মরুময় দেশ কুয়েত। দেশটির কিছু অঞ্চলে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। প্রবাসীরা ইচ্ছে করলেই ঘুরে আসতে পারেন। মরুর মধ্যেও যে প্রকৃতি লুকিয়ে থাকে এখানে না আসলে বোঝায় যেত না। সবুজ পরিপাটি এলাকাটি দেখে মনে মনে আপসোস হবে আহ আমাদের দেশটিও এমন সবুজে ঘেরা।
Advertisement
দুই ঋতুর দেশ কুয়েত। গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ার কারণে দেশটির নাগরিকরা বাহিরের দেশে ঘুরতে যায়। আর শীত মৌসুমে নিজ দেশে ফিরে আসে। যান্ত্রিক জীবন থেকে একটু প্রশান্তির জন্য ছুটে বেড়ায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। মরু এলাকায় খেমা (তাবু) তৈরি করে শাক-সবজি, ফল, ফুলের মাজরা (বাগান) করে প্রবাসীরা।
ছুটির দিনগুলোতে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে। সিটি থেকে প্রায় একশ ২৫ কি.মি. দূরে ইরাক সীমান্তবর্তী এলাকা আবদালি এলাকায় সৌন্দর্যের লীলাভূমি অবস্থিত। এ অঞ্চলে মূলত শাক-সবজি, ফলমূলই বেশি পাওয়া যায়।
রাস্তার দু’পাশে সারি সারি খেমা (তাবু) রাত্রিবেলা রয়েছে লাল, নীল রং-বেরংয়ের আলোক সজ্জায় সজ্জিত। রাস্তার পাশে ওয়ান এইট গাড়ি, পিক-আপ ভ্যানের মধ্যে বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো থাকে দোকান। গ্রিন লেক নামে একটি মাজরা (বাগান) স্থানীয় কুয়েতি মালিকাধীন প্রথমে বাগান হিসেবে চালু করলেও বর্তমানে বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
Advertisement
মাজরার ভেতরে চা, আখের রস, ফলে জুসসহ বাচ্চাদের খেলাধুলা জন্য রাখা হয়েছে বিভিন্ন ইভেন্ট। বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে পাতা কপি, ফুল কপি, ভুট্টা, কুমড়া, টমেটো, বিভিন্ন প্রকার সবজি। এ ছাড়া রয়েছে নানা রকমের ফলের বাগান।
উট, দুম্বা, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগির, কবুতরসহ হরেক রকমের পশু পাখির খামার। এই মাজরা দেখাশোনা করেন দশ থেকে পনের জন বাংলাদেশি শ্রমিক। তাদের সঙ্গে থাকেন ভারত, পাকিস্তানিসহ অর্ধশতাধিক কর্মচারী।
কথা হয় বাগানে কর্মরত বাংলাদেশি আরিফের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখানে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোকের সমাগম হয়। শুক্রবারসহ ছুটির দিনগুলোতে দ্বিগুণ লোক আসে দেখতে। সকাল-বেলা মাজরার কাজ করে বিকেলে বিভিন্ন স্টল ঘুরে বেড়ায়। আমরা কাজ শেষে দর্শনার্থীদের বাগানগুলো ঘুরে দেখায়।
দেখা মেলে বাংলাদেশি একাধিক পরিবারে সঙ্গে। তাদের ভেতর একজন চট্টগ্রামের কামরুল। বলেন, কাজের চাপে দিনে দিনে যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি। একটু বিনোদনের খোঁজে এখানে আসি। যদিও আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে বাগান অনেক দূরে। তবুও এখানে আসলেই ভালো লাগে। মনে হয় সবুজের ভেতর প্রবেশ করলাম।
Advertisement
মরুভূমির ভেতর সবুজ পাওয়া এক অন্যরকম ভালোলাগা। শীতের মৌসুমে জায়গাটি ঘোরার উপযুক্ত সময়। মরু এলাকায় প্রকৃতির ছোঁয়া পাওয়া যায়। আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা পায়।
এমআরএম/পিআর