খেলাধুলা

ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে যা আছে আওয়ামী লীগ-বিএনপির ইশতেহারে

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১১ দিন আগে মঙ্গলবার ইশতেহার ঘোষণা করেছে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাজধানীর হোটেল লেকশোরে বিএনপির ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

Advertisement

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে বিগত ১০ বছরে তাদের শাসনামলে দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে যে অগ্রগতি ও অর্জন হয়েছে তা উল্লেখের পাশাপাশি নতুন কিছু প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। তবে বিএনপির ইশতেহারে খেলাধুলা নিয়ে মাত্র দুটি বাক্য লেখা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ৩.২৮ অনুচ্ছেদের শুরুতে দেশের যুব সমাজকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকাশক্তি থেকে মুক্ত এবং সুস্থ দেহ ও সাহসী মনের অধিকারী জনবল গড়ে তুলতে ক্রীড়ার বিশেষ ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ, যোগ্য প্রশিক্ষক, ক্রীড়া অবকাঠামো ও ক্রীড়ামোদী জাতি গড়ে তুলতে তাদের প্রতিশ্রুতি ও কর্মতৎপরতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালে বিভিন্ন সাফল্য ও অর্জন তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিশ্ব ক্রিকেটে বর্তমানে পুরুষ ও মহিলা দুই বিভাগেই বাংলাদেশ গৌরব জাগানো অবস্থান করে নিয়েছে। ফুটবলেও দক্ষিণ এশিয়ায় ভালো অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ। হকিসহ অন্যান্য খেলার মান বৃদ্ধির জন্য সহায়তা জোরদার করা হয়েছে।’

Advertisement

সরকার কর্তৃক বিশেষ সহায়তার আওতায় ৩১ টি খেলায় তৃণমূল পর্যায় থেকে বাছাইকৃত প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি উল্লেখ করেছেন জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনূর্ধ্ব-১৭ গোল্ডকাপ ফুটবল আয়োজনের কথাও।

প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে ফুটবলে ছেলেদের জন্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও মেয়েদের জন্য বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ আয়োজন করার মাধ্যমে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভাবান খেলোয়াড় বের করা হচ্ছে উল্লেখ করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘৫৫৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম নির্মান, সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রূপান্তর করে সেখানে টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে। টেবিল টেনিস, তায়কোয়ানদো, কারাতে, উশু এবং ভলিবল খেলার প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বিকেএসপিতে ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।’

আবার সরকার গঠনের সুযোগ পেলে দেশের খেলাধুলা নিয়ে আওয়ামী লীগের পরিকল্পনাগুলোও তুলে ধরেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খেলাধুলার লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে-

*বিশ্ব ক্রিকেটে বর্তমানে বাংলাদেশের গৌরব জাগানো অবস্থান আরো সুদৃঢ় করার সাথে সাথে ফুটবল হকিসহ অন্যান্য খেলা আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে।

Advertisement

*ক্রীড়া ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেয়া হবে।

*প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে খেলাধুলা ও শরীর চর্চাকে শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।

বিএনপির ইশতেহারে তাদের শাসনামলে ক্রীড়া বিষয়ের কোনো কিছু উল্লেখ না করে দুই বাক্যে কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। ইশতেহারে বিএনপির প্রতিশ্রুতির উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- প্রতি জেলায় একটি করে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ক্রীড়া একাডেমি প্রতিষ্ঠা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষিত বিএনপির ইশতেহারে বলা হয়েছে-

*আগামী ৫ বছরের মধ্যে খেলাধুলার কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ যাতে একটি গ্রহণযোগ্য স্থান করে নিতে পারে সে লক্ষ্যে পরিকল্পিত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

*খেলাধুলায় আন্তর্জাতিক মান অর্জনের জন্য প্রতি জেলায় একটি করে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ক্রীড়া একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

আরআই/এমএমআর/পিআর