সম্প্রতি রবির একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। ঢাকার আঞ্চলিক ভাষায় বিজ্ঞাপনটিতে সোহেল ও স্বপ্না চরিত্রে হাজির হয়েছেন জনপ্রিয় দুই তারকা চঞ্চল চৌধুরী ও নুসরাত ইমরোজ তিশা।
Advertisement
বিজ্ঞাপনটিতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার মোড়ে সোহেল-স্বপ্নার দেখা। তাদের আলাপচারিতার ধরণ এমন- সোহেল : আরে স্বপ্না কই যাইতাছো?, স্বপ্না : সিনেমা হলে যাইতাছি।, সোহেল : সিনেমার লাইগা হলে যাওন লাগে! আমি ডাউনলোড কইরা দেই।, স্বপ্না : ডাউনলোড? আমি বি পারি।, সোহেল : আমার নেটওয়ার্ক ফার্স্ট। তোমার আগেই ডাউন লোড হইবো।
দেখা যায়, তিশা আগে ডাউনলোড করে ফেলে। আর নিজের ব্যবহৃত নেটওয়ার্ককে সেরা বলে দাবি করে। হাস্যরসাত্মকভাবেই এগিয়েছে বিজ্ঞাপনটির গল্প। তবে এই বিজ্ঞাপনটি প্রকাশের পরপরই এর সংলাপগুলোর কারণে চঞ্চল-তিশাকে নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। হচ্ছে ট্রলও।
চলচ্চিত্রের প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষরা প্রশ্ন তুলেছেন সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রী হয়েও অবাধে সিনেমা ডাউনলোডের পরামর্শ কীভাবে দিতে পারলেন চঞ্চল-তিশা? কেউ কেউ ফেসবুকে মন্তব্য করছেন, ‘চঞ্চল-তিশার’ সিনেমা আমরাও হলে গিয়ে দেখব না, ডাউনলোড করে দেখব।’
Advertisement
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে চঞ্চল চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘যারা এটা নিয়ে সমালোচনা করছেন, এটা তাদের বোঝার ভুল। বিজ্ঞাপনের কথাগুলো কিন্তু একটা প্রাসপেকটিভে বলা হচ্ছে। একটা প্রোডাক্টের জন্য বলা হচ্ছে। আমি চঞ্চল চৌধুরী কি বলেছি, বাংলাদেশে সিনেমা হলের দরকার নাই? ডাউনলোড করে দেখো!
এটা পোডাক্টের জন্য বলা হয়েছে। নেটওয়ার্কের স্পিড বোঝানোর জন্য বলা হয়েছে। বোঝানো হয়েছে ওই কোম্পানির পণ্য ইউজ করলে কতো তাড়াতাড়ি ডাউনলোড করা যায়।’
চঞ্চল চৌধুরী আরও বলেন, ‘একটু ভেবে দেখেন, আমার দেশের সিনেমা তো আমি হলে গিয়ে দেখছি। কিন্তু আমি যদি একটা বলিউডের সিনেমা দেখতে চাই। আমি কি সেটা পারবো? সেটা আমাকে ইউটিউব থেকে ডাউনলোড করে দেখতে হবে। কিংবা যদি ইউটিউবেও দেখি, তাহলে আমার নেটওয়ার্ক স্পিড ভালো থাকতে হবে।
এই ভিউ থেকে বলা হয়েছে বিজ্ঞাপনের গল্পটি। যারা বাঁকা চিন্তা করে তারা হয়তো অন্যভাবে চিন্তা করবে। যারা সহজভাবে চিন্তা করে তার বুঝবে সহজেই। বিজ্ঞাপনটির উদ্দেশ্য সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়া বা খোলা সেটা না।’
Advertisement
সমালোচকদের উদ্দেশ্যে চঞ্চল বলেন, ‘যেটা নিয়ে আমাদের চিন্তা করা দরকার সেটা নিয়ে করি না। একটা ভুল ধরতে হবে, বা একটা কিছু বলতে হবে। এই বলার জন্য আগে পিছে না ভেবে আমরা অনেক কিছু বলে দেই। ‘সিনেমার লাইগা হলে যাওন লাগে! আমি ডাউন লোড কইরা দেই।’ এখানে হয়তো কথা বলার স্পেস আছে। এই স্পেসটা যদি নাও থাকে। তাও স্পেস খুঁজে বের করবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহজ হয়ে যাওয়ায় যার যা ইচ্ছে বলে দিতে পারেছে। আমরা স্বাধীনতার অপব্যাবহার করছি। এটা ঠিক না। এটা শুধুই একটা প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন, এমন না যে আমি আর তিশা কোথাও গিয়ে বলেছি, হলে সিনেমা দেখার দরকার নেই, ডাউনলোড করে দেখি।’
মডেলিং নাটক চলচ্চিত্র প্রতিটি মাধ্যমেই সফল জুটি চঞ্চল চৌধুরী ও নুসরাত ইমরোজ তিশা। এই দুই তারকা জুটি বেঁধেছেন সিনেমাটিক সিরিজ বিজ্ঞাপনচিত্রে। রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তারা।
রবির বিভিন্ন সামাজিক ও পণ্য প্রচারণামূলক কার্যক্রমে তাদেরকে দেখা যাচ্ছে। দুই বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নিয়েছেন দু’জন।
এমএবি/এলএ/পিআর