেঁচে থাকতে নয়। সেই সত্য আবারও প্রমাণ হলো। বেঁচে থাকতে তার ভেতর কষ্ট ছিল। সৃজনশীল যেই তাড়নায় সে তাড়িত হতো, সেই কাজ সে সবসময় করতে পারেনি। কারণ শিল্পীদের তাড়না থাকে, কিন্তু সামর্থ্য থাকেনা। আর সামর্থ্য যাদের থাকে, তারা শিল্প চান না। তারা চান ব্যবসা। টুটুল নৈতিকতার প্রশ্নে আপোষহীন ছিল।’

গেল ১৮ ডিসেম্বর ৩টা ১০ মিনিটে চিকৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাইদুল আনাম টুটুল। তার মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও অনুরাগীরা।

তারা শেষবারের মতো দেখলেন টুটুলের মুখ, কাঁদলেন। ভাসলেন অতীতের স্মৃতির সমুদ্রে। টুটুলের শোকে ও কান্নায় শহীদ মিনার যেন ভেসে গেল।

Advertisement

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাইদুল আনাম টুটুলের মরদেহ দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাদ যোহর নামাযে জানাজা হয়। এরপর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে টুটুলের মরদেহ দাফন করা হয়।

দীর্ঘদিন সিনেমা নির্মাণ না করলেও সম্প্রতি একটি নতুন ছবির শুটিং শুরু করেছিলেন টুটুল। সরকারি অনুদানে ‘কালবেলা’ নামে একটি সিনেমাটি করছেন তিনি। ২০০১ সালে আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত ‘নারীর ৭১ ও যুদ্ধপরবর্তী কথ্যকাহিনি’ বই থেকে ‘কালবেলা’ ছবির গল্প নেয়া হয়েছে।

সাইদুল আনাম টুটুল ডিরেক্টরস গিল্ডের প্রথম সাধারণ সম্পাদক ও আজীবন সদস্য। ২০০৩ সালে ‘আধিয়ার’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে প্রশংসিত। এর আগে ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ সিনেমা সম্পাদনার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

এছাড়াও বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘুড্ডি, দহন, দীপু নাম্বার টু ও দুখাইয়ের মতো সিনেমার সঙ্গে রয়েছেন তার সংশ্লিষ্টতা। যেগুলোর সম্পাদনায় ছিলেন তিনি।

Advertisement

এমএবি/পিআর